উখিয়ার আড়াই লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্য সেবার অন্যতম মাধ্যম উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ঘিরে স্থানীয় ও কর্মরত মিলে এক শ্রেণির বখাটে, দুর্বৃত্ত, মদ্যপায়ী ও দালালচক্র অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। যে কারণে কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স, আয়াসহ মহিলাকর্মীরা আতংকে রয়েছে। ইতিমধ্যে তারা অন্যত্রে বদলি হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। ভেঙ্গে পড়েছে স্বাস্থ্য সেবা সহ হাসপাতালের সার্বিক কার্যক্রম। এমন অভিযোগ হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মচারীসহ স্থানীয়দের।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার রবিউর রহমান রবি জানায়, হাসপাতালের আশে পাশে বসবাসরত কতিপয় দুর্বৃত্ত মাদকসেবী মহিলা রোগীদের উত্যক্ত, মিথ্যা ডাক্তারী সনদের জন্য চিকিৎসকদের হুমকি ধমকি সহ চাঁদা দাবীর মত অনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিল দীর্ঘদিন থেকে। সম্প্রতি মদ্যপ অবস্থায় আয়ুব খানের স্থানীয় এক বখাটে যুবক হাসপাতাল চলাকালীন সময়ে রোগীদের সামনে অহেতুক চাঁদা দাবী করে। এসময় ওই বখাটে ডাক্তারকে ছুরিকাঘাত করার চেষ্টা করলে কর্মচারীরা বাঁধা দেয়। খবর পেয়ে উখিয়া থানা পুলিশ তাকে আটক করে।
ডাক্তার রবি আরো জানান, রাতের বেলায় মহিলা চিকিৎসক, নার্স, আয়াসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি বেপরোয়া আচরণ করে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ম বর্হিভূত ভাবে ঘোরাফেরা করে। যে কারণে কর্মচারীদের আতংকের ভিতরে দায়িত্ব পালন করতে হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কর্মচারী এ্যাম্বুলেন্স চালক ও প্রধান অফিস সহকারি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ইন্দনে বহিরাগত বখাটেরা হাসপাতালে এসে মহিলা রোগীদের উত্যক্ত করছে নিয়মিত। হাসপাতালের কর্মরত সিনিয়র নার্স মরিয়ম জানান, রাতের বেলায় হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করতে ভয় লাগে। হাসপাতালের আরেক নার্স নিহারু চাকমা জানান, তারা অন্যত্রে চলে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করছেন।
হাসপাতালের নাইট গার্ড মোজাম্মেল হক অভিযোগ করে জানান, হাসপাতালের বাউন্ডারী না থাকায় স্থানীয় বখাটে দুর্বৃত্ত ও মাদক সেবীরা মহিলা রোগীদের নিয়ে ডাক্তার দেখার নামে টানা হেঁচড়া করে শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালায়। বাধাঁ দিতে গেলে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এমতাবস্থায় দেখেও না দেখার ভান করে থাকা ছাড়া আর কোন উপায়ান্তর থাকে না। গত ৬ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১২টায় হাসপাতালের অসুস্থ মাকে দেখতে এসে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে সোনারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী। এঘটনায় ছাত্রীরা মাতা বাদী হয়ে উখিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের জানান, এঘটনায় স্থানীয় দুর্বৃত্ত ঠান্ডা মিয়ার ছেলে আব্দু শুক্কুর (২২) ও বাদশা মিয়ার ছেলে আয়ূব খান (২৩) কে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্য আসামী গিয়াস উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করার জন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে।
হাসপাতাল ম্যানেজম্যান্ট কমিটির সদস্য ও আ’লীগ নেতা আদিল উদ্দিন চৌধুরী ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্থানীয় কতিপয় কর্মচারীদের যোগসাজসে বহিরাগত দুর্বৃত্তরা প্রতিনিয়ত হাসপাতাল এলাকায় অনৈতিক কর্মকান্ড করতে সাহস পাচ্ছে। এদের কারণে হাসপাতালের সার্বিক পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো ঃ মাঈন উদ্দিন রাত ১২টার পর থেকে হাসপাতাল এলাকায় পুলিশি টহল ব্যবস্থা চালু করার জন্য উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ প্রদান করে বলেন, যে কোন বখাটে রাতের বেলায় ঘোরাঘুরি করলে তাকে আইনের হাতে সোপর্দ্দ করতে হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা মোঃ মিজবাহ উদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এঘটনায় কোন কর্মচারী জড়িত আছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাছাড়া হাসপাতালের সার্বিক পরিবেশ উন্নয়নে যথাসাধ্য চেষ্টা করা হচ্ছে বলে সাংবাদিকদের আশ্বস্ত করেন।
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরগুলো ডেঙ্গুর ‘হটস্পট’ হয়ে উঠেছে। শীত মৌসুমেও এই দুই উপজেলার ...
পাঠকের মতামত