প্রকাশিত: ০৮/১১/২০১৭ ৫:১৫ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১১:২৬ এএম

ডেস্ক রিপোর্ট::
বাংলাদেশ এখন বড় আকারের যুদ্ধজাহাজ নির্মাণের সক্ষমতা অর্জন করেছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। নৌবাহিনীকে একটি কার্যকর ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য জাতির পিতার পরিকল্পনার ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকার স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েছে, যা ২০৩০ সালের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে জানান তিনি।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত চট্টগ্রাম ড্রাই ডকে ফ্রিগেট নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে খুলনা শিপইয়ার্ডসহ অন্যান্য শিপইয়ার্ডে দেশীয় প্রযুক্তিতে জাহাজ নির্মাণের মাধ্যমে এ খাতে স্বয়ংসম্পর্ণতা অর্জনের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় সম্ভব হবে। এছাড়া ভবিষ্যতে জাহাজ রপ্তানির মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনী দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।

তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে নৌবহরে দু’টি আধুনিক সাবমেরিন ও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যুদ্ধজাহাজ, এয়ারক্রাফট এবং আধুনিক সামরিক সরঞ্জাম সংযোজন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর শক্তি বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। একইসঙ্গে বড় আকারের যুদ্ধজাহাজ নির্মাণের সক্ষমতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ।

আজ বুধবার (০৮ নভেম্বর) বেলা ১১টায় খুলনায় নৌ ঘাঁটি বানৌজা তিতুমীরের নেভাল বার্থে যুদ্ধজাহাজ দুর্গম ও নিশান এবং সাবমেরিন টাগ পশুর ও হালদার আনুষ্ঠানিক কমিশনিং অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।

এর আগে রাষ্ট্রপতি খুলনায় নৌঘাঁটি বানৌজা তিতুমীরে পৌঁছালে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজাম উদ্দিন আহমেদ এবং কমডোর কমান্ডিং খুলনার কমডোর সামসুল আলম তাকে অভ্যর্থনা জানান।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রী পরিষদ সদস্যবৃন্দ, কূটনৈতিক মিশনের সদস্যবৃন্দ, সেনা ও বিমানবাহিনীর প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।

কমিশনিং অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নৌ সদস্যদের আত্মত্যাগের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে একটি কার্যকর ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য জাতির পিতার পরিকল্পনার ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকার স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, যা ২০৩০ সালের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে। ইতোমধ্যে নৌবহরে দুটি আধুনিক সাবমেরিন ও উল্লেখযোগ্যসংখ্যক যুদ্ধজাহাজ, এয়ারক্রাফট এবং আধুনিক সামরিক সরঞ্জাম সংযোজন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর শক্তি বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং একটি নব অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। একইসঙ্গে বড় আকারের যুদ্ধজাহাজ নির্মাণের সক্ষমতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এছাড়া চীনে আরও দুটি করভেট নির্মাণের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে।

নৌবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পটুয়াখালীর রাবনাবাদ এলাকায় ও ঢাকার খিলক্ষেতে পূর্ণাঙ্গ নৌঘাঁটি এবং চট্টগ্রামের পেকুয়ায় একটি সাবমেরিন ঘাঁটির নির্মাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপতি।

খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের কর্মকর্তারা জানান, ৯৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই জাহাজগুলোর কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরুর আগে বঙ্গোপসাগর ও রূপসা নদীতে এগুলো পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হয়।

শিপইয়ার্ডের জেনারেল ম্যানেজার (প্রোডাকশন) ক্যাপ্টেন এম নূরুল ইসলাম শরীফ বলেন, ২৫ নটিক্যাল মাইল ক্রুজ গতিসম্পন্ন এই জাহাজ ৪টির মধ্যে নিশান ও দুর্গম হচ্ছে প্যাট্রল বোট এবং হালদা ও পশুর সাবমেরিন ট্যাগ বোট।

তিনি বলেন, সব জাহাজই বিশ্বমানের এবং আধুনিক সামরিক সরঞ্জাম সজ্জিত। এগুলো সমুদ্রসীমার নিরাপত্তা ও সমুদ্রসম্পদ আহরণে ব্যবহৃত হবে।

সূত্র জানা যায়, একই সঙ্গে ১৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন দুটি টাগ বোট নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। এই জাহাজগুলো সাবমেরিন চলাচলে সহায়তা করবে। হালদা ও পশুর নামের প্রতিটি জাহাজের দৈর্ঘ্য ৩২ মিটার। মালয়েশিয়া এতে কারিগরি সহায়তা দেয়। যুদ্ধজাহাজ দুটিতে আধুনিক সামরিক সক্ষমতা এবং সাবমেরিনের বিরুদ্ধে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ব্যবহারের সুবিধা রয়েছে।

প্রকৌশলী বিভাগের সূত্র জানায়, এর আগে খুলনা শিপইয়ার্ড পদ্মা, সুরমা, অতন্দ্র, অদম্য ও অপরাজেয় নামে পাঁচটি যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ করেছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে শিপইয়ার্ড ৬৪ কোটি ৬২ লাখ এবং গেল অর্থবছরের ৭৯ কোটি টাকা লাভ করে। শিপইয়ার্ড এ পর্যন্ত ৭২৫টি জাহাজ নির্মাণ ও দুই হাজার ২২৪টি জাহাজের মেরামতকাজ সম্পন্ন করেছে।

উল্লেখ্য, মৃতপ্রায় খুলনা শিপইয়ার্ড ১৯৯৯ সালের ৩ অক্টোবর বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। রূপসা নদীর তীরে লবণচরা মৌজায় স্থাপিত শিপইয়ার্ডের বয়স ৬০ বছর। ১৯৫৭ সালে ৬৮ দশমিক ৫৭ একর জমির ওপর এ জাহাজ নির্মাণ কারখানা স্থাপিত হয়।

পাঠকের মতামত

সপ্তাহজুড়ে বৃষ্টির আভাস

আবহাওয়া অধিদপ্তর আগামী সপ্তাহজুড়ে সারাদেশে বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। সেই সঙ্গে সপ্তাহজুড়ে বৃষ্টির ...