প্রকাশিত: ১১/১১/২০১৭ ৭:৪৩ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১১:২০ এএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক::sin
বিদেশে অবস্থানরত প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা পদত্যাগপত্রে সই করেছেন বলে তার পারিবারিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

প্রধান বিচারপতির ছোট ভাই নরেন্দ্র কুমার সিনহা শুক্রবার রাত আড়াইটায় টেলিফোনে যুগান্তরকে বলেন, ‘তিনি আমাদের ফোন করে জানিয়েছেন শুক্রবার সকালে (বাংলাদেশ সময়) সিঙ্গাপুর থেকে কানাডা যাওয়ার আগে পদত্যাগপত্রে সই করেছেন।’

তবে পদত্যাগপত্রটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়েছে কিনা সংশ্লিষ্ট কোনো সূত্রে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এছাড়া রাত ২টার দিকে বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেল ‘প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছেন’ বলে ‘ব্রেকিং নিউজ’ প্রচার করে।

এর আগে ১৩ অক্টোবর রাতে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন প্রধান বিচারপতি সিনহা। ওই দিন মিডিয়ার সামনে তিনি বলেন, ‘আমি অসুস্থ না। আমি পালিয়েও যাচ্ছি না। আমি আবার ফিরে আসব। আমি একটু বিব্রত। আমি বিচার বিভাগের অভিভাবক। বিচার বিভাগের স্বার্থে, বিচার বিভাগটা যাতে কলুষিত না হয়, এ কারণেই আমি সাময়িকভাবে যাচ্ছি।’

অস্ট্রেলিয়ায় তার বড় মেয়ে সূচনা সিনহার বাসায় বেশ কিছুদিন অবস্থান করেন এসকে সিনহা। এরপর তিনি চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউটে যান। সেখানে ৪ দিন চিকিৎসা শেষে তার দেশে ফেরার কথা ছিল।

সূত্র জানায়, সিনহা শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় সিঙ্গাপুরের চেঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চায়না-সাউথার্ন এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে কানাডার উদ্দেশে রওনা দেন। কানাডায় তার ছোট মেয়ে বসবাস করছেন। এর আগে শুক্রবার রাতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক যুগান্তরকে বলেছিলেন, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ছুটির মেয়াদ না বাড়ানোর ফলে শনিবার (আজ) থেকে তিনি অনুপস্থিত হিসেবে গণ্য হবেন। এক্ষেত্রে সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যিনি কর্মে প্রবীণ তিনিই অনুরূপ কার্যভার পালন করবেন।

এসকে সিনহার দেশে ফেরার বিষয়ে এদিন বিকালে মন্ত্রী বলেন, প্রধান বিচারপতির দেশে ফেরা নিয়ে কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। একই তথ্য জানিয়েছেন, সুপ্রিমকোর্টের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার জেনারেল জাকির হোসেন।

৩ অক্টোবর ১ মাসের ছুটিতে যান প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা। ওই ছুটির মেয়াদ শেষ না হতেই ১০ অক্টোবর ছুটির মেয়াদ ১০ নভেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করেন তিনি। এরপর সুপ্রিমকোর্ট থেকে আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি বরাবর একটি চিঠি দেয়া হয়। ওই চিঠিতে বলা হয়, বিচারপতি এসকে সিনহা দীর্ঘদিন বিচারকাজে থাকায় এবং অবসর গ্রহণের তারিখ নিকটবর্তী হওয়ায় মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত। মানসিক অবসাদ দূর করার জন্য প্রধান বিচারপতি অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য গমন এবং অবস্থান করতে চান।

১ আগস্ট সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর থেকেই ক্ষমতাসীনদের সমালোচনার মুখে পড়েন প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা। সাত বিচারপতির ঐকমত্যের ভিত্তিতে দেয়া ৭৯৯ পৃষ্ঠার ওই রায়ে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা নিজের পর্যবেক্ষণের অংশে দেশের রাজনীতি, সামরিক শাসন, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি, সুশাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সমালোচনা করেন। ওই রায় এবং পর্যবেক্ষণ নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা, এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও প্রধান বিচারপতির সমালোচনা করেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে বঙ্গবন্ধুকে ‘খাটো করা হয়েছে’ অভিযোগ তুলে বিচারপতি সিনহার পদত্যাগের দাবি তোলেন ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতা। এর মধ্যে প্রধান বিচারপতি ৩ অক্টোবর ছুটিতে যান। তিনি দায়িত্বে না ফেরা পর্যন্ত আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব দেয়া হয়।

পাঠকের মতামত

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে রোহিঙ্গা সংকট সম্পর্কিত প্রস্তাব গৃহীত

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ মালয়েশিয়া ও ফিনল্যান্ডের পৃষ্ঠপোষকতায় মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে ...

৯০ দিনের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে স্টারলিংক চালুর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

৯০ দিনের মধ্যে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে চালুর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ...

জুলাই আন্দোলনে আহতদের পাশে থাকবে সেনাবাহিনী : সেনাপ্রধান

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ছাত্র-ছাত্রীদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার ও নৈশভোজ অনুষ্ঠানে কথা বলেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। ...