উখিয়া নিউজ ডটকম::
কক্সবাজার উখিয়ার নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত অজপাড়া গাঁ তেলখোলা ও মোছারখোলা এলাকার ২০ হাজার মানুষ যুগ যুগ ধরে নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত। এ জনপদের দরিদ্র শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন আট কিলোমিটার পায়ে হেঁটে স্কুলে আসা যাওয়া করছে।
থাইংখালী খালের পাড় দিয়ে তেলখোলা বটতলী পর্যন্ত চার কিলোমিটার সড়কের স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকে এ পর্যন্ত কোন উন্নয়ন না হওয়ার প্রেক্ষিতে এ সড়কে যানবাহন চলাচল কাল্পনিক স্বপ্ন মাত্র।
ঢালার মুখ থেকে থাইংখালী পর্যন্ত এক কিলোমিটার সড়কে ঝুঁকি নিয়ে টমটম চলাচল করলেও ভাড়া নেওয়া হচ্ছে জনপ্রতি ৫০ টাকা। এমন অভিযোগ প্রত্যন্ত এ জনপদের শত শত দরিদ্র শিক্ষার্থীর।
সরেজমিন তেলখোলা মোছারখোলা চার কিলোমিটার সড়ক ঘুরে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, থাইংখালী খালের ১২টি পয়েন্টে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে নির্বিচারে। অবৈধ বালি উত্তোলন ও পরিবহনের ফলে চার কিলোমিটার সড়ক ভেঙে খানা খন্দকে একাকার হয়ে পড়েছে।
সড়কের বেহাল পরিণতি প্রত্যক্ষ করতে গিয়ে দেখা হয় থাইংখালী স্কুলে নিয়মিত তিন জন ছাত্রীর সাথে। এদের একজন থাইংখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী হালিমা আকতার, অপর জন সাহি মোছাম্মৎ রিয়া ও তাসমিনা আকতার। তাদের বাড়ি তেলখোলা বটতলী এলাকায়।
তারা তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা ও তিক্ততা থেকে জানায়, বালি উত্তোলন ও বালি ভর্তি ট্রাক চলাচলের কারণে চার কিলোমিটার দীর্ঘ কাঁচা সড়কটি অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি নামলে টমটম রিক্সা পর্যন্ত চলে না। তাই তাদের প্রতিদিন আট কিলোমিটার পায়ে হেঁটে স্কুলে আসা যাওয়া করতে হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য তোফাইল আহমদ তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, শুষ্ক মৌসুমে মাটি ফেলে রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী করে তোলা হলেও ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে তার স্থায়িত্ব থাকে না।
ফলে তেলখোলা-মোছারখোলা এলাকার বৃহত্তর জনসাধারণ স্কুল, মাদ্রাসাগামী ছাত্র-ছাত্রীদের হাঁটা পথে থাইংখালীর সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতে হয়। তাও আবার ডাকাত সন্ত্রাসীদের আতঙ্ক নিয়ে।
পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, থাইংখালী থেকে তেলখোলা পর্যন্ত চার কিলোমিটার সড়কটি যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে তোলার জন্য বেশ কয়েকবার উদ্যোগ গ্রহণ করেও বরাদ্দের কারণে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।
যে কারণে বিস্তীর্ণ পাহাড়ি জনপদে নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর উৎপাদিত শাক সবজি, তরিতরকারি সহ বিভিন্ন ফলজ দ্রব্য তারা ঠিক মত বাজারজাত করতে পারছেনা বিধায় ওখানে বসবাসরত অধিকাংশ জনগণ দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করছে।
পাঠকের মতামত