প্রকাশিত: ২২/০৮/২০১৭ ৮:০১ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ২:৪৬ পিএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক দেশের হাতেগোনা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের একটি। বরং অন্যান্য মহাসড়কের তুলনায় একটু বেশিই গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বে ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এ মহাসড়ক ব্যাপক অবদান রাখছে। পর্যটননগরী কক্সবাজার ও নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বান্দরবানে প্রতিদিন দেশ-বিদেশের হাজারও পর্যটকের যাতায়াত এ মহাসড়ক দিয়েই। মহাসড়কটি শুরু হয়েছে মূলত চট্টগ্রাম শাহ আমানত সেতুর টোলপ্লাজা থেকে। শুরু থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত দূরত্ব দেড়শ’ কিলোমিটার। এ দীর্ঘ দূরত্বের মহাসড়ক জুড়ে একাধিক স্থানে রয়েছে সংস্কার না হওয়ার চিহ্ন। মহাসড়কটি বছরের অধিকাংশ সময় থাকে বেহাল দশায়। বিভিন্ন স্পট খানাখন্দে ভরা। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে লাগাতার বৃষ্টি হলে পানি জমে বিটুমিন ওঠে গিয়ে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরবর্তী সময়ে পানি জমার ফলে স্থানে-স্থানে পাথর সরে যায় আর ছোটবড় গর্তের সৃষ্টি হয়। কালেভদ্রে সড়ক বিভাগ মেরামতের নামে বিভাগীয়ভাবে কিছু প্রলেপ দিলেও তা খুবই ক্ষণস্থায়ী। তা শুধু মেরামতের নামে হরিলুট। চলতি বর্ষায় মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টি ও বন্যার কারণে এ মহাসড়কের চন্দনাইশ উপজেলার বিজিসি ট্রাস্ট, বাগিচার হাট, দোহাজারী, সাতকানিয়া উপজেলার নয়াখাল, কেরানিহাট, চারা বটতল, মিঠাদিঘি, রাজঘাটা ও লোহাগাড়া উপজেলার নোয়াপাড়া, পদুয়া, তজুমুন্সির গ্যারেজ, বন্ধন কমিউনিটি সেন্টার, পুরান বিওসি, চুনতি বাজার, চুনতি ফরেস্ট অফিসসহ ২০ স্পটে প্রায় ১০ কিলোমিটার ছোটবড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যানবাহন ও যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছে। খানা-খন্দের কারণে প্রতিদিন ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা।
মহাসড়কের নিয়মিত যাত্রী মো. নোমান তালুকদার জানান, পথে-পথে এতো গর্ত, দেখে মনে হয় এর কোনো কর্তৃপক্ষ নাই। একটু বৃষ্টি হলে কেরানিহাট থেকে আমিরাবাদ যেতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ধুলোবালি আর কাদাপানিতে জামা-কাপড় নষ্ট হয় শুধু তা নয়, গর্তে পড়ে অনেক সময় গাড়ির নাটবল্টু পর্যন্ত খসে যায়।
উপজেলার মাদার্শা ইউনিয়নের বাসিন্দা এনামুল হক বলেন, প্রতিবছর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের একাধিক স্থান সংস্কারের নামে সরকারের যে বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যয় হচ্ছে তার হিসাব করা যাবে না। নিম্নমানের বিটুমিন ও পাথর দিয়ে সংস্কার হওয়ায় বেশিদিন এ মেরামত টেকসই হচ্ছে না। তালিপট্টি দিয়ে মেরামত অল্প কয়দিন পর আগের চেহারায় ফিরে যায়।
প্রাইভেটকার চালক মোস্তাক আহমদ বলেন, কেরানিহাট থেকে পটিয়া পর্যন্ত সড়কের অবস্থা নাজুক। কেরানিহাট থেকে চট্টগ্রাম শহর পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার পথ পৌঁছাতে ১ ঘণ্টার জায়গায় আড়াই ঘণ্টায়ও পৌঁছাতে পারি না।
ব্যবসায়ীক কাজে সপ্তাহে কয়েকবার কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামে যাতায়াত করেন কক্সবাজারের স্টিল ব্যবসায়ী বাসু দাশ। তিনি বলেন, মহাসড়কের অধিকাংশ এলাকাজুড়ে অসংখ্য খানা-খন্দক। এবারের বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই সড়কের এমন অবস্থা দেখে আসছি। বাসে করে চট্টগ্রামে গেলে মনে হয়, ভূমিকম্প হচ্ছে।
হানিফ এন্টারপ্রাইজের চালক জামিলুর রহমান বলেন, সড়ক বেহাল দশার হওয়ায় যানবাহন নিয়ে আসতে মন চায় না। গত কয়েক মাস ধরে দেখছি, গর্তে ভরা এ মহাসড়ক।
দোহাজারী সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. কুতুব উদ্দিন বলেন, মইজ্জারটেক থেকে চুনতী পর্যন্ত পুরো রাস্তায় অসংখ্য গর্ত হয়েছে। মেরামত হলেও বৃষ্টির কারণে সড়কে গর্ত সৃষ্টি হচ্ছে। এ বৃষ্টির মধ্যে সড়ক মেরামত করে কোনোভাবেই টিকিয়ে রাখা যাচ্ছে না। শীত মৌসুমে ট্রাকে করে লবণ পরিবহন ও অতিরিক্ত মালবাহী যানবাহনের চাপেও সড়কটি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
দোহাজারী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল মিয়া বলেন, মহাসড়কের ৭৭ কিলোমিটার অংশে প্রতি বছর একেক স্থানে গড়ে ১০ কিলোমিটার করে সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ ও ভারি বর্ষণের ফলে পূর্বের সংস্কার করা অংশে খানা-খন্দকের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি থামলেই পাথর ও বিটুমিন দিয়ে একাধিক স্থানে মেরামত কাজ শুরু হবে।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারের আরেক গুরুত্বপূর্ণ শহর বিদ্রোহীদের দখলে

মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা দেশটির আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ শহরের দখল নিয়েছে। মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী তা’আং ...

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ও দূরপাল্লার ট্রেন পটিয়া স্টেশনে যাত্রা বিরতির দাবি

চট্টগ্রাম–কক্সবাজার ও দূরপাল্লার ট্রেন পটিয়া স্টেশনে যাত্রা বিরতিসহ বিভিন্ন দাবিতে রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিমকে স্মারকলিপি দিয়েছেন ...