প্রকাশিত: ০৯/০৯/২০১৭ ৭:৪৩ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১:৫১ পিএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক::

বাংলাদেশ সীমান্ত থেকেই কুণ্ডুলি পাকানো ধোঁয়া উঠতে দেখা যাচ্ছে মিয়ানমারের রাখাইনের গ্রামগুলোতে। আর প্রাণ বাঁচাতে সীমান্তের দিকে ছুটে আসছেন সেখানকার বাসিন্দা মুসলিম রোহিঙ্গারা। গত ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও পুলিশের হত্যাযজ্ঞের মুখে তিন লক্ষাধিক রোহিঙ্গা ইতিমধ্যে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। অব্যাহত রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞের উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া। সীমান্তের এপার থেকে প্রতিদিনই রোহিঙ্গাদের ঘববাড়িতে আগুন জ্বলতে দেখা যায়।

শুক্রবার বিকালেও টেকনাফের কানজর পাড়া সীমান্তের অপর পাশে একসঙ্গে ছয়টি স্থান থেকে কুণ্ডুলি পাকিয়ে ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। এরমধ্যে একটিতে আগুন জ্বলছে কয়েক ঘণ্টা ধরে।

কানজর পাড়ায় নাফ নদীর তীরের উৎসুক মানুষ ওই আগুনের ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন। সেখানে থাকা মহব্বত নামের একজন স্থানীয় বাসিন্দা জানিয়েছেন, দুপুর আড়াইটা থেকে কুণ্ডুলি পাকিয়ে ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত আগুন জ্বলেছে।

উৎসুক মানুষের মধ্যে একজন ছিলেন মংডুর শিলখালি এলাকার রউফ। রউফ জানান, মিয়ানমার সেনাবাহিনী গ্রামে প্রবেশ করে গ্যাস লাঞ্চার দিয়ে ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে পুরো ঘরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে থাকে। আমাদের ঘরসহ পাড়ায় দশটি ঘর নিমিষে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

বিকাল থেকে জ্বলতে থাকা আগুনটি শিলখালির পার্শ্ববর্তী এলাকা ঝিমংখালি বলেও চিহ্নিত করেছেন তিনি।

শুক্রবার বিকালে যখন সীমান্তের ওইপাড়ে আগুন জ্বলছিল, তখনও লাইন ধরে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে শত শত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসছিলেন। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নারী ও শিশুকে দেখা গেছে পুরো শরীরে কাদা মাখামাখি অবস্থায়।

হাসিনা বেগম নামের ষাটোর্ধ্ব এক মহিলা ছেলের কাঁধে চড়ে নদী অতিক্রম করে এসেছেন। গোটা শরীরে কাদায় মাখামাখি। যেন কাদায় ডুবে দেশ ছেড়েছেন। তিনি জানান, আট দিন পাহাড়ে আর ছড়ায় কেটেছে। ছেলে আর নাতির কাঁধে চড়ে জুলুমবাজদের দেশ ছেড়েছেন।

মিয়ানমার বাহিনীর অবরোধের মুখে গত ২৪ আগস্ট মধ্যরাতের পর রোহিঙ্গা যোদ্ধারা অন্তত ২৫টি পুলিশ স্টেশনে হামলা ও একটি সেনাক্যাম্পে প্রবেশের চেষ্টা চালায়। এতে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ শুরু হয়।

এরপর রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। একের পর এক রোহিঙ্গা গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া হয়। অভিযানে হেলিকপ্টার গানশিপেরও ব্যাপক ব্যবহার করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। সীমান্তে পুঁতে রাখায় হয় স্থলমাইন।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা, কুপিয়ে হত্যা, নারীদের গণর্ষণের অভিযোগ উঠে। তাদের হত্যাযজ্ঞ থেকে রেহাই পায়নি বয়োবৃদ্ধ নারী এবং শিশুরাও।

প্রাণ বাঁচাতে স্রোতের বেগে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসতে শুরু করে। এখন পর্যন্ত এক হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছে এবং পালিয়ে প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

এসএন/এমএসআই

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারের আরেক গুরুত্বপূর্ণ শহর বিদ্রোহীদের দখলে

মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা দেশটির আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ শহরের দখল নিয়েছে। মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী তা’আং ...

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ও দূরপাল্লার ট্রেন পটিয়া স্টেশনে যাত্রা বিরতির দাবি

চট্টগ্রাম–কক্সবাজার ও দূরপাল্লার ট্রেন পটিয়া স্টেশনে যাত্রা বিরতিসহ বিভিন্ন দাবিতে রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিমকে স্মারকলিপি দিয়েছেন ...