প্রকাশিত: ৩০/০৯/২০১৭ ৭:২৪ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১২:৫৩ পিএম

হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ ::
পবিত্র কুরআন অবমাননার জের ধরে ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রামুতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পর টেকনাফের হোয়াইক্যং ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠা জনতার হামলার ঘটনা ৫ বছর পূর্ণ হয়ে ৬ বছরে পদার্পন করেছে। সামপ্রদায়িকতার বিষ ছড়িয়ে পুরো দেশকে অশান্ত করার গভীর ষড়যন্ত্র ছিন্ন করে শ্যামল বাংলায় আবার শান্তির সুবাতাস ফিরে এসেছে। সরকারী পৃষ্টপোষকতায় সংখ্যালঘুরা এখন আতংকের অতীত পেছনে ফেলে উন্নত ভবিষ্যতের প্রত্যাশায় স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাস করছেন নিজ বসত-বাড়িতে। সেদিনের সহিংস ঘটনা সামলাতে গিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান নিজেসহ অনেকে আহত হওয়ার পরও রাজনৈতিক কারণে মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হতে হয়েছে বলে জানা গেছে।

২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রামুতে যে ব্যক্তির ফেসবুক একাউন্টকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বৌদ্ধদের মন্দির ও বাড়িঘরে হামলা চালানো হয়েছিলো, সেই উত্তম বড়ুয়া ঘটনার পর থেকে গত ৫ বছর ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। উত্তম বড়ুয়া কোথায় আছেন সে সম্পর্কে পরিবার এবং পুলিশের কাছে পরিষ্কার কোন তথ্য নেই। উত্তম বড়ুয়ার স্ত্রী রিতা বড়ুয়া সন্দেহ করেছেন তার স্বামীকে হয়ত মেরে ফেলা হয়েছে। গত পাঁচ বছরে কোনো চিঠি বা টেলিফোন তিনি পাননি। তিনি বলেন ‘আমার ধারনা ওনাকে কেউ মেরে ফেলেছে। না হয় উনি তো ফোন করতেন আমাদের’।

অন্যদিকে পুলিশের ধারনা উত্তম বড়ুয়া আত্মগোপনে রয়েছেন। তাকে খোঁজা হচ্ছে এবং তদন্তকারীরা আশা করছেন তাকে পাওয়া যাবে। উত্তম বড়ুয়া নিজ ফেসবুক একাউন্টে কোরআন শরীফ অবমাননা করেছেন এ কথা ছড়িয়ে দিয়ে ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রামুর বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অনেক বাড়িঘর মন্দিরে হামলা চালানো হয়েছিল। উত্তম বড়ুয়ার বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় তাকে প্রধান আসামি করে অভিযোগপত্রও দেয়া হয়েছে।

যে ফেসবুক একাউন্টের বিরুদ্ধে কোরআন অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছিল সেটি নিখোঁজ উত্তম বড়ুয়ার ফেসবুক একাউন্ট হিসেবে নিশ্চিত হয়েছেন তদন্তকারীরা। তবে অবমাননার ছবি তিনি নিজে আপলোড করেছেন, নাকি অন্য কেউ তাকে ট্যাগ বা যুক্ত করেছে সে বিষয়ে তদন্তকারীরা নিশ্চিত হতে পারেননি। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন অনেক চেষ্টা করেও তারা সেই একাউন্টের বিস্তারিত জানতে পারেননি। উত্তম বড়ুয়ার বিষয়ে পুলিশ আত্মগোপনের কথা বললেও তাকে খুঁজে বের করার বিষয়ে পুলিশের চেষ্টা নেই বলে অনেকে মনে করেন। রামু ডটকমের সম্পাদক ও প্রকাশক প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু বলেন ‘তাকে খুঁজে পাওয়াটা খুবই জরুরী। চেষ্টা করা হলে তাকে আবিষ্কার করা যাবে না আমি তা মনে করিনা’।

