প্রকাশিত: ১৯/০৯/২০১৭ ১০:৪৪ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১:১৮ পিএম

নাইপেদো: মায়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ‘তোলা তোলি’ গ্রামের নতুন স্যাটেলাইট ইমেজ পাওয়া গেছে। এতে দেখা গেছে গ্রামটি পুরো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

এর আগে প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনার উপর ভিত্তি করে গ্রামটির ধ্বংসাবশেষের বিস্তারিত বিবরণ গার্ডিয়ান একটি প্রতিবেদন নিশ্চিত করা হয়েছিল।

৩০ আগস্ট ওই গ্রামে মায়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর একটি রক্তাক্ত অপারেশনে বহু বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করা হয়। গ্রামটি জনশূন্য করার পর রোহিঙ্গাদের কাঠ-নির্মিত ঘরবাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের একটি বিশ্লেষণে দেখা গেছে গ্রামটিতে বিপুল পরিমাণ ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে।

অ্যামনেস্টির মুখপাত্র টুলা টোলি বলেন, ‘স্যাটেলাইট চিত্রসমূহে সাম্প্রতিক পুড়িয়ে দেয়া ধ্বংসস্তুপ স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান।’

জাতিসংঘের শীর্ষ মানবাধিকার কর্মকর্তা সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনকে ‘পাঠ্যপুস্তক উদাহরণ’ হিসাবে অভিহিত করেছেন।

স্যাটেলাইট ইমেজগুলোতে দেখা যায় যে, তুলা টোলির দক্ষিণ-পশ্চিম কোণটি কেবল অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। অক্ষত অবস্থায় থাকা এই অংশটিতে জাতিগত রাখাইন সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর বাসিন্দারা বাস করেন বলে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা গার্ডিয়ানকে জানান। রাখাইনরা দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ।

অধিবাসীরা গার্ডিয়ানকে জানান, গ্রামটিতে হামলা চালানোর পূর্বে সেনা সদস্যরা ও স্থানীয় চরমপন্থী রাখাইন বৌদ্ধরা রোহিঙ্গাদের মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করার পর কয়েক ডজন রোহিঙ্গাকে হত্যা করে।

পিতম আলী নামে একজন রোহিঙ্গা জানান, তার বয়স্ক দাদীকে শিরশ্ছেদ করার পর তাকে পুড়িয়ে ফেলে সৈন্যরা।

অন্যরা জানান, গ্রামটির পাশে অবস্থিত নদীতে দুধের শিশুসহ ছোট ছোট বাচ্চাদের পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করে সৈন্যরা।

এলাকাটিতে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে দেশটির সরকারের তরফ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

মঙ্গলবার নিউইয়র্ক ভিত্তিক এডভোকেসি গ্রুপ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, অপারেশন শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত রাখাইন রাজ্যের নিকটবর্তী মোট ২১৪টি গ্রাম ধ্বংস করা হয়েছে।

অ্যামনেস্টি উত্তর রাখাইন অঞ্চলের বাসিন্দাদের অন্তত ৮০টি বড় আকারের আগুনের সন্ধান পেয়েছে।

গত ২৫ আগস্ট কয়েকটি পুলিশ ফাঁড়ি ও সেনা ক্যাম্পে সন্ত্রাসী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গাদের উপর অভিযান শুরু করে মায়ানমার সেনাবাহিনী। এতে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে অন্তত চার লাখ রোহিঙ্গা।

পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অভিযোগ রাখাইন রাজ্য থেকে তাদেরকে সমূলে উৎখাত করতে পোড়ামাটি নীতি গ্রহণ করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। হত্যা, ধর্ষণ, বেপরোয়া গুলিবর্ষণের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মায়ানমারের সাধারণ বৌদ্ধরা সামরিক বাহিনী ও সু চির ভূমিকার প্রশংসা করছে। তারাও মনে করে, রোহিঙ্গারা বহিরাগত। সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মিয়ানমারের জন্য তারা বড় হুমকি।

রোহিঙ্গা বিতাড়নের জন্য সামরিক বাহিনী যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা সমর্থন করছে বৌদ্ধ ভিক্ষু থেকে শুরু করে সাধারণ মায়ানমার নাগরিকরা।

সূত্র: গার্ডিয়ান

পাঠকের মতামত

ট্রাম্পকে ৪শ’ মিলিয়ন ডলারের বিমান উপহার দিচ্ছে কাতার

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি বিলাসবহুল জাম্বো জেট উপহার দিচ্ছে কাতারের রাজপরিবার। জেটটির আনুমানিক ...

ভীতিকর গোয়েন্দা তথ্য পেয়ে মোদিকে যুদ্ধ বন্ধে চাপ দেয় যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ আলোচনার পর ভারত ও পাকিস্তানের মাঝে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়েছে। দীর্ঘ ৪৮ ...

উত্তেজনা না বাড়ালে ভারতকে জবাব দেবে না পাকিস্তান : রানা সানাউল্লাহ

ভারতের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান শান্তিপূর্ণ অবস্থান গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ ...

নিয়ন্ত্রণরেখায় পাকিস্তানের গো লা ব র্ষ ণ, ১০ ভারতীয় নি হ ত

ভারতশাসিত কাশ্মীরের পহেলগাঁও হামলা নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। পাল্টা জবাবে রাতেই ...

পাকিস্তানে ভারতের হামলা, মাঝপথে ফিরে গেল বাংলাদেশগামী দুই প্লেন

পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মিরের বিভিন্ন স্থানে মঙ্গলবার মধ্যরাতে মিসাইল হামলা চালিয়েছে ভারত। আকস্মিক এ হামলার কারণে ...