প্রকাশিত: ১৫/০৩/২০১৮ ৭:৩২ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৫:২৭ এএম

বিশেষ প্রতিবেদক:
শাহেদা আক্তার রিফা। বয়স মাত্র ১২/১৩ বছর। বাড়ি কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের, সোনাইছড়ি গ্রামে। বাবা একজন কৃষক ও মা গৃহিনী। ৫ ভাই বোনের মধ্যে সে চতুর্থ। কৃষক বাবার মেয়ে তাই চেহারায় দারিদ্র্যের ছাপ সুস্পষ্ট।

আর্জেন্টাইন সুপারস্টার মেসির মতো স্বচ্ছলতা তার মুখাবয়বে খেলে যায় না। অথচ সে খেলেন মেসির মতোই। তাই কোচ গোলাম রায়হান বাপন তাকে ১০ নাম্বার জার্সিটি দিয়েছেন। মেসির মতো ম্যাজিক শটে দলকে গোলবন্যায় ভাসান বলে এলাকায় তাকে সবাই মেসি নামেই ডাকে।

যুব অলিম্পিক গেমসের চলমান আসরে ৩ ম্যাচে করেছেন ১৩ গোল! প্রথম ম্যাচে ৪টি, দ্বিতীয় ম্যাচে ৮টি আর ফাইনালে ১ টি। যা যুব গেমসে দেশ সেরার শিরোপা এনে দিয়েছে ঢাকা বিভাগকে। আর নিজেই অর্জন নিয়েছে টুর্নামেন্ট সেরার তকমা।

প্রশ্ন আসতে পারে, কক্সবাজারের মেয়ে হয়ে ঢাকায় কী করে খেললো রিফা? না দুর্নীতি করে আসেননি। এসেছে প্রতিভা দিয়েই। যুব গেমসের চূড়ান্ত আসরকে সামনে রেখে দেশ ব্যাপি যখন বাছাই চলছিলো তখন চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে তার ডাক পড়েনি। বিকেএসপির ভাল ছাত্রী। বিষয়টি ঢাকার কোচ গোলাম রায়হান বাপন ভাল করেই জানতেন। তাই নিজ দলে ভেড়াতে কালবিলম্ব করলেন না তিনি।

গুরুর আস্থার প্রতিদান দিতে কার্পণ্যও করলো না রিফা। বরং দিলো দু’হাত ভরে। একটি দুটি নয়, ১৩টি গোল! তাও মাত্র ৩ ম্যাচে। এ তো বিস্ময়ের মতো কথা।

আশ্চর্যের শেষ এখানেই নয়। মেয়ে হয়েও ছোট বেলার যখন রিফা পাড়ায় খেলত তার সতীর্থ এবং প্রতিপক্ষ দুই ছিল বিপরীত লিঙ্গের। অর্থাৎ ছেলেরা। বাসার পাশে ছিল খেলার মাঠ। সেখানে ছেলেদের সাথে দিব্যি খেলেছেন। কথাটি বলতে এতটুকু লজ্জা ফেলে না বা দ্বিধা বোধ করলো না এই ম্যাজিক কিশোরী। বরং ছিল বেশ সাবলীল।

রিফা বলে, ‘আমি আগে ছেলেদের সাথে খেলতাম। বাড়ির পাশে মাঠ আছে। ছেলেদের সাথে খেলতে খেলতে বিকেএসপিতে ভর্তি হলাম। বিকেএসপিতে ভর্তি হবার পর আমাকে যুব গেমস খেলতে ডেকেছে। প্রথম ম্যাচে ৪ গোল করলাম, দ্বিতীয় ম্যাচে ৮ গোল, ফাইনাল ম্যাচে ১ গোল করলাম।’

ভাবা যায়? পুরুষ শাষিত এই সমাজে দারিদ্র্যের কারণে জর্জরিত একটি একটি কৃষক পরিবারের মেয়ে ছেলেদের সাথে খেলছে! সেখানে কেউ বাধার দেয়াল সৃষ্টি করছে না! উল্টো পাচ্ছে উৎসাহ। ‘আমাকে ছেলেদের সাথে খেলতে কেউ নিষেধ করেনি। আমাকে বাবা মা খেলতে বলেছে।’

সেই উৎসাহ আর উদ্দীপনাই মূলত রিফাকে মানসিকভাবে নিয়ে গেছে অধরা এক উচ্চতায়। সেখান থেকে তার স্বপ্নটাও হয়েছে বিস্তীর্ণ। তবে তা শুধু নিজেকে ঘিরেই নয়, প্রিয় দেশকে ঘিরেও। ‘আমি জাতীয় দলে খেলতে চাই আর বিদেশে গিয়ে বাংলাদেশের সুনাম অর্জন করতে চাই।’

পাঠকের মতামত

উপকূলের ম্যানগ্রোভে বিশ্বস্বীকৃতি—দ্য আর্থশট প্রাইজ জিতলো ফ্রেন্ডশিপ

বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ পরিবেশ পুরস্কার ‘দি আর্থশট প্রাইজ ২০২৫’ জিতেছে বাংলাদেশের সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা ফ্রেন্ডশিপ। ...

রোহিঙ্গার হাতে এনআইডি : নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে আসামি চসিকের কর্মচারীও

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) শুলকবহর ওয়ার্ড কার্যালয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন এবং পরবর্তীতে এটি ব্যবহার ...

রোহিঙ্গা সংকটে মানবপাচার রোধে একসঙ্গে কাজ করবে আইওএম ও এইচসিআই

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং কানাডার প্রাচীনতম মুসলিম ত্রাণ সংস্থা হিউম্যান কনসার্ন ইন্টারন্যাশনাল (এইচসিআই) ও ...

উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ সম্পন্ন

উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ...

রোহিঙ্গা নারীকে নাগরিকত্ব সনদ দেওয়ায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বরখাস্ত

এক রোহিঙ্গা নারীকে অবৈধভাবে নাগরিকত্ব সনদ দেওয়ায় সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ...