
বিয়ের মাত্র সাড়ে তিন মাসের মধ্যেই বাবা-মা হওয়ায় নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় এক নবজাতকের সঙ্গে ঘটে গেল অমানবিক ঘটনা। ধানক্ষেতে নিক্ষেপ করা হয় ওই নবজাতককে। স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে। এই ঘটনায় নবজাতকের বাবা ও মাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তারা হলেন- কেন্দুয়া উপজেলার গুগ গ্রামের মো. আব্দুল হকের ছেলে আল মোমেন (২৪) ও তার স্ত্রী জান্নাত আক্তার শিলা (১৯)।
এছাড়াও মামলার আরও দুই আসামি মোমেনের মা শারমিন আক্তার (৫০) ও শিলার মা শিল্পী আক্তার (৪০)। তাদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
কেন্দুয়া থানার এসআই শফিউল আলম বাদী হয়ে সোমবার রাতে (১৫ নভেম্বর) তাদের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের শিশু আইনের ৭০ ধারায় মামলা দায়ের করেছে। মামলা দায়েরের পরই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
কেন্দুয়া থানার ওসি কাজী শাহনেওয়াজ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ সুপার মো. আকবর আলীর নির্দেশনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় সামাজিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণে তদন্ত করে নবজাতকের বাবা-মাকে বের করার পর শিশু আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ওসি আরও জানান, মোমেনের মা শারমিন আক্তার (৫০) ও শিলার মা শিল্পী আক্তার গত ৭ নভেম্বর শিশুটির জন্মের পর তাকে ধানক্ষেতে ফেলে দেয়।
জানা গেছে, জুলাই মাসের ২২ তারিখ গুগ গ্রামের মো. আব্দুল হকের ছেলে মোমেনের সাথে জালালপুর গ্রামের খোকন মিয়ার মেয়ের বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের বয়স মাত্র সাড়ে তিন মাস হতেই তারা বাবা-মা হয়ে পড়ায় সামাজিক ভয়ে ছেলে নবজাতককে জন্মের পরপরই হাসপাতাল থেকে বের হয়ে গিয়ে ধানক্ষেতে ফেলে দেয়।
পরে ওইদিন বিকালে আদমপুর এলাকায় খান অ্যান্ড পণ্ডিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে খেলাধুলা করার সময় শিশুরা পাশের একটি ধানক্ষেত থেকে ওই নবজাতকটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে সমাজ সেবার উদ্যোগে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা নবজাতকটিকে চিকিৎসা ও সেবা দিয়ে হাসপাতালেই রাখেন।
পরবর্তীতে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশের পর শিশুটি দত্তক নিতে অনেকেই এগিয়ে আসেন।
এদিকে এমন সামাজিক অপরাধ বন্ধে স্থানীয়রা সোচ্চার থাকায় পুলিশ হাসপাতালের রেজিস্ট্রার দেখে সেদিন কতজন সন্তান প্রসব করেছে এগুলো আমলে নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে মা-বাবার সন্ধান পায়। পরে সোমবার (১৫ নভেম্বর) রাতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়
পাঠকের মতামত