টেকনাফের হোয়াইক্যং বড়–য়া পল্লীতে সাম্প্রদায়িক সংঘাতের ৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। রামুর ঘটনার জের ধরে পবিত্র কুরআন অবমাননার প্রতিবাদে স্থানীয় কিছু লোক ২০১২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল করার আহবান জানিয়ে মাইকিং করে প্রচারনা চালান। সম্ভাব্য অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ বড়–য়া মন্দিরে পাহারা জোরদার করে। মিছিল আয়োজনকারী চক্রের কতিপয় সদস্য মাগরিবের আযানের পর পরই বড়–য়া পল্লীতে হামলা করে কোরান অবমাননার প্রতিশোধ নিতে তৎপর হয়ে উঠেছিল। সহজ-সরল ধর্মপ্রাণ মানুষকে উত্তেজিত করে বড়–য়া পল্লীর জুয়ারিয়া খোলা মন্দিরে হামলা চালাতে গেলে পুলিশী বাঁধার মুখে পড়ে এবং বড়–য়া গোত্রের লোকজন পালিয়ে যাওয়ার সময় ৮/১০জন আহত হয়। খবর পেয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলেও তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে। এমনকি পুলিশের উপর ঝাঁপিয়ে পড়তেও কার্পন্য করেনি। পরে পুলিশ নিরুপায় হয়ে মন্দির ও আতœরক্ষার্থে ফাঁকাগুলি বর্ষণ করেছিল। এ ঘটনায় চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী (৪৫), তৎকালীন আইসি বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী (৪৪), নায়েক জয়ন্ত বড়–য়া (৩৫), কনস্টেবল তুষার (৩৪), আব্দুর রব (৩৩), সংবাদকর্মী রমজান উদ্দিন পটল (৩২), আমতলীর আবুল কাশেমের পুত্র মোঃ জাহেদ (১৮), লম্বাবিল এলাকার মিয়া হোছনের পুত্র মোঃ জালাল আহমদ (২৬), আলমের শিশুপুত্র পুতিয়া (৮), আব্দুল হাকিমের পুত্র মোস্তাক (৩০), নুরুল ইসলামের পুত্র হাসান আলী (৩৮), নুরুল আলমের পুত্র মোঃ হোছন (৪০) ও জসিম (৩০) নামের যুবকসহ উভয় পক্ষের ২১ জন আহত হয়। পরে ক্ষুদ্ধ লোকজন বড়–য়া পাড়ার নির্মল বড়–য়া, সাধন মলি¬ক, যতিন্দ্র, কালু, অমল বড়–য়া, নুনু বড়–য়াসহ ৮/১০টি বসত-বাড়িতে অগ্নি সংযোগ করে এবং ভাংচুর চালানো হয়েছিল। এ ঘটনায় ভূতি শর্মা (৭৫) নামে বৃদ্ধা অগ্নিকান্ডে বাকরুদ্ধ হয়ে যায়। হামলায় আহত লোকজনকে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হয়।

সংখ্যালঘু বড়–য়া পল্লীতে ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় হোয়াইক্যং পুলিশের তৎকালীন এএসআই মাহফুজ বাদী হয়ে ৭০ জন এজাহার নামীয় আসামীসহ অজ্ঞাত ২-৩ শত লোককে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ২১ জনকে আটক করে হাজতে প্রেরণ করে। জোয়ারীখোলার ক্ষতিগ্রস্থ বাড়ীর মালিক সাধন মল্লিক বাদী হয়ে হোয়াইক্যং ইউপি চেয়ারম্যান নূর আহমদ আনোয়ারীকে প্রধান আসামী করে ৩৩ জন এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাত ২ থেকে আড়াই শত লোককে আসামী করে মামলা করেন। এরপর শুরু হয় কতিপয় দালাল ও রাজনৈতিক নেতাদের ইন্দনে স্পর্শকাতর মামলার পুলিশী বাণিজ্য। রাতের বেলায় ধরে এনে বোঝা-পড়া না হলে মামলায় জড়িয়ে হাজতে চালান দেওয়াসহ কত কি !। পুলিশী আতংকে এলাকার হাজার হাজার নিরীহ মানুষ স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে ও বাড়ি-ঘর ফেলে পালিয়ে যেতে থাকে। অনেকে সাগর পথে মালয়েশিয়া যেতে গিয়েই চিরতরে হারিয়ে গেছেন। পুলিশ শেষ পর্যন্ত বড়–য়া পল্লীতে হামলা ও অগ্নি সংযোগ মামলায় ৮৬ জন এবং সাধন মল্লিকের মামলায় ৬৬ জনকে অর্ন্তভূক্ত করে চুড়ান্ত চার্জশীট প্রদান করে।

