নিউজ ডেস্ক::
কক্সবাজারের টেকনাফের এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ ও মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার পর ১৭ লাখ টাকাসহ গোয়েন্দা পুলিশের সাত সদস্য সেনাবাহিনীর হাতে ধরা পড়েছে। এ ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি করেছে জেলা পুলিশ।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আফরুজুল হক টুটুল জানান, আটক সাতজন পুলিশকে তাৎক্ষণিকভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
টেকনাফে রোহিঙ্গাদের ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় স্থাপিত সেনাবাহিনীর ক্যাম্পের একজন কর্মকর্তা জানান, বুধবার ভোরে মেরিন ড্রাইভ সড়কের শাপলাপুর এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটকরা হলেন- ডিবি পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) ইয়াসিন আরফাত, এসআই আবুল কালাম আজাদ, গোলাম মোস্তফা, ফিরোজ আহমদ, এএসআই নুরুজামান, সিপাহী মোস্তফা আলম ও এসআই মনিরুজ্জামান।
অপহৃত আবদুল গফুর টেকনাফের মধ্য জালিয়া পাড়ার হোসেন আহমদের ছেলে। টেকনাফ স্থল বন্দরে আমদানি- রপ্তানির ব্যবসা রয়েছে তার।
উদ্ধারকৃত ১৭ লাখ টাকা ওই ব্যবসায়ীকে ফেরত দিয়ে আটক সাতজনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে গফুর বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজার শহরের থানা রোড সংলগ্ন আল গনি রেস্তোরাঁ থেকে খাবার খেয়ে বের হওয়ার সময় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে কয়েকজন তাকে একটি মাইক্রোবাস তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।
“সেখানে একটি বাড়িতে জিম্মি করে রেখে রাতভর আমাকে নানাভাবে নির্যাতন করে; পরে রাত আড়াইটার দিকে আমাকে মাইক্রোবাসে করে মেরিন ড্রাইভে নিয়ে গিয়ে ‘ক্রসফায়ারে’ মেরে ফেলার হুমকি দেয় তারা।”
তিনি বলেন, “এ সময় ডিবি পুলিশ আমার কাছে এক কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। প্রাণ ভয়ে আমি মোবাইল ফোনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে ১৭ লাখ টাকা দিতে চাইলে তারা রাজি হয়।
“পরে আমার পরিবারের লোকজন মেরিন ড্রাইভ সড়কের মহেশখালিয়া পাড়ায় গিয়ে ডিবি পুলিশকে টাকা দিলে তারা আমাকে ছেড়ে দেয়। ”
গফুরের ভাই টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান বলেন, তার ভাইকে হত্যার হুমকি দিয়ে টাকা দাবির বিষয়টি শুরু থেকে সেনাবাহিনীকে জানানো হয়। টাকা দিয়ে ভাইকে মুক্ত করার পর সেনাবাহিনীর সহায়তায় এ টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
সেনা ক্যাম্পের ওই কর্মকর্তা বলেন, বুধবার ভোরে কক্সবাজারের দিকে যাওয়ার পথে ডিবির সদস্যদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি সেনাবাহিনী তল্লাশি চৌকিতে আটক করে তল্লাশি চালানো হলে সেখানে ১৭ লাখ টাকা পাওয়া য়ায়।
“এ সময় ডিবি পুলিশের এসআই মনিরুজ্জামান পালিয়ে গেলেও ছয় জনকে আটক করা হয়।”
পলাতক মনিরুজ্জামানকে পরে আটক করা হয়েছে জানিয়েছে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আফরুজুল হক টুটুল।
তদন্তে কমিটি
পুরো ঘটনা তদন্তে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে বলে বুধবার সন্ধ্যায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পলাতক মনিরুজ্জামানকে আটক করা হয়েছে। ইতিমধ্যে কমিটি তদন্ত শুরু করেছে।”
পাঠকের মতামত