প্রকাশিত: ১৭/০৮/২০১৭ ৮:২১ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৩:০০ পিএম
ফাইল ছবি

উখিয়া নিউজ ডটকম::
মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে গত বছরের অক্টোবরে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সেনা অভিযানের প্রেক্ষাপটে প্রায় ৭০ হাজার রোহিঙ্গা সীমান্তের নানা পথে ঢুকে পড়েছে বাংলাদেশে। তারা আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন শিবির ছাড়াও কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের গত কদিন ধরে পুনরায় কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে শুরু হয়েছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আবারও ব্যাপক হারে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আশঙ্কায় সীমান্তে নজরদারি ও টহল জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

সদ্য অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা জানিয়েছে, মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে আবারও ভারী অস্ত্রশস্ত্রসহ ব্যাপক সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। সেখানে রোহিঙ্গাদের ঘরে ঘরে অভিযান চালানো হচ্ছে। জঙ্গিবিরোধী অভিযানের নামে সেনাবাহিনী গত কদিনে বিভিন্ন এলাকায় বহু লোককে গ্রেপ্তার করেছে। তারা মনে করছে, তাদের দেশ থেকে বিতাড়িত করার অশুভ উদ্দেশ্যেই এই পরিকল্পিত সেনা অভিযান।

উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নেতারা জানিয়েছেন, গত কয়েক দিনে উখিয়ায় প্রায় এক হাজার ও টেকনাফে পাঁচ শতাধিক রোহিঙ্গা নতুন ও পুরনো ক্যাম্প এবং আশপাশে অবস্থান নিয়েছে। তবে সরকারি-বেসরকারি কোনো সংস্থা এর সঠিক তথ্য দিতে পারেনি।

সীমান্তের ওপার থেকে একাধিক সূত্র জানায়, কিছুদিন আগে মংডু শহরের পাশে একটি পাহাড়ের কাছে চার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীর মৃতদেহ পাওয়া যায়।
এর জের ধরে একটি রোহিঙ্গা পাড়ায় হামলা চালিয়ে বেশ কিছু লোককে হত্যা করা হয়েছে। পরে নিরাপত্তার অজুহাতে রাখাইনে সেনা সমাবেশ বাড়িয়েছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ।

সদ্য অনুপ্রবেশকারী ওপারের মংডু এলাকার বুড়া সিকদারপাড়ার ফকির মোহাম্মদের ছেলে আবু ছিদ্দিক (৩৭) জানান, গত মাসে তোরাইং এলাকার একটি খাল থেকে চারজন মগের (রাখাইন) রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তারা মুসলিম রোহিঙ্গাদের নির্যাতনে মারা গেছে বলে প্রপাগান্ডা চালায় সে দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি।

অথচ লোকমুখে শোনা যায়, মগ (রাখাইন) জনগোষ্ঠীর লোকেরা প্রায় সময়ই তোরাইং খালে মদ্যপ অবস্থায় কাঁকড়া ও ব্যাঙ শিকারে যায়। ওই ঘটনার দিনও মদ্যপ অবস্থায় ওই খালে কাঁকড়া ও ব্যাঙ ধরাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষে সংঘর্ষে চারজন মগ মারা যায়। পরে বিষয়টিকে ব্যাপক আকারে নিতে সেনা মোতায়েন করে রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচারের স্টিম রোলার চালানো হয়। হত্যার পাশাপাশি আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বাড়িঘরে। ধর্ষণ করা হয় রোহিঙ্গা নারীদের।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, ‘গত কদিন ধরে নাফ নদী পাড়ি দিয়ে কয়েকটি পয়েন্টে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঘটছে বলে শুনেছি। আমরা এ ব্যাপারে সজাগ রয়েছি। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে বিজিবি সজাগ রয়েছে। ’

টেকনাফে বিজিবি-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এস এম আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘সীমান্তের ওপারে রাখাইন রাজ্যে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে আমরা অবহিত হয়েছি।

তারা জানিয়েছে, বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযানের জন্য সেনা সদস্য বাড়ানো হয়েছে। তার পরও সীমান্তের কাছাকাছি এভাবে সেনা সমাবেশ বাড়ানোর ঘটনায় আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রতিবাদ জানিয়েছি। ’

বিজিবি অধিনায়ক জানান, রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের কারণে আবার যেন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ না ঘটে সে ব্যাপারে বিজিবি সতর্ক রয়েছে।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারের আরেক গুরুত্বপূর্ণ শহর বিদ্রোহীদের দখলে

মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা দেশটির আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ শহরের দখল নিয়েছে। মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী তা’আং ...

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ও দূরপাল্লার ট্রেন পটিয়া স্টেশনে যাত্রা বিরতির দাবি

চট্টগ্রাম–কক্সবাজার ও দূরপাল্লার ট্রেন পটিয়া স্টেশনে যাত্রা বিরতিসহ বিভিন্ন দাবিতে রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিমকে স্মারকলিপি দিয়েছেন ...