

উখিয়ার রাস্তায় যেন প্রতিদিনই এক নতুন দুঃশ্বাস। বালুখালী ও উখিয়া কলেজের পাশে স্পেশালাইজড হাসপাতাল সংলগ্ন সেনাবাহিনীর দুই চেকপোস্টে দীর্ঘ অপেক্ষা—এটাই এখন সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের রুটিন। এনজিওকর্মী তানিয়া বলেন, ক্যাম্পে সারাদিনের কাজ শেষে যখন বাড়ি ফিরি, তখন গেট পার হতে হতে বিরক্তি ছাড়িয়ে যায় হতাশায়—জাতীয় পরিচয়পত্র দেখানো, লম্বা লাইন, আর শেষ নেই বিড়ম্বনার। সেই পথ ধরেই একটু এগোতেই দেখা যায় বাঁশবোঝাই ট্রাক উল্টে বাড়ির ঘের বেড়া ভেঙে উঠানে গিয়ে পড়েছে; আরেকটু পরে টমটমের ধাক্কায় মাটিতে লুটিয়ে থাকা এক বৃদ্ধ পথচারী। উখিয়া স্টেশনের আগেই আবার আটকে থাকা বিশাল যানজট—এ যেন উখিয়ার প্রতিচ্ছবি। পালংখালী, বালুখালী, কুতুপালং, উখিয়া, কোটবাজার, মরিচ্যা—সব জায়গায় একই চিত্র। পরিকল্পিত উখিয়া চাই-এর আহ্বায়ক নুর মোহাম্মদ সিকদার নিজেই দুর্ঘটনায় মাসের পর মাস চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার অভিযোগ, টমটম, সিএনজি, ট্রাক—অধিকাংশ চালকেরই লাইসেন্স নেই; দেখারও কেউ নেই। একটি ভুল সারা জীবনের কান্না হয়ে ওঠে, তবু সংশ্লিষ্টদের তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। রাজাপালং জাদিমুরা বাঁকে সিলেটি পাথরবোঝাই ট্রাক উল্টে ধানক্ষেতে পড়ে থাকার সাম্প্রতিক ঘটনাই আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে—অতিরিক্ত মাল বোঝাই, ওভারটেকিং আর চালকের অসতর্কতা কত বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। স্টেব্রাডারের সহায়তায় ট্রাকটি তোলা হলেও ক্ষতি গুনতে হয়েছে স্থানীয় কৃষককে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়ম মেনে চালানো, বোঝাই সীমা মানা, চালকদের বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণ, রুটভিত্তিক লাইসেন্স যাচাই এবং ব্যস্ত পয়েন্টগুলোতে ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন—এসব ব্যবস্থা গ্রহণ করলে দুর্ঘটনা ও যানজট দুটোই বড় ভাগে কমে আসবে। সড়কে সামান্য দায়িত্বহীনতা যে অন্য কারও জীবনে অন্ধকার নামিয়ে দিতে পারে—এটা মনে রাখা এখন জরুরি; আর প্রশাসনের জন্য জরুরি—নজরদারি, শৃঙ্খলা আর বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ।

পাঠকের মতামত