বিমানবন্দরে দুই-চার কেজি স্বর্ণ উদ্ধার-এখন এই খবর আর আগের মত চমৎকৃত করে না সবাইকে। কারণ, এই ধরনের খবর এখন নিয়মিত ঘটনা হয়ে গেছে অনেকটাই। বড় চালান ধরা পড়লেই কেবল আলোচনা হয়।
কত স্বর্ণ উদ্ধার হয়? গত চার বছরেরও কম সময়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর উদ্ধার করেছে এক টনেরও বেশি স্বর্ণ। এসব স্বর্ণের দাম ৫২০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। উদ্ধার করা এসব স্বর্ণ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা করা হয়। আর মামলা নিষ্পত্তির পর স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের কাছে নিলামে বিক্রি করে থাকেন। যা এই দেশের মানুষই তা ব্যবহার করে থাকে।
তবে গত চার বছরে উদ্ধার হওয়া স্বর্ণের মধ্যে কী পরিমাণ স্বর্ণ নিলামে বিক্রি করা হয়েছে, কী পরিমাণ স্বর্ণ এখনও বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা আছে, সে তথ্য নেই শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের কাছে।
অধিদপ্তরের সূত্রমতে ২০১৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৪৬ মাসে সারাদেশে এক হাজার ১০১.৯১ কেজি স্বর্ণ উদ্ধার করেছে তাদের দল।
এর মধ্যে ২০১৩ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত উদ্ধার করা হয় ৫৬৫.৭১ কেজি, যার দাম ২৫৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা।
২০১৪ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত উদ্ধার করা হয় ৩৬৩.৭৮২ কেজি স্বর্ণ, যার দাম ১৮১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
২০১৫ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ৬৭.২১ কেজি স্বর্ণ উদ্ধার করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর যার দাম ৩০ কোটি এক লাখ টাকা।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের হিসাব মতে ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে থেকে উদ্ধার করা হয় ১৫১.৫৪ কেজি স্বর্ণ যার দাম ৬৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।
২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত উদ্ধার করা স্বর্ণের পরিমাণ ৬৪১.৯০৮ কেজি যার দাম ৩০১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত উদ্ধার করা স্বর্ণের পরিমাণ ২০৩.৫৪ কেজি যার দাম ৯৮ কোটি এক লাখ টাকা।
২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত উদ্ধার করা স্বর্ণের পরিমাণ ৬৯.২৪ কেজি যার দাম ৩৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।
২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত উদ্ধারকৃত স্বর্ণের পরিমাণ ৮৫.৯৮ কেজি যার দাম ১৯ কোটি এক লাখ টাকা।
আটক হওয়া স্বর্ণ যায় কোথায়?
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেন, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর বিভিন্ন বিমানবন্দর থেকে স্বর্ণ আটক করে। ওই স্বর্ণ ঢাকা কাস্টমস হাউজের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে একটি জিআরও নম্বরের মাধ্যমে জমা দেওয়া হয়।
ঢাকা কাস্টমস হাউজ উদ্ধারকৃত ওই স্বর্ণের নিস্পত্তি করে বাংলাদেশ ব্যাংকে। উদ্ধারকৃত স্বর্ণের মালিকানা দাবি করে কেউ যদি ওই স্বর্ণ নির্ধারিত শুল্ক পরিশোধ করে তাহলে তারা তা নিয়ে যেতে পারে। তবে কেউ যদি দাবি না করে তখন বাংলাদেশ ব্যাংক ওই স্বর্ণ নিলাম করে। এরপর বাংলাদেশে জুয়েলারি ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা তখন ওই স্বর্ণ নিলামে কিনে বিক্রি করে। আর নিলামে বিক্রি করা ওই টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মঈনুল খান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমরা স্বর্ণ উদ্ধার করে ঢাকা কাস্টমস হাউজের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেই। এরপর ওই স্বর্ণ বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামে বিক্রি করে থাকে। তবে কী পরিমাণ স্বর্ণ নিলাম করা হয়, সে হিসাব আমাদের কাছে নেই। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এই হিসাব আমাদের কাছে আসে না।’
পাঠকের মতামত