প্রকাশিত: ২৬/১২/২০১৬ ৮:০৩ এএম

নিউজ ডেস্ক::

২০১৬ সালের ইংরেজি পুরনো বছরকে বিদায় ও ২০১৭’র নববর্ষকে স্বাগত জানাতে বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস নামবে সমুদ্র সৈকতের নগরী কক্সবাজারে। আর ২৩ ডিসেম্বর থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত টানা ৩ দিন সরকারী ছুটি থাকায় গত কয়েক দিন ধরে কক্সবাজারে পর্যটকের আনাগোনা বেড়েছে অন্য সময়ের তুলনায় ৩ গুণ বেশি। যার ফলে আবাসন সংকটে পড়েছে পর্যটকরা । ১ জানুয়ারি পযর্ন্ত হোটেল-মোটেল, কটেজের কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবারে ইংরেজি নববর্ষ উৎযাপন করতে ৫ লাখ পর্যটকের সমাগম হবে। ফলে আগে যে হোটেল কক্ষগুলো ৩০০ টাকায় পাওয়া যেতো, সেগুলো এখন ৩ হাজার টাকা দিয়েও পাচ্ছে না কক্সবাজারে আসা পর্যটকরা। এছাড়া আবাসিক কটেজগুলো (সর্বোচ্চ ৪ জন উপযোগী) ২মাস আগেও  ভাড়া পাওয়া যেতো ৭০০ -১ হাজার টাকায়; সেই কটেজ এখন ভাড়া গুনতে হচ্ছে ৪ থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা। আর দামী হোটেল-মোটেলগুলো এক মাস আগে থেকে বুকিং হয়ে যাওয়াতে সাধারন মানের হোটেলগুলো ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে খাবারের দোকানের মালিকরা বাড়িয়ে দিয়েছে খাবারের দামও।

কক্সবাজার পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান, চলতি মৌসুমের সবচেয়ে বড় মিলনমেলা ৩১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে মার্চ মাস পর্যন্ত থাকবে। এ ভিড় এখন বাড়তেই থাকবে। নগরীর প্রায় ৪ শতাধিক হোটেল, সরকারি-বেসরকারি অর্ধশতাধিক রেস্টহাউসের কক্ষগুলোও আগাম বুকড হয়ে গেছে। এখন ভাড়া দেয়া হচ্ছে ফ্ল্যাটবাড়ি ও নির্মাণাধীন ভবন।

কক্সবাজারের স্থায়ী বাসিন্দা জানান, ঢাকা থেকে ৫ জন বন্ধু আসছে কাল। তাদের জন্য আবাসিক হোটেল খোঁজতে গিয়ে বুঝতে পারি। হোটেল মালিকরা ৩গুণ বেশি ভাড়া বাড়িয়েছে। বাড়তি ভাড়ার পরও কোন হোটেল-কটেজে রুম পাইনি। কোন উপায় না দেখে এক বন্ধুর ব্যাচেলর রুমে তুলে দিয়েছি তাদের।

beach-coxsbazar

কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এসএম কিবরিয়া খান ফোনে জানান, প্রতিদিন লক্ষাধিক পর্যটক এখন কক্সবাজারে বেড়াতে আসছেন। এরমধ্যে প্রতিদিন প্রায় ৫ হাজার মানুষ জাহাজ, স্পীডবোট ও ট্রলারযোগে সেন্টমার্টিনে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এছাড়া ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক, মহেশখালী আদিনাথ মন্দির, হিমছড়ী, দরিয়ানগর, ইনানী এবং পার্শ্ববর্তী নাইক্ষ্যংছড়ি ও লামা উপজেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলোতেও প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ বেড়াতে যাচ্ছেন।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেষ্টহাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার জানান, এবারের থার্টিফাস্টনাইট ও বর্ষবরণে কক্সবাজারের প্রতি পর্যটকেরা বিপুল সাড়া দিয়েছেন। যা বিগত বছরকে হার মানাবে। তারা ডিসেম্বরের শুরু থেকেই হোটেল বুকিং দেয়া শুরু করেন। ফলে এ মাসের ১ম সপ্তাহেই কক্সবাজারের ৭০ ভাগ হোটেল বুকিং হয়ে গিয়েছে। আর এখন ফ্ল্যাট বাসা গুলোও বুকিং নিচ্ছে পর্যটকেরা।

কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রায়হান কাজেমী জানান, সৈকতে আসা পর্যটকের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের শতভাগ প্রস্তুতি রয়েছে। দর্শনীয় স্থান ও বিপণিকেন্দ্রগুলোতেও পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। সমুদ্র সৈকত, হিমছড়ি, ইনানী, দরিয়া নগরসহ ৭টি পর্যটন স্পটে কাজ করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

বাড়তি পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশ অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যসহ যাবতীয় সরঞ্জাম বাড়ানো হয়েছে। এছাড়াও জেলা পুলিশও পর্যটকের নিরাপত্তায় থাকবেন বলে জানান তিনি।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন জানান, ব্যাপক হারে পর্যটক আসার সুযোগে কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে ব্যাপারে প্রশাসন সজাগ রয়েছে। পর্যটন এলাকায় জেলা প্রশাসনের একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করছে। নাশকতার আশঙ্কায় হোটেলের বাইরে থার্টি ফার্স্ট নাইটের সকল অনুষ্ঠান সন্ধ্যার আগেই শেষ করতে আদেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বর্ষবিদায় এবং বর্ষবরণের উৎসবকে রাঙিয়ে তুলতে ৩০ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সৈকতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিচ কার্নিভ্যাল। এই কার্নিভ্যাল পুরো উৎসবকে অনন্য মাত্রা দেবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারের আরেক গুরুত্বপূর্ণ শহর বিদ্রোহীদের দখলে

মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা দেশটির আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ শহরের দখল নিয়েছে। মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী তা’আং ...

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ও দূরপাল্লার ট্রেন পটিয়া স্টেশনে যাত্রা বিরতির দাবি

চট্টগ্রাম–কক্সবাজার ও দূরপাল্লার ট্রেন পটিয়া স্টেশনে যাত্রা বিরতিসহ বিভিন্ন দাবিতে রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিমকে স্মারকলিপি দিয়েছেন ...