
বিশ্লেষকদের মতে, জাতিগত সংঘাত ও দারিদ্র্য-জর্জরিত অঞ্চল রাখাইনে কেবল এই রোহিঙ্গারাই একমাত্র নিপীড়িত জাতিগোষ্ঠী নয়। রাজ্যটিতে বসবাসরত বৌদ্ধসহ (আরাকান জাতিভুক্ত) সেখানকার বিভিন্ন জাতির লোকজন দীর্ঘদিন যাবত সেনাপ্রাধান্যশীল কেন্দ্রীয় সরকারের নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।
যদিও সেক্ষেত্রে কেবল রোহিঙ্গা ছাড়া বাদবাকি সব জনগোষ্ঠীর স্বীকৃতি আদাইয়ের প্রশ্নকে সামনে রেখে নিজেদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে আরাকান আর্মি। এতে আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রতিষ্ঠার পক্ষে এমন সরব ভূমিকা বিশেষত রাখাইনের বৌদ্ধদের মধ্যে তাদের গ্রহণযোগ্যতার ভিত্তি আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
সামরিক মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাও মিন তুন বলেন, ‘বর্তমানে শক্তিশালী আরাকান আর্মিকে মোকাবিলায় আমাদের আরও বাড়তি প্রস্তুতি নিতে হবে। তাদের কাছে এখন রিমোট কন্ট্রোল নিয়ন্ত্রিত বোমা রয়েছে। যা দিয়ে মোবাইল কিংবা ওয়াকি-টকির মাধ্যমেও বিধ্বংসী বিস্ফোরণ ঘটানো সম্ভব।’
এ দিকে সম্প্রতি মিয়ানমারকে সতর্ক করে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানিয়েছিল, ব্লুটুথ ও ওয়াইফাই ব্যবহারের মাধ্যমে মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে স্থলমাইন বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে আরাকান আর্মি। যে কারণে ভারত বর্তমানে রাখাইনের সিতেতে তাদের উন্নয়ন প্রকল্প কালাদান প্রজেক্ট নিয়ে এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটিকে এক বিরাট হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছে। গোয়েন্দাদের দাবি, ভারতের মিজোরাম রাজ্যেও গোষ্ঠীটি পুরোপুরি সক্রিয়।
এসব বিষয়ে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর এই মুখপাত্র আরও বলেন, ‘আমাদের সেনাবাহিনী বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে; যাদের সহায়তায় আমাদের পুলিশ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সর্বদা প্রস্তুত।’
তার দাবি, ‘বর্তমানে মিয়ানমারের কাছেও আরাকান আর্মিকে মোকাবিলা করার জন্য যথেষ্ট প্রযুক্তি আছে। তবে কেবল এসব প্রযুক্তির ওপর শতভাগ নির্ভর করা যাবে না।’
অপর দিকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে আরাকান আর্মির বিস্তর সংযোগ রয়েছে বলে দীর্ঘদিন যাবত অভিযোগ করে আসছে মিয়ানমারের সেনা সমর্থিত সু চি সরকার। তবে গোষ্ঠীটির মুখপাত্র খাইং থুকা বলেছেন, ‘অভিযোগটি সম্পূর্ণই ভিত্তিহীন এবং আমাদের কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগসাজশ নেই। কেননা আমরা অঞ্চলটিতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছি।’
পাঠকের মতামত