উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫/০৪/২০২৫ ১২:৩২ পিএম

প্রতিবেশী ভারতকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে একটা কথা চালু আছে, যে তারা বাংলাদেশে এতকাল ‘সব ডিম শুধু একটি ঝুড়িতেই রেখেছে’ – মানে শুধু একটি দলের সঙ্গেই তাদের সম্পর্ক ছিল, আর সেটা আওয়ামী লীগ। কিন্তু ২০২৪ এর ৫ অগাস্ট বাংলাদেশে যে নাটকীয় পটপরিবর্তন ঘটে গেছে, সেই ঘটনাপ্রবাহ বিএনপির সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে একটা বাঁকবদলের অবকাশ তৈরি করেছে।

দিল্লিতে রাজনীতি, নিরাপত্তা বা কূটনীতির পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, ভারতের বিশেষ কয়েকটি ‘দাবি’ বা ‘প্রয়োজনে’ যদি বিএনপি ইতিবাচক সাড়া দেয়, তাহলে ভারতের দিক থেকেও বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার হাত বাড়াতে কোনও অসুবিধা থাকার কারণ নেই।

যেহেতু কোণঠাসা আওয়ামী লীগের চট করে রাজনৈতিক কামব্যাকের কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না এবং বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচনে বিএনপির ভালো ফল করার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে – তাই খালেদা জিয়ার দলই যে ভারতের জন্য এই মুহূর্তে সেরা বাজি এবং সম্ভবত একমাত্র বাজি, সেটাও তারা কেউ কেউ মনে করিয়ে দিচ্ছেন।

এই পটভূমিতে ভারতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কের প্রধান শর্তই জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করা। আর বিএনপির সঙ্গে দিল্লির এখন একটা সম্পর্ক স্থাপনের ভাল সুযোগ তৈরি হওয়ার কারণও তার দীর্ঘদিনের সঙ্গী জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব বেড়ে যাওয়া।

ভারতের দিক থেকে সম্পূর্ণ অন্য একটি কারণেও বিএনপির সঙ্গে দিল্লির এখন একটা সম্পর্ক স্থাপনের ভাল সুযোগ তৈরি হয়েছে – কারণ দীর্ঘদিনের সঙ্গী জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব বাড়ছে।

ঢাকায় ভারতের সাবেক হাই কমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস বলেন, ‘ডেফিনিটলি জামায়াত আর বিএনপির মতবিরোধগুলো এখন খুব স্পষ্ট। ওনাদের একজন বড় নেতা এটাও বলেছেন যে কোনও অ্যালায়েন্স হওয়া সম্ভব না। তো আমি নিশ্চিত যে এই ডেভেলপমেন্টগুলো ভারত সরকার নিজেদের তরফ থেকে খুব সতর্কতার সঙ্গে দেখছে এবং অ্যাসেস করছে!’

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাইরের কোনও দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করার এমনিতে কোনও কারণ নেই – তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি অবশ্যই কিছুটা ভিন্ন!

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব ঢাকায় গিয়ে কোনও রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে যোগ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন, এমনও নজির আছে।

২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে তখনকার পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং ঢাকায় গিয়ে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গেও বৈঠক করেছিলেন, যে সফর নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি।

এরপর থেকে ভারত যদিও প্রকাশ্যে অন্তত বাংলাদেশের ঘরোয়া রাজনীতি থেকে নিজেদের দূরে রাখারই চেষ্টা করে, কিন্তু জামায়াত বা ইসলামপন্থি দলগুলোকে নিয়ে ভারতের আপত্তি একেবারেই কোনও গোপন বিষয় নয়।

বিজেপি এমপি শমীক ভট্টাচার্য যেমন সরাসরি বলছেন, ‘তবে আমরা স্পষ্টতই জামাতের যে চিন্তাভাবনা, তালেবানেইজেশনের যে কনসেপ্ট তার ঘোরতর নিন্দা করি। এটার যে বিরোধিতা করে যাওয়া, সেটা আমরা করছি এবং করেও যাব!’

ভারতের কর্মকর্তা ও নীতিনির্ধারকরা এখনও একান্ত আলোচনায় পরিষ্কারই বলছেন আগামী দিনে বিএনপির সঙ্গে তাদের যে কোনও সম্পর্কের ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান ‘শর্ত’ হতে হবে জামায়াতের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সঙ্গ তাদের ত্যাগ করতেই হবে।

তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারে মার্কিন সেনা উপস্থিতি নিয়ে প্রয়োজনে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলছে ভারত

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে মার্কিন সেনা ও বিমানবাহিনী সদস্যদের উপস্থিতি নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ...

ড. ইউনুস যে কারণে চলে যেতে চান

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূসের পদত্যাগের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ...

আরাকান আর্মি ও জান্তার সঙ্গে সমন্বয়ে সহায়তা দিতে প্রস্তুত বাংলাদেশ

বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান মানবিক সংকট মোকাবিলায় দেশটি আরাকান আর্মি ও মিয়ানমারের ...

রোহিঙ্গাসহ মানবিক খাতগুলোতে নরওয়ের সমর্থন চেয়েছে বাংলাদেশ

মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীসহ বিভিন্ন মানবিক খাতে বাংলাদেশকে সমর্থন প্রদান অব্যাহত রাখার ...