উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমীনকে ফের কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। রোববার কক্সবাজারের চীফ জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আদালত সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এই নিয়ে মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভূমি অধিগ্রহণের টাকা আত্মসাৎ সংক্রান্ত মামলায় দু’বার জেলে গেলেন রুহুল আমীন।আদালত সূত্রে জানা গেছে, মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভূমি অধিগ্রহণের ২২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলায় গত ২৩ মে প্রথমবার জেলে যান সাবেক জেলা প্রশাসক রুহুল আমীন। জামিন আবেদন করতে এলে কক্সবাজারের চীফ জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারক মো. তৌফিক আজিজ জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারের পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন।
পরে ৪ জুলাই তিনি হাইকোর্টের থেকে অন্তবর্তীকালীন জামিন পেয়ে তিনি জেল থেকে ছাড়া পান। একই সাথে সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্বা) জাফর আলমও জামিনে ছাড়া পান। পরে দুদক তাদের জামিন বাতিল চেয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করেন। গত ১০ জুলাই আপিল বিভাগ রুহুল আমীন ও জাফর আলমের জামিন বাতিল করে তাদেরকে নিন্ম আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন।
সাবেক জেলা প্রশাসক রুহুল আমীনের আইনজীবি ওমর সুলতান জানান, উচ্চ আদালতের নির্দেশ মোতাবেক রোববার কক্সবাজারের চীফ জুড়িসিয়াল আদালতে হাজির হয়ে জামিন মঞ্জুর করেন। আদালতের বিচারক মো. তৌফিক আজিজ জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারের পাঠানোর নির্দেশ দেন।
জানা গেছে, রুহুল আমীন হাজির হলেও সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জাফর আলম হাজির হননি। আগামী ৩ আগষ্ট মামলাটির ধার্য্য দিন রয়েছে কক্সবাজারের বিশেষ বিচারক আদালতে।
আদালত ও দুদক সূত্র জানায়, কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়িতে ১ হাজার ৪১৪ একর জমিতে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় অধিগ্রহণ করা জমির চিংড়ি, ঘরবাড়িসহ অবকাঠামোর বিপরীতে ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হয় ২৩৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২৫টি অস্তিত্বহীন চিংড়িঘের দেখিয়ে ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হয় ৪৬ কোটি ২৪ লাখ ৩ হাজার ৩২০ টাকা। এ থেকে নানা কৌশলে ১৯ কোটি ৮২ লাখ ৮ হাজার ৩১৫ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়।
এ ঘটনায় ২০১৪ সালের ২০ নভেম্বর মাতারবাড়ির ব্যবসায়ী এ কে এম কায়সারুল ইসলাম চৌধুরী বাদী হয়ে সাবেক জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিন, সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) জাফর আলমসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে একটি মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য দুদককে নির্দেশ দেন। দুদক দীর্ঘ তদন্ত শেষে প্রায় ২২ কোটি টাকা আত্মসাতের সঙ্গে সাবেক জেলা প্রশাসকসহ ৩৬ জনের জড়িত থাকার বিষয়টি দেখতে পায়। গত ৩ এপ্রিল তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতে তারা অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করে।
দুদকের আইনজীবী জানান, ৯ মে একই মামলার আসামি ও কক্সবাজারের সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জাফর আলমকে ঢাকার সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে দুদক। এর আগে গত ৩ এপ্রিল দুদকের বিশেষ দল কক্সবাজার শহরে অভিযান চালিয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার (এলও) সাবেক উচ্চমান সহকারী আবুল কাশেম মজুমদার, সাবেক সার্ভেয়ার ফখরুল ইসলাম ও কক্সবাজার আদালতের আইনজীবী নুর মোহাম্মদ সিকদারকে গ্রেপ্তার করে। তাঁরাও এই দুর্নীতি মামলার আসামি। বর্তমানে সবাই জামিনে রয়েছে।সুত্র; সিবিএন
পাঠকের মতামত