উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৭/০২/২০২৫ ৭:১৩ পিএম , আপডেট: ০৬/০৩/২০২৫ ৫:২৮ পিএম

 

রাখাইনে শক্ত অবস্থানে থাকা আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের একটি পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে সরকার বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান। এই প্রথমবারের মতো সরকারের উচ্চমহল থেকে স্বীকার করা হলো যে, আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে এক কলোকিয়ামে তিনি বলেন, ‘আমার বেশিরভাগ কাজই প্রকাশ্যে বলার মতো নয়। দ্রুত অনেক ঘটনা ঘটছে এবং পরিস্থিতি প্রতিদিন পরিবর্তিত হচ্ছে। মানুষ মনে করে আরাকান আর্মির সঙ্গে আমাদের কোনও যোগাযোগ নেই। এর একটি কারণ হচ্ছে এটি আগে বলা হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘আরাকান আর্মি যখন রাখাইনে শক্তিশালী হচ্ছিল, আমরা বুঝতে পারছিলাম যে, তাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা করতে হবে। আরাকান আর্মি যখন তাদের ফ্ল্যাগ আমাদের সীমান্তে উত্তোলন করলো, সেদিন আমরা সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারলাম যে, এটি নতুন ব্যবস্থা এবং তাদেরকে আমাদের মোকাবিলা করতে হবে।’

তাদের সঙ্গে আলোচনার আগে আমরা তাদেরকে একটি বার্তা দিতে চেয়েছিলাম। যেহেতু তারা এখন রাখাইন দখল করে আছে, সেজন্য তাদেরকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে চলতে হবে বলে তিনি জানান।

খলিলুর রহমান বলেন, ‘তাদের সঙ্গে আলোচনার আগে জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত জুলিয়া বিশপের সঙ্গে আমার বৈঠক হয়। আমরা জাতিসংঘ মহাসচিবের পক্ষ থেকে আরাকান আর্মির জন্য একটি বিবৃতির খসড়া তৈরি করি। সেখানে বলা ছিল যে, আরাকান আর্মিকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘খুব অল্প সময়ের মধ্যে জাতিসংঘ মিয়ানমারবিষয়ক দূত, জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার প্রধান এবং জাতিসংঘ মহাসচিবের জন্য বাংলাদেশ কোনও আকস্মিক ঘটনা নয়। এটির পেছনে অনেক কিছু করতে হয়েছে।’

আরাকান আর্মি রাখাইনের প্রায় ৯০ শতাংশ দখল করে নিয়েছে। আমি রিপোর্ট পেয়েছি যে, সিতওয়ে অবরুদ্ধ অবস্থায় আছে এবং সেখানে হামলা হচ্ছে। রাখাইনের মোট জনসংখ্যা হচ্ছে— শুধুমাত্র ঢাকা শহরে যারা বাস করে তাদের ১৬ শতাংশ। আপনারা বুঝতে পারেন যে, দুই জায়গার মধ্যে ভারসাম্যে কত দূরত্ব। সেটি আরাকান আর্মিও জানে। কাজেই আমাদের শক্তি প্রদর্শনের প্রযোজন নেই বলে তিনি জানান।

নিজেকে একজন বাস্তববাদী হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন, ‘সার্বভৌম দেশ হিসেবে যাদের সঙ্গে কাজ করার দরকার, বাংলাদেশ তাদের সঙ্গে কাজ করবে।’ তিনি বলেন, আমরা আরাকান আর্মির কাছে পরিষ্কার করেছি যে, সম্মানের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে হবে এবং তারা আমাদের জানিয়েছে— তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে যখন রাখাইন পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে। এছাড়া বাংলাদেশ ছাড়া রাখাইনের অর্থনৈতিক রুট নেই, ভারতের মধ্য দিয়ে তাদের কর্মকাণ্ড চলমান রাখা কঠিন।’

তিনি জানান, রাখাইনের রাজিনৈতিক, প্রশাসনিক ও নিরাপত্তা খাতে রোহিঙ্গাদের অন্তর্ভুক্তি হলে সবাই বার্তা পাবে যে, রাখাইনে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ তৈরি হয়েছে

পাঠকের মতামত

ড. ইউনূস ও গর্ডন ব্রাউনের ফোনালাপ অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষার সুযোগ বাড়াতে গুরুত্ব

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউনের সঙ্গে টেলিফোনে ...

রোজার আগে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন, ইউনূস-তারেক বৈঠকে সিদ্ধান্ত

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী ...

রোহিঙ্গারা সবকিছু বিনামূল্যে পাচ্ছে, আর স্থানীয়রা সংগ্রাম করে জীবন চালিয়ে যাচ্ছে

ধবার লন্ডনের প্রভাবশালী নীতিগত গবেষণা প্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউস আয়োজিত এক সংলাপে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ড. ...

তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছে: সালাহউদ্দিন আহমদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল মানে গণতন্ত্রের ঠিকানা। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত ...