
শস্ত হচ্ছে চট্টগ্রামের তিন মহাসড়ক। এগুলো হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ও চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক। তিন সড়কে নিত্য যানজট ও একের পর এক দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত।
ফলে সময়ের সাথে সড়কগুলো প্রশস্তকরণের দাবি জোরালো হচ্ছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে ঈদের দিন থেকে টানা তিন দিনে ভয়াবহ তিন দুর্ঘটনায় ১৫ জনের প্রাণহানির পর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক প্রশস্তকরণের জোরালো দাবি করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী।
কর্মসূচিতে বিএনপি নেতাকর্মীদের দাবি ছিল দুর্ঘটনা রোধে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ককে ৬ লেনে উন্নীত করা। আর জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয় চার লেন। মানববন্ধনে শুধু চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক নয়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কও ১০ লেনে উন্নীত করার জোর দাবি জানান অংশগ্রহণকারীরা।
একইভাবে আরেক দুর্ঘটনা প্রবণ চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ককেও চার লেনে উন্নীত করণের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন সংশ্লিষ্ট চার উপজেলার মানুষ। এ নিয়ে সড়কের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার মানববন্ধন করেছেন স্থানীয়রা। এমনকি অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন চুয়েট শিক্ষার্থীরাও।
তবে এই তিন মহাসড়ক প্রশস্তকরণের সুখবর দিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। সওজের চট্টগ্রাম বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী শাহে আরেফীন এ প্রসঙ্গে বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ১০ লেনে প্রশস্তকরণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের (সমীক্ষা) কাজ চলছে।
একইভাবে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কও চার লেনে প্রশস্তকরণ করা হবে। আগামী বছর জানুয়ারিতেই সড়কটি প্রশস্তকরণ কাজ শুরু হবে। অন্যদিকে সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ শুরু হবে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কেরও। সড়ক তিনটি প্রশস্ত হলে শুধু যানজট নয়, দুর্ঘটনাও কমে আসবে। বদলে যাবে চট্টগ্রামের মানুষের জীবনযাত্রা ও দেশের অর্থনীতি।
১০ লেন হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক :
বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি যানবাহন চলাচল করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে। চট্টগ্রাম বন্দরের কারণে সড়কটিকে বলা হয় অর্থনৈতিক লাইফলাইন। আট বছর আগে চার লেনে রূপান্তর হওয়া এই সড়কটিতে ধারণ ক্ষমতার বেশি যানবাহন চলাচল করছে। ফলে নিত্য যানজটের সাথে ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনাও। যে কারণে সড়কটির প্রশস্তকরণের উদ্যোগ নিয়েছে সওজ।
সওজের তথ্যমতে, সড়কটি সম্প্রসারণে সম্ভাব্যতা যাচাই (সমীক্ষা) শুরু হয় গত বছরের শেষের দিকে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে সমীক্ষা কাজ পুরোপুরি শেষ হলেই প্রকল্প প্রস্তুত হবে। ইতোমধ্যে মহাসড়কটি ১০ লেনে উন্নীত করণের সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে সওজ বিভাগ। অর্থায়ন নিয়েও বড় ধরনের অগ্রগতি হয়েছে।
সওজ বিভাগের চট্টগ্রাম জেলার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহেদ হোসেন বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক নিয়ে চলমান সমীক্ষা শেষ হবে সেপ্টেম্বরে। এরপর ডিজাইন ও অর্থায়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। অর্থায়নের বিষয়ে কিছুটা অগ্রগতি আছে। বেশ কয়েকটি বাইরের প্রতিষ্ঠান কাজ করতে আগ্রহী।
তিনি বলেন, মূল সড়কটি হবে ছয় লেনের। দুই পাশে দুই লেন করে চার লেনের সার্ভিস লেন হবে। মোট ১০ লেন সড়কের মধ্যে চার লেন থাকবে ডেডিকেটেড। এই চার লেনে সরাসরি ঢাকা থেকে ওঠে সরাসরি চট্টগ্রামে নামবে। কোথাও গাড়ি দাঁড়াবে না। এ চার লেনের দুই পাশে ব্যারিয়ার দেয়া থাকবে। এই চার লেন ব্যবহার করবে মূল ট্রাফিক।
তিনি জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সমীক্ষাটি মাঠপর্যায়ে পরিচালনা করছে অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসএমইসির নেতৃত্বে পাঁচ প্রতিষ্ঠান। এর অন্যতম প্রতিষ্ঠান কনসোর্টিয়াম। প্রতিষ্ঠানটি মহাসড়ক প্রশস্তকরণে বিস্তারিত নকশা তৈরি করবে। এ কাজে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৪৪ কোটি টাকা। যাত্রাবাড়ি থেকে চট্টগ্রামের সিটি গেট পর্যন্ত ২৩২ কিলোমিটার সড়ক ঘিরেই এই সমীক্ষা পরিচালনা করা হচ্ছে। ছয়টি জেলা এই মহাসড়কের সাথে সম্পৃক্ত হবে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পটি তিন ভাগে হবে। ইতোমধ্যে কোন-কোন জায়গা প্রকল্পে অর্ন্তভুক্ত করা হবে তার রূপরেখা চ‚ড়ান্ত হয়েছে। তবে কত টাকা বরাদ্দ চাওয়া হবে তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। পুরোপুরি সমীক্ষা শেষেই নিশ্চিত করা যাবে। তবে সমীক্ষার শুরুতে ৭৩ হাজার কোটি টাকার মতো লাগতে পারে এমন ধারণা ছিল। প্রকল্প অনুমোদনের আগে সেটি আরও বাড়তে পারে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সওজের একজন ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলী বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পটি তিন ভাগে হবে। ইতোমধ্যে কোন-কোন জায়গা প্রকল্পে অর্ন্তভুক্ত করা হবে তার রূপরেখা চ‚ড়ান্ত হয়েছে। তবে কত টাকা বরাদ্দ চাওয়া হবে তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। পুরোপুরি সমীক্ষা শেষেই নিশ্চিত করা যাবে। তবে সমীক্ষার শুরুতে ৭৩ হাজার কোটি টাকার মতো লাগতে পারে এমন ধারণা ছিল। প্রকল্প অনুমোদনের আগে সেটি আরও বাড়তে পারে। উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো সড়কটি নির্মাণে আগ্রহী হওয়ায় প্রকল্পটির ভালো অগ্রগতি হয়েছে।
সওজ জানায়, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, কুমিল্লা, ফেনী ও চট্টগ্রাম এই ছয় জেলা মহাসড়কটির সাথে সম্পৃক্ত থাকবে। এর মধ্যে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের ৩৮ কিলোমিটার, কুমিল্লা ও ফেনীর ১২৫ কিলোমিটার, ফেনী থেকে চট্টগ্রাম সিটি গেট পর্যন্ত ৬৯ কিলোমিটার সড়ক ১০ লেন হবে। এর মধ্যে যেসব এলাকায় যানজট তৈরি হতে পারে সেখানে ওভারপাস করা হবে। সড়কটি বাঁকা অংশও সোজা করা হবে। নির্মাণ-পরবর্তী ১৫ বছর যেন এই মহাসড়কে আর কোন কাজ করতে না হয়, সে লক্ষ্যেই পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে সওজ।
২০১৭ সালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কটি সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চার লেনে উন্নীত করা হয়। পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) তথ্য মতে, এ সড়কে দৈনিক ৩০ হাজার যানবাহন চলাচল করে। যা দিনদিন আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই সড়কটি চার লেন হলেও এখনো প্রতিদিন ঢাকার প্রবেশমুখে, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের মিরসরাই ও সীতাকুন্ড এলাকায় নিয়মিত যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে পণ্য পরিবহন মারাত্নকভাবে বিঘ্নিত হয়। যাত্রীবাহী বাস চলাচলে পথেই বড় ধরনের সময় ব্যয় হয় যাত্রীদের। প্রাণহানি ঘটে নানা দুর্ঘটনায়। যে কারণে সড়কটি সম্প্রসারণের জোরালো দাবি তুলেন ব্যবসায়ী ও সাধারণ যাত্রীরা।
চার লেন হচ্ছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার দেশের ব্যস্ততম মহাসড়কের একটি। এর বেশির ভাগ অংশের প্রশস্ততা মাত্র ১৮-৩৪ ফুট। ফলে দূরপাল্লার গাড়ি স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারে না। ১৪৮ কিলোমিটার পথ বাসে যেতে সময় লাগে ৫ থেকে সাড়ে ৫ ঘণ্টা। অতিরিক্ত বাঁক, সাইড রোড থেকে যখন তখন গাড়ি মহাসড়কে উঠে আসার কারণে সড়কটি হয়ে উঠেছে দুর্ঘটনাপ্রবণ। পলিথিন ছাড়া লবণ পরিবহনের কারণে সড়ক পিচ্ছিল হওয়ায় এটি আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
তবে সড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণের সুখবর দিয়েছেন সওজ, চট্টগ্রাম দক্ষিণ সড়ক বিভাগে অতিরিক্ত দায়িত্বরত নির্বাহী প্রকৌশলী রোকন উদ্দিন খালেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা-জাইকার অর্থায়নে ১৪৮ কিলোমিটার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক প্রশস্তকরণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে। আগামী সেপ্টেম্বরে এ কাজ শেষ হলে প্রকল্প প্রস্তুত করে দরপত্র আহবান করা হবে। তার মতে, আগামী ২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে চার লেন সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ শুরু হতে পারে।
প্রশস্ত হচ্ছে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কও
প্রশস্ত হচ্ছে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কও। নতুন বছরের প্রথম মাসেই শুরু হবে এ সড়কের প্রশস্তকরণ কাজ। প্রাথমিকভাবে সড়কটির মোহরা কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে রাউজান গশ্চি ধরের টেক পর্যন্ত দুটি প্যাকেজে সাড়ে ১৩ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্ত করা হবে। প্রকল্প কাজের ঠিকাদার নিয়োগও সম্পন্ন হয়েছে। এতে খরচ হবে ৫০ কোটি টাকা।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলার চন্দ্রঘোনা পর্যন্ত সড়কের বাকি কাজ পর্যায়ক্রমে করা হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের চট্টগ্রাম জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দীন চৌধুরী। তিনি বলেন, সড়কটির কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে হাটহাজারীর মদুনাঘাট হয়ে রাউজান নোয়াপাড়া গশ্চি ধরের টেক পর্যন্ত সড়কটির সাড়ে ১৩ কিলোমিটার প্রশস্তকরণের কাজ দুটি প্যাকেজে হবে।
এটির উভয় পাশে ৫ ফুট করে ১০ ফুট পর্যন্ত প্রশস্ত করা হবে। দুটি প্যাকেজের মধ্যে কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে মদুনাঘাট পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার একটি প্যাকেজে ব্যয় হবে ২২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। মদুনাঘাট থেকে গশ্চি ধরের টেক পর্যন্ত সাড়ে ৮ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণে ব্যয় হবে ২৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। ইতিমধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়া স¤পন্ন হয়েছে। আগামী বছর জানুয়ারির মাঝামাঝিতে কাজ শুরু হবে।
এ বিষয়ে সওজের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবু মো. ভুট্টু বলেন, মোহরা কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে কাপ্তাই লগগেট পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৫২ কিলোমিটার। প্রাথমিকভাবে মোহরা কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে রাউজান উপজেলার গশ্চি ধরের টেক পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার বড় হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে বাকি অংশ হবে।
তিনি বলেন, কাপ্তাইমুখী সড়কের ডান অংশে ১০৫ ফুট এবং বাঁ অংশে ৭৫ ফুট করে জমি অধিগ্রহণ করা আছে। ফলে নতুন করে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে না। সড়কের উভয় পাশে কয়েক হাজার অবৈধ দখলদার আছে। সড়কের জমি দখল করে দোকানপাটসহ বসতঘর নির্মাণ করেছে তারা। এসব অবৈধ দখলদারের তালিকা করা হচ্ছে। শিগগিরই দখলদারদের নোটিশ দেওয়া হবে। এরপর উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক প্রশস্তকরণের দাবি দীর্ঘদিনের। সর্বশেষ গত বছর ২২ এপ্রিল চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) কাছাকাছি রাঙ্গুনিয়া উপজেলার জিয়ানগর এলাকায় বাসের ধাক্কায় নিহত হন চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের দুই শিক্ষার্থী শান্ত সাহা ও তৌফিক হোসাইন। আহত হন আরেক শিক্ষার্থী জাকারিয়া হিমু। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে নিরাপদ সড়কের দাবিতে টানা চার দিন আন্দোলন করেন চুয়েটের শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তারা চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক প্রশস্ত করে চার লেনে উন্নীতকরণ, সড়ক বিভাজক স্থাপন, সড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ট্রাফিক মনিটরিং ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণসহ ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন। পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে দাবি মানার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করার শর্তে আন্দোলন স্থগিত করে ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন শিক্ষার্থীরা। এরপর সড়কটি প্রশস্তকরণের উদ্যোগ নেয় সওজ।
চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী জোবায়ের হোসেন বলেন, কাপ্তাই সড়ক দিয়ে যে হারে যানবাহন চলাচল করে, সে অনুযায়ী এটি অনেক সরু। প্রশস্তকরণের দাবি আমাদের দীর্ঘদিনের। যেহেতু কার্যক্রম শুরু হচ্ছে, আশা করছি ভবিষ্যতে সড়ক দুর্ঘটনা কমবে। পাশাপাশি কমবে যানজটও।
এদিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি অভয়ারণ্যের বনরেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে জাঙালিয়া মাজারটেক এলাকায় ঈদের দিন থেকে টানা তিন দিনে তিনটি ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫ জনের প্রাণহানি ও ২৪ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এরপর মহাসড়কটি প্রশস্তকরণের দাবি জোরালো হয়ে উঠে।
সড়কটি ৬ লেনে উন্নীতকরণের দাবিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে জাঙালিয়া মাজারটেক এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে লোহাগাড়া উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা। যেখানে অংশ নেন হাজার হাজার স্থানীয় জনতা। এসময় তারা পর্যটনের শহর কক্সবাজার মহাসড়ক ৬ লাইনের পাশাপাশি মাঝখানে ডিভাইড এবং ওয়ান ভাই রাস্তার দাবি জানান।
একইভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি করেছে দক্ষিণ চট্টগ্রাম জামায়াতে ইসলামীর নেতারাও। তারা সড়কটিকে দ্রুত চারলেনে উন্নীত করার দাবি জানান। এর আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সড়কটিকে চার লেন করার দাবিতে লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা।
বিআরটিএ চট্টগ্রাম মেট্রো সার্কেল-২ এর মোটরযান পরিদর্শক মো. রেজোয়ান শাহ এ প্রসঙ্গে বলেন, একটি সড়কে শুধু দুর্ঘটনা নয়, যানজটের বিষয়টিও রয়েছে। রয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়টিও। সেদিক থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে অর্থনৈতিক লাইফলাইন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ককে পর্যটন শহরের প্রাণ ও চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ককে তিন পার্বত্যজেলার প্রবেশ দ্বার বলা হয়। এই তিনটি সড়ক চট্টগ্রামসহ পুরো দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এ সড়কগুলো কোনদিক থেকেই নিরাপদ নয়। সড়কগুলো নিরাপদ হলে দেশের সবক্ষেত্রে আমুল পরিবর্তন আসবে।
পাঠকের মতামত