উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭/১২/২০২২ ৭:৩৮ এএম

চলতি বছর বিবিসির প্রেরণাদায়ী ও প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন বাংলাদেশের সানজিদা ইসলাম ছোঁয়া। বাল্যবিবাহ নিয়ে কাজ করা সানজিদার তালিকায় স্থান ২১তম।

বিবিসি বাংলাদেশি ছোঁয়া সম্পর্কে জানায়, পড়ালেখা করা অবস্থায় বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে তাঁর ভূমিকা অনন্য। নান্দাইল সদরে অবস্থিত নান্দাইল পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ে পড়া অবস্থায় সাত সহপাঠী নিয়ে তিনি গঠন করেছিলেন ‘ঘাসফড়িং’ নামের একটি সংগঠন। সংগঠনের বাইরেও তিনি নিজে প্রায় ৫০টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করেন। এই কাজের স্বীকৃতি হিসেবে আন্দোলনকর্মী ও প্রচারণা ক্যাটাগরিতে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন তিনি।
সানজিদা ইসলাম ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও ইউনিয়নের ঝাউগড়া গ্রামের মো. আমিনুল ইসলাম ভুঁইয়া সোহেলের মেয়ে। তিনি বর্তমানে কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।

বিবিসির এই তালিকায় অন্যান্যের মধ্যে স্থান পেয়েছেন কাতারের দোহাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার ফিলিস্তিনি সাংবাদিক প্রয়াত শিরিন আবু আকলেহ। ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে এ বছর তিনি নিহত হন। তালিকায় আরো আছেন সিরিয়ার শারীরিক প্রতিবন্ধী দৌড়বিদ দিমা আক্তার, ইরানি নায়িকা জার আমির ইব্রাহিমি, আফগানিস্তানের শিক্ষার্থী ফাতিমা আমিরি, মিয়ানমারের চিকিৎসক আই নাইন তো, রাশিয়ার সাংবাদিক তাইসিয়া বেকবোলাটোভা ও ভারতের বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াংকা চোপড়া।

গতকাল মঙ্গলবার সানজিদা
ইসলাম ছোঁয়ার গ্রামের বাড়িতে অনেক মানুষ গিয়ে ভিড় জমায়। অনেকেই তাঁকে অভিনন্দন জানায়। এ খবর পাওয়ার পর ছোঁয়া বলেন, ‘ভালো কাজের স্বীকৃতি পেলে সবারই ভালো লাগে। কিন্তু এত বড় স্বীকৃতি পাব তা বিশ্বাস হচ্ছে না।’ ছোঁয়া আরো বলেন, ‘আজ (গতকাল) সকালে একটি নম্বর থেকে বিবিসির পরিচয় দিয়ে বলা হয় আমি বিশ্বের ১০০ নারীর তালিকায় আছি। এ খবর শুনে অবাক হয়ে যাই। এই তালিকা কী, কেন—জানতে ইচ্ছা হলেও আমি তখন বলতে পারছিলাম না। বাড়ির বাইরে থাকা মা-বাবাকে ফোন করে বিষয়টি জানাই। তাঁরা তখন বিষয়টি আমলে নেননি। এরপর আমার মোবাইল ফোনে একটি লিংক পাঠানো হয়। এটা দেখে আমি বিস্মিত হয়েছি। আমার নামের আগে আছে বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াংকা চোপড়ার নাম। এটা অবিশ্বাস্য।’

ছোঁয়া জানান, তাঁর মা লিজা আক্তারের বাল্যবিবাহ হয়েছিল। বাল্যবিবাহের কুফল তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন। প্রায় সময়ই তাঁর মা অসুস্থ থাকতেন। তিনি যখন বিদ্যালয়ে পড়েন তখনো দেখেন তাঁর সহপাঠীরা মাঝে মধ্যে বাল্যবিবাহের শিকার হচ্ছে। তখন নিজেই সহপাঠীদের নিয়ে গঠন করেন ওই সংগঠন। এককভাবে অনেক সময় সম্ভব না হলে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। সহযোগিতা করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকরাও।

ছোঁয়ার মা লিজা আক্তার বলেন, ‘মেয়ের এই কর্মকাণ্ড নিয়ে অনেক সময় হুমকি-ধমকির মধ্যেও থাকতে হয়েছে। কারণ একটি বাল্যবিবাহ বন্ধের পর এই সমাজে এখনো অনেকেই এটাকে ভালো চোখে দেখে না। তার পরও নিজের জীবনের বাস্তব অবস্থা চিন্তা করে মেয়েকেই উৎসাহ দিতাম বাল্যবিবাহ বন্ধে কাজ করার। আর সে তা বীরদর্পেই করেছে। এ জন্যই তার এ সাফল্য এসেছে।

পাঠকের মতামত

খেলাভিত্তিক শিক্ষায় ব্র্যাকের তথ্য বিনিময় অনুষ্ঠান

শিশুদের খেলাভিত্তিক শেখা, অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা ও মনোসামাজিক বিকাশ নিশ্চিতে ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো ...

১২ ফেব্রুয়ারি ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত অনুমতি ছাড়া ওয়াজ মাহফিল নিষিদ্ধ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ধর্মীয় প্রচার কার্যক্রমে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। ...