ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ২৬/০৩/২০২৫ ১০:৫৭ এএম

চট্টগ্রামের আলোচিত স্কুলছাত্রী তাসফিয়া আমিন হত্যা মামলায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। একইসাথে নগর পুলিশের (সিএমপি) উপ-কমিশনার (ডিসি) পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা দিয়ে মামলাটি পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো তদন্ত হতে যাচ্ছে চাঞ্চল্যকর এই মামলাটির। এর আগে, নগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) এবং পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনও (পিবিআই) এবং অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এই মামলার তদন্ত করে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ‘আত্মহত্যা’ উল্লেখ করেছিল। তবে তাসফিয়ার পরিবারের দাবি— তিন সংস্থার কেউই নিরপেক্ষ তদন্ত করেনি।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মুহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল এ আদেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পতেঙ্গা থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) মো. রহমত সিভয়েস২৪’কে বলেন, ‘তাসফিয়া হত্যা মামলায় অপরাধ তদন্ত বিভাগের দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে বাদীর নারাজি মঞ্জুর করেছেন আদালত। চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলা নগর পুলিশের উপ-কমিশনার পদমর্যাদার একজন দক্ষ অফিসার দ্বারা পুনঃতদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।’

KSRM
KSRM

তিনি বলেন, ‘কমিশনার মহোয়ের কাছে আদেশের ফরোয়ার্ডিং পাঠালে তিনি তদন্ত কর্মকর্তা নির্ধারণ করবেন।’

এর আগে, ১৩ মার্চ মামলার তৃতীয় তদন্তকারী সংস্থা সিআইডির চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আইনজীবীর মাধ্যমে নারাজি দাখিল করেন তাসফিয়ার বাবা মো. আমিন। কিন্তু ওইদিন বাদী আদালতে উপস্থিত না থাকায় ২৩ মার্চ শুনানির দিন ধার্য্য রাখেন। গত রবিবার বাদীর উপস্থিতিতে নারাজি আবেদনের শুনানি শেষে আজকে আদেশের দিন ধার্য্য রেখেছিলেন আদালত।

চট্টগ্রামের সানশাইন গ্রামার স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন তাসফিয়া আমিন। বাংলাদেশ এলিমেন্টারি স্কুলের ছাত্র আদনান মির্জার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তার। যেটি তাসফিয়ার পরিবার পছন্দ করতো না। এ জন্য তাকে বাসা থেকে বের হতে দেওয়া হতো না।

২০১৮ সালের ১ মে কাউকে না বলে বাসা থেকে বের হয়ে যায় তাসফিয়া আমিন। বন্ধু আদনান মির্জার সঙ্গে গোল পাহাড় মোড়ের চায়না গ্রিল রেস্টুরেন্টে যায় সে। সেখান থেকে সন্ধ্যা ৬ টা ৩৭ মিনিটে বের হয়ে একা সিএনজি অটোরিকশায় উঠে তাসফিয়া। এরপর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।

পরদিন অর্থাৎ ২ মে পতেঙ্গায় নেভাল একাডেমির কাছে কর্ণফুলী নদীর তীররক্ষা পাথরের ওপর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ৩ মে দুপুরে আদনান মির্জাকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের বিরুদ্ধে পতেঙ্গা থানায় হত্যা মামলা করেছিলেন নিহতের বাবা মোহাম্মদ আমিন। একই দিন সন্ধ্যায় নগরের মুরাদপুর থেকে তাসফিয়ার বন্ধু আদনান মির্জাকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।

সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়, তার শরীরে ১১টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। দুই চোখ মারাত্মকভাবে থেঁতলানো। ডান চোখের ভ্রু ক্ষতবিক্ষত। মৃত্যুর আগে নাক দিয়ে বের হয়েছে ফেনা। মূলত, এই আঘাতের চিহ্ন থেকেই তাসফিয়ার মৃত্যুর কারণ নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হয়।

সেই কারণ বের করতে না পারলেও ডিবি-পিবিআই ও সিআইডি—তিন সংস্থার প্রতিবেদনেই বলা হয়, প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে মা-বাবার শাসনের ভয়ে ঘটনার দিন বাসায় না গিয়ে কর্ণফুলী নদীর মোহনা এলাকায় যায় তাসফিয়া। পরে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে। সবশেষ গত ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে সিআইডি।

তাসফিয়ার মা নাঈমার দাবি—তিন সংস্থার কেউই নিরপেক্ষ তদন্ত করেনি। সবাই পানিতে ডুবে মারা গেছে বলছে। কিন্তু শরীরে নির্যাতনের কোনো ব্যাখ্যা কেউ দিতে পারছে না। সিভয়েস

পাঠকের মতামত

হ্নীলায় শিশু আফসি হত্যা: হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে টেকনাফে মানববন্ধন

টেকনাফের হ্নীলায় শিশু হুজাইফা নুসরাত আফসির হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার কার্যকর ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবীতে এক ...

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রাত মানেই সন্ত্রাস—‘ইয়ংস্টার’ গ্রুপের অঘোষিত রাজত্ব

কক্সবাজারের উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে স্বশস্ত্র ইয়াবা সন্ত্রাসীদের হামলায় স্কুল শিক্ষক ও তার আত্মীয় ...

কর্ণফুলীতে ইয়াবাসহ রোহিঙ্গা যুবক গ্রেফতার

চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে ইয়াবাসহ এক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে গ্রেফতার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে ...