হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া নিউজ ডটকম
প্রকাশিত: ০৭/০৪/২০২৫ ৯:১৫ পিএম

উখিয়ার কুতুপালং এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে তিনজনের প্রাণহানির ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে গোটা এলাকা। রবিবার (৬ এপ্রিল) সকালে রাজাপালং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম পাড়ায় সংঘটিত এই ত্রিমুখী হত্যাকাণ্ডে নিহতদের জানাজা ও রাজনৈতিক নেতাদের উপস্থিতিতে এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে জানাজা পূর্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আহবান জানান। নতুন করে যেন উত্তেজনা ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি রাজনৈতিক ও সামাজিক সর্বস্তরের মানুষ সজাগ রয়েছেন।নিহতরা হলেন—স্থানীয় মসজিদের খতিব ও জামায়াতের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আমির মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন, প্রতিপক্ষের মোহাম্মদ হোসাইনের ছেলে আব্দুল মান্নান (৩৭) এবং তার বোন শাহিনা বেগম (৪০)।

নিহতরা
নিহতরা সম্পর্কে চাচাতো-জেঠাতো ভাইবোন। ঘটনার পরদিন নিহত জামায়াত নেতা মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুনের জানাজা সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে কুতুপালং আলিফ হাসপাতালের পাশে খোলা ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন কক্সবাজার জেলা জামায়াতের আমির নুর আহমেদ আনোয়ারী। জানাজায় উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী, জামায়াত নেতা শাহজাদা ফানা ফিল্লাহ বিন আজাদ, সমাজকল্যাণ সম্পাদক নুর আহমেদ ছিদ্দিকী, অফিস সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ জাহান, উখিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সরওয়ার জাহান চৌধুরী, এডভোকেট রমিজ উদ্দিন, চেয়ারম্যান মীর সাহেদুল ইসলাম চৌধুরী, সাদমান জামি চৌধুরীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য হাজারো মানুষ।জানাজা পূর্ব সমাবেশে নেতৃবৃন্দরা বলেন, সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষায় সকলকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমরা সবাই ব্যর্থ হয়েছি, আমাদের আরো ধর্যৈ ও মানবিক গুণাবলী হারিয়ে ফেলেছি। শয়তানের কুমন্ত্র ঢুকার পরেই একজন আরেকজনকে খুন করেছে। সমস্ত দ্বন্ধ মুছে ফেলে আত্নীয়তার বন্ধনে সবাইকে সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষার আহবান জানানো হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুতুপালং পশ্চিম পাড়া গ্রামের একটি ভিটে জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আব্দুল্লাহ আল মামুন ও আব্দুল মান্নান পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। রবিবার সকালে ওই বিরোধপূর্ণ জমিতে এক পক্ষ পাকা দেয়াল নির্মাণ করতে গেলে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে বাকবিতণ্ডা, পরে তা রূপ নেয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ধারালো দা, লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় উভয়পক্ষ। হামলা-পাল্টা হামলায় গুরুতর আহত হন অন্তত ১০ জন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে কুতুপালং আলিফ হাসপাতাল ও উখিয়া সরকারি হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহতরা এখনো কক্সবাজার ও চট্রগ্রামে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে ডাক্তার জানিয়েছেন। উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আরিফ হোছাইন বলেন, “দ্বিমুখী এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে চারজনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে তারা পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীন আছেন।”
তিনি আরও জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং বাকি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”এই ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাড়তি নজরদারির পাশাপাশি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে দুইপক্ষকে শান্ত রাখার চেষ্টা চলছে।

এদিকে নিহতদের জানাজায় রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতাদের উপস্থিতি এই হত্যাকান্ডের পর আর কোন অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি নতুন মাত্রা দিয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় বিশ্লেষকরা।

পাঠকের মতামত

দৈনিক জনকণ্ঠের রিপোর্ট রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর সরকারি লাইসেন্স নেই, তদন্ত টিমের পরিদর্শন

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা উখিয়ায় ১৫টি ক্লিনিক হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার চলছে অনুমতি বিহীন। সরকারিভাবে কোন ...

উখিয়ায় র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণ, ইউনিফর্ম, অস্ত্র-গুলি ও হাতকড়াসহ আটক ১

কক্সবাজারের উখিয়ায় র‌্যাব পরিচয়ে রোহিঙ্গা যুবককে অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা এবং প্রতারণার অভিযোগে একটি সংঘবদ্ধ ...