
রোমানা ইয়াছমিন পুতুল::
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) কতৃক আয়োজিত কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আজ মঙ্গলবার কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উক্ত অনুষ্ঠানে কৃতি শিক্ষার্থী হিসেবে সংবর্ধিত হোন প্রধানমন্ত্রী কতৃক গোল্ড মেডেল প্রাপ্ত কক্সবাজার সরকারি কলেজের গণিত বিভাগের দুইজন ছাত্রী তাসলিমা সিরাজ ও হোসনে আরা বেগম।
তসলিমা সিরাজ উখিয়া উপজেলার রত্না পালং
ইউনিয়নের টেকপাড়ার মৌলভী সিরাজের দ্বিতীয় কন্যা। ছোটবেলা থেকে মেধাবী তাসলিমা ২০১৫ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কক্সবাজার সরকারি কলেজ থেকে গণিত বিভাগ হতে সিজিপিএ-৩.৯৫ (৪ এর মধ্যে) পেয়ে সারা দেশে প্রথম হয়ে প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক লাভ করেন। সে ২০১৬ সালে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে মাস্টার্সেও সর্বোচ্চ সিজিপিএ পেয়ে সারাদেশে প্রথম স্থান অধিকার করেন।
কক্সবাজার সরকারি কলেজ হতে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী হোসনে আরা ২০১৬ সালের অনার্সে সিজিপিএ ৪ এর মধ্যে ৩.৯৪ পেয়ে সারা দেশে প্রথম হয়ে প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন। সেও চট্টগ্রাম কলেজ থেকে ডিপার্টমেন্টে সর্বোচ্চ সিজিপিএ পেয়ে মাস্টার্স শেষ করেছেন। ছোটবেলা থেকে অদম্য মেধাবী হোসনে আরা জন্মেগ্রহণ করেন কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া
ইউনিয়নের ইউনুছখালী গ্রামে। বাবার নাম মুহাম্মদ শাহ আলম। বাবা পেশায় কৃষক। ৪ ভাই ৩ বোনের মধ্যে হোসনে আরা পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তান।
উক্ত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক জনাব আবুল কাশেম সিকদার। কউক চেয়ারম্যান জনাব লে. কর্নেল (অব:) ফোরকান আহমদ
প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করেন। তিনি উপস্থিত সবার উদ্দেশ্যে বলেন- এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আরো আগে করা উচিত ছিলো। আমরা ইতোমধ্যে একটি ফান্ড গঠন করার উদ্যোগ নিয়েছি। প্রতিবছর কক্সবাজারের সকল কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিয়ে তাদেরকে উৎসাহিত করবো। ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা বেশি হলে আমরা প্রয়োজনে আরো বড় করে সংবর্ধনার আয়োজন করবো। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আগত উপস্থিত শিক্ষার্থীদেরকে তিনি মনোযোগ সহকারে পড়ার আহবান করেছেন।
কৃতি শিক্ষার্থী তাসলিমা সিরাজ তার বক্তব্যে বলেন- আমি কউক কর্তৃক আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আমার মা বাবাকে সাথে নিয়ে উপস্থিত হতে পেরে অনেক আনন্দিত কারণ উনাদের জন্য আজ আমি এই পর্যায়ে এসেছি।
আমাদের অধ্যক্ষ স্যার আমাদের অনেক বেশি উৎসাহ দেন। স্যারদের চেষ্টায় আমি আর হোসনে আরা আজ এখানে।
আমি আর হোসনে আরা ৪০তম বিসিএস রিটেন দিয়েছি আমাদের জন্য দোয়া করবেন যেন আমরা দেশের জন্য ভালো কিছু করতে পারি।
হোসনে আরা তার বক্তব্যে বলেন- বাবা আজ পৃথিবীতে বেঁচে নেই, মা ও ভাই বোনদের উৎসাহে আজ আমি আপনাদের সামনে আসার সুযোগ পেয়েছি। আমার এই ছোট্ট জীবনের সব অর্জন আমি আমার মাকে উৎসর্গ করলাম। আমাদের জন্য দোয়া করবেন যেন আমরা ভালো মনের মানুষ হতে পারি।
কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ফজলুল করিম চৌধুরী বলেন, কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকে একাডেমিক রেজাল্টে এমন চমৎকার ফলাফল কলেজ ইতিহাসে প্রথম। আমি তোমাদের দুজনকে বলব, তোমরা তোমাদের ডিপার্টমেন্টের জুনিয়রদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখবে এবং তাদেরকে পড়ালেখায় উৎসাহিত করবে।
উক্ত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষক আহমদ কবির, নিজাম উদ্দিন ফারুকী, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক মিঠুন , কউকের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।
পাঠকের মতামত