প্রকাশিত: ১০/০৭/২০১৭ ৮:৫৫ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৫:০০ পিএম

প্রতারণার মামলায় এক আসামিকে আটকে রাখার চার দিন পর ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দলের বিরুদ্ধে।

রোববার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আবু সালেম মোহাম্মদ নোমানের আদালতে ওই আসামির পক্ষে জামিনের আবেদনের শুনানিতে এই অভিযোগ করেন তার আইনজীবী।

আসামি রানা আহমেদ জাহেদের আইনজীবী কাজী সানোয়ার আহমেদ লাভলু তার অভিযোগের সপক্ষে নানা প্রমাণও আদালতকে দিয়েছেন।

গত ৫ জুলাই পাহাড়তলী থানার এ কে খান গেইট এলাকা থেকে রানা (৩৮) এবং মো. তৈয়ব (২৭) নামে আরেকজনকে ৫০০টি ইয়াবাসহ গ্রেপ্তারের কথা জানায় গোয়েন্দা পুলিশ।

এরপর এসআই আবছার উদ্দিন রুবেল বাদী হয়ে পাহাড়তলী থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেন। পরদিন দুই আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে মাদকবিরোধী ওই অভিযানে ছিলেন এসআই আবছার উদ্দিন রুবেল ও পাপ্পু নামে এক কনস্টেবল।

রোববার রানার জামিন আবদনের শুনানিতে আইনজীবী সানোয়ার দাবি করেন, রানাকে ৫ জুলাই চট্টগ্রাম থেকে নয়, গত ২ জুলাই ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, রানাসহ ছয়জনকে আসামি করে নাসিরুল কবির মনির নামে এক ব্যক্তি হালিশহর থানায় একটি প্রতারণার মামলা করেছিলেন। তার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন এসআই রুবেল।

আইনজীবী সানোয়ার বলেন, গত ২২ জুন বাদী মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করলে আদালত তা গ্রহণ করেন এবং গোয়েন্দা পুলিশকে তা জানানোও হয়েছিল। কিন্তু এরপরও রানাকে আটক করা হয়।

তিনি বলেন, “২ জুলাই ঢাকা থেকে রানা ও মো. আজাদ নামে আরেকজনকে আটক করে এসআই আবছার উদ্দিনের রুবেল ও তার সঙ্গীরা। ৪ জুলাই তাদের চট্টগ্রামে এনে রাতে আজাদকে ছেড়ে দিলেও রানাকে রাতে কোতোয়ালি থানা হেফাজতে রাখা হয়। পরদিন বিকালে তাকে পুনরায় গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে এনে রাতে আবার কোতোয়ালি থানায় রাখা হয়।

“৬ জুলাই সকালে রানাকে গোয়েন্দা কার্যালয়ে এনে বিকালে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়,” বলেন আইনজীবী সানোয়ার।

রানার সঙ্গে ‘আটক’ আজাদকে ছাড়িয়ে নেওয়ার বিষয়ে কারা এসআই রুবেলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, তাও আদালতকে জানান এই আইনজীবী।

তিনি বলেন, “ডিবি হেফাজতে থাকার সময় রানা তার স্ত্রীর সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করেছেন। এছাড়াও আজাদকে ছেড়ে দেওয়ার পর রানাকে মারধর না করার জন্য এসআই রুবেল টাকা দাবি করে।

ঢাকা থেকে রানার ভাই সেই টাকা চট্টগ্রাম পাঠিয়েছেলেন দাবি করে আদালতে একটি রশিদও দাখিল করেন আইনজীবী সানোয়ার।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “উল্লেখিত সময়ের মধ্যে কোতোয়ালি, পাহাড়তলী থানা, গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয় ও এসএ পরিবহন কার্যালয়ের ভিডিও ফুটেজ এবং বিভিন্নজনের সঙ্গে পুলিশের ও গ্রেপ্তার রানার কথপোকথন ট্র্যাক করলেও তা স্পষ্ট হয়ে যাবে।”

আদালতে তিনি আসামিকে নিজেদের হেফাজতে রেখে ইয়াবা দিয়ে চালান দেওয়ার অভিযোগ করে তার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেন।

আদালত তা আমলে নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনারকে তদন্ত করে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান সানোয়ার।

এদিকে এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসআই রুবেল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আসামি রানাকে যেদিন গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেইদিনই থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

কখন গ্রেপ্তার করা হয়েছিল- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তা এজাহারেই লেখা আছে।”

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারে প্রধান উপদেষ্টার সহকারি প্রেস সচিব বর্তমান সরকারের সমালোচনা করুন মন খুলে

‘বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে মন খুলে সমালোচনা করা যাবে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনুস নিজেই ...