সেদিনের ঘটনায় ভুক্তভোগীদের অনেকে পরকালে পাড়ি জমিয়েছেন। কিন্তু স্থানীয় চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারীসহ অনেককে রাজনৈতিক কারণে সেদিনের মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হয়েছিল। এব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা জামায়াত নেতা নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন ‘আমিসহ অনেক জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে মিথ্যা মামলায় জর্জরিত হয়ে মানবেতর দিন কাটছে। আমরা আগেও সহাবস্থানে ছিলাম এবং এখনো আছি। আগামীতে থাকবো ইনশল্লাহ। তরে যারা নির্দোষভাবে মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের বিষয়টিও খতিয়ে দেখার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহায়তা কামনা করছি’।

২০১২ সালে ক্ষতিগ্রস্থ এসব পরিবারের সদস্যদের সাথে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তাঁরা জানান, সেদিনের সামান্য উস্কানিতে যা হয়েছে তা মনে রাখার মতো। তবে সরকারের আন্তরিকতায় সেই ক্ষত পূরণ হয়েছে। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় এমপি আলহাজ্ব আবদুর রহমান বদি সিআইপির অনুদান পেয়ে পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্থ ১৭ পরিবার পুনরায় উন্নত মানের বসত-বাড়ি নির্মাণ করে নতুন প্রত্যাশায় জীবন চলা শুরু করেছে। তাদের সঙ্গে আলাপকালে জানান ২০১২ সালের লোমহর্ষক ও হৃদয়-বিদারক কালো রাত্রির কথা মনে হলে গাঁ শিউরে উঠে। সময়ের প্রয়োজনে মানুষ যে কত নিষ্ঠুর হয় তা আমাদের প্রথম অভিজ্ঞতা। বর্তমানে তারা সরকারী সহায়তা এবং নিজস্ব অর্থায়নে উন্নতমানের বাড়ি তৈরী করে সুখে রয়েছে।

উল্লেখ্য, রামুর বৌদ্ধ বিহার ও বসতিতে হামলা ঘটনার পরে এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে যে আস্থার সংকট তৈরী হয়েছিল তা অনেকটা কেটে গেছে। তবে আইনী কার্যক্রম নিয়ে এখনো অসন্তোষ আছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ে।

বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতারা বলছেন, বৌদ্ধ বিহার ও বসতিতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় যেসব মামলা হয়েছে এ বিষয়ে কিছুই জানেনা বৌদ্ধ সম্প্রদায়। কাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, কাকে বাদ দেওয়া হয়েছে পুরো বিষয়টি নিয়ে তারা অন্ধকারে রয়েছেন। যে কারণে এসব মামলায় স্বাক্ষ্য দিতেও অনীহা তাদের।

প্রসঙ্গত: উত্তম বড়ুয়া নামের এক বৌদ্ধ যুবকের ফেসবুকে পবিত্র কোরআন শরীফ অবমাননার অভিযোগ এনে ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে রামুর ১২টি বৌদ্ধ বিহার, ২৬টি বসতঘরে অগ্নিসংযোগ ও হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় আরও ৬টি বৌদ্ধ বিহার এবং শতাধিক বসতঘরে হামলা, লুটপাট ও ভাংচুর চালানো হয়। পরদিন ৩০ সেপ্টেম্বর বিকালে উখিয়ায় আরও ৪টি বৌদ্ধ বিহারে হামলা চালানো হয়েছিল।

জেলা পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, রামু উখিয়া ও টেকনাফে সহিংসতার ঘটনায় ১৯টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে রামু থানায় ৮টি, উখিয়া থানায় ৭টি, টেকনাফ মডেল থানায় ২টি এবং কক্সবাজার সদর থানায় ২টি। এসব মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে ১৫ হাজার ১৮২ জনকে। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত আসামী করা হয় ৩৭৫ জন। পরবর্তীতে এসব মামলায় ৯৪৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এর মধ্যে রামুর ৮টি মামলায় ৪৫৮ জনকে অভিযুক্ত করা হয় ।

কক্সবাজার কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক কাজী মো.দিদারুল আলম জানান, ১৯টি মামলার মধ্যে সুধাংশু বড়–য়ার দায়ের করা মামলাটি আপোষ-মিমাংসামূলে নিষ্পত্তি করা হয়েছে। বাকি ১৮টি মামলার মধ্যে ২টি মামলা অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন পিবিআইকে দেয়া হয়েছে। বাকি ১৬টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই) কক্সবাজার এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান বলেন ‘এপর্যন্ত ৪টি মামলা অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআই-এর কাছে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩টি মামলার তদন্তকাজ শেষ করে অভিযোগ পত্রও পুনরায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আইনী জটিলতার কারণে ১টি মামলার অভিযোগপত্র এখনো জমা দেয়া যায়নি’।

