প্রকাশিত: ১৬/১০/২০২১ ১০:১৮ এএম

কক্সবাজারের মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর পুরোপুরি কার্যক্রম শুরু করলে শুধু বাংলাদেশই নয়, এ অঞ্চলের উন্নয়নে যোগ হবে নতুন মাত্রা। ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গভীর এই সমুদ্রবন্দরের সাফল্য বাংলাদেশের ভৌগোলিক গুরুত্বকে সামনে নিয়ে আসবে।

বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো এসব কথা বলেন। ডিপ্লোমেটিক করেসপনডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিকাব) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

প্রশ্নোত্তর পর্বের আগে প্রারম্ভিক বক্তৃতায় নাওকি ইতো সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলা, অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব, অবাধ ও মুক্ত ভারত–প্রশান্ত মহাসাগর প্রতিষ্ঠা এবং সাংস্কৃতিক সহযোগিতা—এই চার বিষয়ে জোর দিচ্ছে জাপান।

ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতা সামনে রেখে ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগর ঘিরে ইন্দো–প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিতে (আইপিএস বা ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশল) বাংলাদেশকে পাশে পাওয়ার কথা বলছে জাপান। এ নিয়ে জানতে চাইলে নাওকি ইতো সাংবাদিকদের বলেন, ‘মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর জাপানের বিগ বির অংশ এবং বিগ বিতে অবাধ ও মুক্ত ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় ধারণার কথা বলা হয়েছে। নীতিগত এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হলে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরে আমাদের বিনিয়োগ করাটা জরুরি।

এটি শুধু বাংলাদেশ নয়, এ অঞ্চলের উন্নয়নে নতুন মাত্রা যোগ করবে। ফলে মাতারবাড়ীর সাফল্য এই অঞ্চলের ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অবস্থানের গুরুত্ব তুলে ধরবে। ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় ধারণার বাস্তবায়নে জাপানের অংশীদার হতে পারে বাংলাদেশ। এর মূল আদর্শগুলো বাংলাদেশও অনুসরণ করে। বাংলাদেশও এ অঞ্চলের শান্তি স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি চায়। বাংলাদেশ চায় না, এমন কোনো সহযোগিতার প্রস্তাব আমরা চাপিয়ে দেব না।’

রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান

জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য রাখাইনে সহায়ক পরিবেশ থাকা জরুরি। সেখানে সেনা অভ্যুত্থানের কারণে খুব শিগগির রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কঠিন হয়ে পড়েছে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গাদের একাংশকে ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়া সফল হবে বলে মনে করেন তিনি।

মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কীভাবে চাপ দিতে পারে, জানতে চাইলে ঢাকায় জাপানের শীর্ষ ওই কূটনীতিক বলেন, এটা নির্ভর করছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কাজটি কীভাবে করবে তার ওপর। এ বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে সেটা হতে পারে। আবার জাতিসংঘে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে প্রস্তাব এনেও এটা করা যায়।

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারের সঙ্গে জাপানের আলোচনা এবং রাখাইনে আর্থিক সহায়তার বিষয়ে জানতে চাইলে নাওকি ইতো বলেন, ‘মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থানের আগে থেকেই প্রত্যাবাসন নিয়ে সে দেশের সরকারের সঙ্গে কথা বলে আসছে। রোহিঙ্গাদের জন্য এ পর্যন্ত যে ২১৪ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা জাপান দিয়েছে। এর মধ্যে ৬৪ মিলিয়ন দেওয়া হয়েছে রাখাইনের উন্নয়নে। আমি মনে করি না, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের বিষয়ে জাপান চুপ করে বসে রয়েছে। আমরা হয়তো মুখ্য ভূমিকায় নেই। তবে আমরা আমাদের মতো কাজ করে যাচ্ছি। এ অঞ্চলর শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান জরুরি বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

পাঠকের মতামত

কোনো মাস্টার মাইন্ড জামায়াত বিশ্বাস করে না : কক্সবাজারে শফিকুর রহমান

জুলাই অভ্যুত্থানের কৃতিত্ব মহান আল্লাহর, নেতৃত্বে ছাত্র-জনতা বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. ...

বাড়ছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ, আটক ৩৩

বান্দরবানের আলীকদম সীমান্তে বাড়ছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সংখ্যা। আজও বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকালে শিশুসহ ৩৩ মিয়ানমারের নাগরিককে আটক ...

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবে সৌন্দর্য হারাচ্ছে কক্সবাজার

অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কারণে সৌন্দর্য হারাচ্ছে কক্সবাজার। যত্রতত্র আবর্জনার স্তূপ, সড়কের পাশের ময়লা এবং সমুদ্র ...