উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬/১১/২০২২ ১০:১৩ এএম

কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদণ্ডী ইউনিয়নে সমুদ্রতীরে জাহাজ নির্মাণ শিল্প গড়ার তোড়জোড় বন্ধ করতে তিন সচিব ও আনন্দ শিপইয়ার্ড এর চেয়ারম্যানসহ ১৫ জনকে আইনী নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ও ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটির (ইয়েস) পক্ষ থেকে ডাকযোগে এ নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এস এম হাসানুল বান্না।
নোটিশে কক্সবাজার সদর উপজেলাধীন চৌফলদণ্ডী ইউনিয়নের চৌফলদণ্ডী মৌজার চিহ্নিত এলাকায় বিদ্যমান সংরক্ষিত বনভূমি, বালুচর ও মহেশখালী চ্যানেলের চর ভরাট জমি যেখানে বনায়ন রয়েছে সেগুলোর বিরুদ্ধ ব্যবহারের স্বার্থে জাহাজ নির্মাণ শিল্প স্থাপনের জন্য বন্দোবস্ত প্রদানের সকল কার্যক্রম অনতিবিলম্বে স্থায়ীভাবে বন্ধ করে সংবিধান, আইন ও আদালতের আদেশ মেনে এ বনভূমি ও বালুচর যথাযথ সংরক্ষণের দাবি জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপ আগামী সাত দিনের মধ্যে নোটিশ প্রদানকারী আইনজীবিকে অবহিত করার জন্য বলা হয়েছে। অন্যথায় উপকূলীয় পরিবেশ, বন, জীববৈচিত্র্য ও বালুচর রক্ষায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

নোটিশের বিষয়টি নিশ্চিত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এস এম হাসানুল বান্না বলেন, ‘সংবিধান, আদালতের রায় ও নিষেধাজ্ঞা ও আইনী বিধিনিষেধ অনুযায়ী প্রস্তাবিত দাগের জমিসমূহ কোনো অবস্থাতেই ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য বন্দোবস্ত প্রদান করা যাবে না।’
যাদেরকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে তারা হলেন- পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধান বন সংরক্ষক, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক, উপকূলীয় বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা, কক্সবাজার সদর ও মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কক্সবাজার সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও আনন্দ শিপইয়ার্ড এণ্ড স্লিপওয়েজ লি: এর চেয়ারম্যান।
নোটিশে বলা হয়েছে, স্থানীয় ভুমি অফিসের প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রস্তাবিত মোট ৫০৪ দশমিক ৬৫একর জমির মধ্যে ৩৩৫ দশমিক ১৫ চিংড়ি চাষযোগ্য জমি হিসেবে ইতোপূর্বে ইজারা প্রদান করা হয়েছে এবং ১৬৯ দশমিক ৫০ একর জমি মহেশখালী চ্যানেলের চর ভরাট জমি যেখানে বনায়ন রয়েছে। এছাড়া ২৭০ দশমিক ৪৩ একর সৃজিত উপকূলীয় বনভূমি।
বন বিভাগের প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রস্তাবিত জায়গার অধিকাংশই সংরক্ষিত বনভূমি যেখানে প্যারাবন বিদ্যমান। ১৯৯৯ সালে কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত ও বালুচর প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে যেখানে স্থাপনা নির্মাণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
এ ছাড়া গত ২১ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়, অনুমোদন পাওয়ার আগেই জমি ভরাটের কাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। স্থানীয় বাসিন্দা, পরিবেশকর্মী ও বন বিভাগের বরাত দিয়ে সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে যে উল্লেখিত স্থানে জাহাজ নির্মাণ শিল্প স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সমুদ্রতীরের অন্তত তিন লাখ বাইন ও কেওড়া গাছ (ম্যানগ্রোভ) কাটা পড়বে যে গাছগুলোর বয়স ৩০-৩৫ বছর। ফলশ্রুতিতে ম্যানগ্রোভ বনের অপ্রতুলতায় দুর্যোগকালীন সময়ে অত্র এলাকার প্রায় ২০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশংকা রয়েছে।
পাশাপাশি ভূমি মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী বনায়নের জন্য বন বিভাগের প্রয়োজন এমন কোন এলাকার খাসজমি ভূমি মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মতামত ব্যতীত কোন প্রকার ইজারা বা বন্দোবস্ত প্রদান করা যাবে না। বন আইনের ২০ ধারায় ঘোষিত সংরক্ষিত বনে প্রবেশ, বন উজাড়সহ সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ। সংরক্ষিত বনভূমিতে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণের সুযোগ নেই। অধিকন্তু বনভূমি রক্ষায় সরকারের রয়েছে সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতি।

পাঠকের মতামত

কুতুপালং পশ্চিমপাড়ায় পরিচয় যাচাইহীন রোহিঙ্গা ভাড়া, বাড়ছে শঙ্কা

মিয়ানমারের রাখাইনে আরাকান আর্মি ও সেনা জান্তার সংঘর্ষে প্রাণ বাঁচাতে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। সীমান্ত ...

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মানবিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে ইউনাইটেড নেশন টিম

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন ইউনাইটেড নেশন ফোরাম বাংলাদেশ স্টাডি প্রোগ্রাম (BSP) এর ...

কক্সবাজারে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ধর্ম ও প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ

কক্সবাজারে বাল্যবিবাহ শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হলো “বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে করণীয়” শীর্ষক আন্তঃধর্মীয় নেতৃবৃন্দের ...