ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ০৭/০৭/২০২৪ ৯:৫৭ এএম

নির্মাণের পর থেকে কক্সবাজারের আইকনিক রেলস্টেশেনে ধরা পড়ছে নানান ত্রুটি। বৃষ্টি নামলেই স্টেশনের ভেতরে বেশ কয়েকটি অংশে পড়ছে পানি। স্টেশনের ছাদের পানিতে সয়লাব হচ্ছে প্ল্যাটফর্ম। এতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যাত্রীরা। তবে সমস্যাগুলো দ্রুতই সমাধান করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।

সামনে ঝিনুক, আর ভেতরে মুক্তা; এর পেছনেই দৃষ্টিনন্দন এ রেলস্টেশন। দেখলেই আটকে যায় চোখ। কক্সবাজারে নির্মিত চোখ জুড়ানো অসাধারণ নির্মাণশৈলী, আর কারুকাজের এ আইকনিক রেলস্টেশন। এটি নির্মিত হয়েছে ২৯ একর জমির উপর; নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২১৫ কোটি টাকা।

সরেজমিনে দেখা যায়, কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশনটির নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। কিন্তু এখন ধরা পড়ছে নানা ত্রুটি। স্টেশনে ঢুকতে দেখা যাচ্ছে ভেতরে বৃষ্টির পানি পড়ছে। শুধু একটি-দুটি অংশ নয়, স্টেশনের ভেতরে চলন্ত সিঁড়ি, আশপাশ, কাচের গ্লাসে কিংবা ফ্লোরে বেশ কয়েকটি স্থান বৃষ্টির পানিতে ভিজে যাচ্ছে। যা ভিডিও ধারণ করতে চাইলে প্রথমে বাধার মধ্যে পড়তে হয়। পরবর্তীতে শ্রমিকরা পানি মুছে ফেলার চেষ্টা করলেও অনবরত ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টির পানিতে ভিজে যাচ্ছে ফ্লোর।

আইকনিক স্টেশন থেকে বের হতেই আরও ভয়াবহ দৃশ্য। স্টেশনের ছাদের পানিতে ভিজে যাচ্ছে প্ল্যাটফর্ম। নির্মিত রিজার্ভ ট্যাংকের পানি ভর্তি হয়ে উপচে পড়ছে বাইরে। আর শ্রমিকরাও চেষ্টা করছেন পানি নিষ্কাশনের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের এক কর্মচারী বলেন, স্টেশনের ভেতরে বৃষ্টির পানি পড়বে না আর। কাজ তো চলমান রয়েছে।

পানি নিষ্কাশনের দায়িত্বে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন, পাইপলাইনের কাজ চলছে। কাজ শেষ হয়ে গেলে আশা করি আর পানিতে প্ল্যাটফর্ম ভিজবে না। এখনও কাজ চলমান রয়েছে। ছাদের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

আইকনিক রেলস্টেশনে সপ্তাহে ছয়দিন ঢাকা-কক্সবাজার রুটে চলাচল পর্যটক এক্সপ্রেস ও কক্সবাজার এক্সপ্রেস। কিন্তু ছাদের পানিতে যখন প্ল্যাটফর্ম ভিজে যাচ্ছে, তখন দুর্ভোগে পড়ছেন যাত্রীরা।

ঢাকার যাত্রী তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে এতো সুন্দর একটি আইকনিক রেলস্টেশন করেছে। অনেক মানুষ এখানে রেলে যাতায়াত করা ছাড়াও শুধু এই স্টেশনটা দেখতে আসে। কিন্তু দেখেন আমি ট্রেনে ওঠার জন্য প্ল্যাটফর্মে বসলাম। কিন্তু পেছনের দিক থেকে আমার পুরো প্যান্টটাই ভিজে গেল। তাহলে এতো কোটি টাকা খরচ করে এই স্টেশন করে কী লাভ হলো?’

আরেক যাত্রী রোকসানা আক্তার বলেন, ‘ট্রেন ছাড়ার আগে তো প্ল্যাটফর্মে বসে অপেক্ষা করতে হয়। সেখানেই যদি পানি থাকে, তাহলে তো অবশ্যই সমস্যা। এখানে বসার জায়গায় পানি, সব জায়গায় পানি। বিষয়গুলোর ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নেয়া উচিত।’

এদিকে, খোদ স্টেশন কর্তৃপক্ষও জানিয়েছে, কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশনের এখন নানা ত্রুটি ধরা পড়ছে। তবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের দাবি, পুরো কাজ এখনো রেলওয়েকে বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। আর সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করা হচ্ছে।

স্টেশন মাস্টার মো. গোলাম রব্বানী বলেন, এখন যে ত্রুটি দেখা যাচ্ছে, এর মধ্যে অন্যতম বৃষ্টির পানিতে প্ল্যাটফর্ম ভিজে যাওয়া। স্টেশনের ভেতরে কয়েক স্থানে বৃষ্টির পানি পড়ছে। এ বিষয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে, তারা সমাধানের চেষ্টা করছেন।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের সিনিয়র ম্যানেজার (প্রকৌশল) প্রকৌশলী রাসেল মিয়া বলেন, ‘মূল ভবনের যে সমস্যাগুলোর কথা বলা হচ্ছে, সেগুলোর সমাধান প্রায় শেষের দিকে। কাজগুলো আমরা খুব দ্রুত শেষ করব। এর পর সমস্যাগুলো আশাকরি আর থাকবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বৃষ্টির পানিতে প্ল্যাটফর্ম ভিজে যে সমস্যা হচ্ছে, সেটার কাজও চলমান। এই কাজটিও প্রায় শেষের দিকে। সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি যাত্রীদের ভোগান্তিও আর থাকবে না।’

২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ উদ্বোধনের পর আইকনিক রেলস্টেশন থেকে টিকিট কেটে ট্রেনে চড়েন। ২০২৪ সালের ৩০ জুন কাজের মেয়াদ শেষ হলেও পরবর্তীতে তা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে বলে জানালো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

পাঠকের মতামত

দৈনিক জনকণ্ঠের রিপোর্ট রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর সরকারি লাইসেন্স নেই, তদন্ত টিমের পরিদর্শন

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা উখিয়ায় ১৫টি ক্লিনিক হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার চলছে অনুমতি বিহীন। সরকারিভাবে কোন ...

উখিয়ায় র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণ, ইউনিফর্ম, অস্ত্র-গুলি ও হাতকড়াসহ আটক ১

কক্সবাজারের উখিয়ায় র‌্যাব পরিচয়ে রোহিঙ্গা যুবককে অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা এবং প্রতারণার অভিযোগে একটি সংঘবদ্ধ ...