প্রকাশিত: ২১/০৮/২০১৭ ৭:৩৬ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ২:৪৮ পিএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
কক্সবাজার শহরেই চরম ঝুঁকি নিয়ে বাসা-বাড়িতে রান্নার জন্য ব্যবহৃত এলপি গ্যাস সিলিন্ডার লাগিয়ে চালানো হচ্ছে যাত্রীবাহী সিএনজি টেক্সী। তিন চাকার এই গাড়িতে জ্বালানী গ্যাস এলপি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা হলেও তা সংশ্লিষ্ট কারো নজরেই নেই। ট্রাফিক পুলিশ ও বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) মতো দায়িত্বশীল সংস্থার কর্মকর্তারাদের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বললে তারা শুধুই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। অথচ সিএনজি টেক্সীতে এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহার করলে যে কোন মুহুর্তে বিস্ফোরণ হয়ে যাত্রী ও চালকের প্রাণহানি হওয়ার শংকা রয়েছে, রয়েছে উদ্বেগ।

কিছুদিন আগে এক ব্যাংক কর্মকর্তা খুরুশকুলের রাস্তার মাথা থেকে সিএনজি টেক্সীতে খুরুশকুলে যাওয়ার পথে ওই বাহনে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের বিষয়টি তার নজরে পড়ে। পরে বিষয়টি সাধারণ মানুষকে সচেতন করার জন্য এক সাংবাদিককে অবগত করেন তিনি। অবশেষে এই খবরের ভিত্তিতে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহৃত সিএনজি খুঁজতে এই প্রতিবেদক শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি শুরু করেন। বরাবরই শহরের চৌধুরী ভবনের সামনে থেকে খুরুশকুল রাস্তার মাথায় সারিবদ্ধ দাঁড়িয়ে থাকা সিএনজির লাইনে গিয়ে বেশ কয়েকটি এলপি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা সিএনজি দেখতে পান তিনি।

সরেজমিনে এই প্রতিবেদক দেখতে পান, সিএনজি চালকরা নানা কৌশলে পলিথিন মুড়িয়ে যাত্রীর পেছনের সিটের খালি অংশে এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার ঢেকে রাখে। সিলিন্ডার ব্যবহৃত ওই সিএনজিগুলোর ছবি তুলতে চাইলে কিছুক্ষণের মধ্যে কয়েকজন চালক এই প্রতিবেদকের কাছে এসে বাধা দেয়ারও চেষ্টা করেন।

এই সম্পর্কে জানতে চাইলে আবু তৈয়বসহ কয়েকজন সিএনজি চালক জানান, তিন চাকার সিএনজিতে ব্যবহারযোগ্য গ্যাস পাওয়া যায় কক্সবাজার শহরে মাত্র একটি ষ্টেশনে। শহরের বাস টার্মিনালের পশ্চিম পাশের ওই গ্যাস ষ্টেশনটি সিআইপি ও আওয়ামী লীগ নেতা সালাউদ্দিন আহমদ পরিচালনা করেন। শুধু সিএনজি নয়, বিভিন্ন যানবাহন নির্দিষ্ট সময়ে সারি সারি হয়ে থাকে ওই স্টেশনে। এমনকি গ্যাস স্টেশনের স্থান থেকে সিএনজি প্রায় দুই-তিন কিলোমিটার পর্যন্ত সারি সারি হয়ে থাকে।

তারা জানান, ওই বৈধ গ্যাস নিতে গেলে ৫ ঘন্টা থেকে আধাদিনও সময় পেরিয়ে যায়। তাই বাধ্য হয়ে নতুন সিষ্টেম চালু করা হয়েছে।

সিএনজিগুলোতে এলপি গ্যাসে সিলিন্ডার ব্যবহারে কতোটুকু নিরাপধ জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ নাকি ঝুঁকি নেই ওইসব বিষয় বুঝার দরকার নেই। এলপি গ্যাস ব্যবহার করেই যে গাড়ি চলছে তাতেই খুশি।’

সূত্র মতে, সিএনজিতে প্রথমে এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহার করা শুরু হয় সদর উপজেলার ঈদগাঁতে। সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়ে কক্সবাজার শহর ছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়ন ও এলাকায়। এসব সিএনজি দেখা যাবে খুরুশকুল রাস্তার মাথা ছাড়াও সদরের ঈদগাঁও ষ্টেশন, লিংক রোড, শহরের বাস টার্মিনাল, বাজার ঘাটা পুকুরের পাশে, পৌরসভা মার্কেটের নিচে ও ভোলা বাবুর পেট্টল পাম্বসহ বিভিন্ন অস্থায়ী সিএনজি টার্মিনালে।

খুরুশকুল রাস্তার মাথায় সারিবদ্ধ সিএনজির দায়িত্বপালন করা লাইনম্যান বাপ্পি জানান, তাদের চোখকে ফাঁকি দিয়ে মাসখানেক আগে থেকেই এই সিস্টেম চালু করে অসাধু সিএনজি মালিক ও চালকরা। তারা একটি ছোট নিয়ন্ত্রক পাইপলাইনের মাধ্যমে ব্যবহার করে ইঞ্জিনে ফিটিং করেন। যাত্রী সিটের পেছনে নানা কৌশলে গ্যাস সিলিন্ডারগুলো লুকিয়ে রাখা হয়।

যদিও ওই লাইনম্যান দাবি করেন, ১৭/১৮ দিন আগে এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার সিএনজিতে ব্যবহার বেশি করা হলেও এখন কমে এসেছে।

এদিকে কক্সবাজার বিআরটিএ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) আরিফুর ইসলাম টিপুকে সিএনজিতে এলপি গ্যাস ব্যবহার করার বিষয়টি তুলে ধরা হলে তিনি বিষয়টির সম্পর্কে মোটেও অবগত নন বলে জানান তিনি।

অন্যদিকে কক্সবাজার ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) বিনয় কুমার বড়–য়াকে জানালে তিনি বলেন, ‘তিন চাকার সিএনজিতে এলপি গ্যাস ব্যবহার করে যে গাড়ি চলে এইটাই জানতাম না।’

একই অফিসের আরেক ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) কামরুজ্জমান বলেন, ‘এধরণের কথা প্রথম শুনলাম।’তবে তিনি বলেন, ‘যদি অবৈধ হয়ে থাকে তাহলে অভিযান চালানো হবে এবং সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেয়া হবে।’অপরদিকে সিএনজি টেক্সীতে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার ও এলপি গ্যাস ব্যবহার করে যাত্রীবাহী গাড়ি চালানোর ঝুঁকি সম্পর্কে কোন বিশেষজ্ঞ মতামত নেয়া সম্ভব হয়নি।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারের আরেক গুরুত্বপূর্ণ শহর বিদ্রোহীদের দখলে

মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা দেশটির আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ শহরের দখল নিয়েছে। মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী তা’আং ...

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ও দূরপাল্লার ট্রেন পটিয়া স্টেশনে যাত্রা বিরতির দাবি

চট্টগ্রাম–কক্সবাজার ও দূরপাল্লার ট্রেন পটিয়া স্টেশনে যাত্রা বিরতিসহ বিভিন্ন দাবিতে রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিমকে স্মারকলিপি দিয়েছেন ...