কক্সবাজার জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট মমতাজ উদ্দিন জানান, মামলাগুলোর বিচার কার্যক্রম অনেকটা শেষ পর্যায়ে। তবে এসব মামলার স্বাক্ষী পাওয়া যাচ্ছেনা। স্বাক্ষী যারা তারা বেশিরভাগই বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের। তারা ভয়ে কেউ সাক্ষ্য দিতে রাজি হচ্ছেননা। একটি মামলায় ১২ কি ১৩ জন আদালতে স্বাক্ষ্য দিলেও এদের মধ্যে ৯জন স্বাক্ষীকে বৈরী ঘোষনা করেছেন আদালত। ৩টি মামলা পিবিআই-এর কাছে তদন্তাধীন রয়েছে। পিবিআই তিনটির অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। রামু উপজেলা কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ ঐক্য ও কল্যাণ পরিষদ ও রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারের সাধারণ সম্পাদক তরুন বড়ুয়া বলেন ‘১৯টি মামলার বাদি পুলিশ। পুলিশ ইচ্ছেমত আসামি করেছে। ইচ্ছেমত বাদ দিয়েছে। ফলে আইনগত পুরো বিষয়টি নিয়ে অন্ধকারে আছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়। এ অবস্থায় বর্তমানে ভয়ে সাক্ষীরাও সাক্ষ্য দিতে রাজি হচ্ছেন না। ঘটনার পর থেকে সরকার এবং সেনাবাহিনীর কাছ থেকে অনেক সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। নতুন নতুন বৌদ্ধ বিহার ও বাড়ি ঘর নির্মানসহ পুণর্বাসনের বিষয় নিয়ে সরকারের প্রতি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। বর্তমানেও সরকারের পক্ষ থেকে নানা সহযোগিতা অব্যাহত আছে’।

রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারের আবাসিক পরিচালক প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু বলেন ‘আমরা ভাঙ্গা-গড়া,উত্থান পতন অনেক কিছুর মুখোমুখি হয়েছি। এ ঘটনায় রামুর হাজার বছরের ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে’ যে আস্থার সংকট তৈরী হয়েছিল পাঁচ বছরে তা অনেকটা কেটে ওঠেছে। তবে এ অবস্থায় সুষ্ঠু বিচারের পাশাপাশি সম্প্রীতির পরিধিকে আরো বেশী সমৃদ্ধ করতে হবে। সেটি হতে পারে সামাজিকভাবে, রাষ্ট্রিয়ভাবে ও আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়’।

উল্লেখ্য, ঘটনার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের তদন্ত কমিটি এবং চট্রগ্রামের দায়রা জজ আবদুল কুদ্দুস মিয়ার নেতৃত্বে বিচার বিভাগীয় ২টি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের তদন্তে ২০৫ জনকে অভিযুক্ত করে এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তে ২৯৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছিল কয়েক বছর আগে।

স্থানীয় পুলিশের আইসি বলেন ‘ঘটনার পর হতে বড়–য়া পল্লী, উপাসনালয় এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের প্রতি প্রতিনিয়ত নজরদারী রেখে খোঁজ-খবর নেয়া অব্যাহত রয়েছে’। টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাফর আহমদ বলেন ‘এ ধরনের লোমহর্ষক ঘটনাকে পেছনে ফেলে বর্তমান সরকারের আমলে মানুষ ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে সচেতন হয়েছে। তাই কোন স্বার্থন্বেষী মহল ধর্মকে পুঁজি করে ফায়দা হাসিল করতে পারছেনা। ইনশল্লাহ আগামীতেও আমরা সাম্প্রদায়িক সংঘাত এড়াতে সজাগ থাকব’। #

পাঠকের মতামত

আলোচিত স্কুলছাত্রী টেকনাফের তাসফিয়া হত্যা: এবার তদন্ত করবে পুলিশ

চট্টগ্রামের আলোচিত স্কুলছাত্রী তাসফিয়া আমিন হত্যা মামলায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনের ...