

উখিয়া উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতায় ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি বেড়ে চলেছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, ইন্সপেক্টর আবুল বাসার ও তার ঘনিষ্ঠ দালাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে মোটা অঙ্কের বিনিময়ে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হচ্ছে।
বন বিভাগের তথ্যমতে, সরকারি বনভূমিতে অনুমতি ছাড়া দুই হাজারের বেশি সংযোগ দেওয়া হয়েছে। হরিণমারা, দৌছড়ি, মধুরছড়া, থাইংখালী, পালংখালী মরিচ্যা ও রত্নাপালং এলাকায় এসব সংযোগের কারণে বনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং বন্যপ্রাণীর প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। গত কয়েক বছরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অন্তত ছয়টি হাতি মারা গেছে, যার মধ্যে চলতি বছর দুটি।
অবৈধ সংযোগের কারণে উপজেলার ৩৩ কেভি লাইনে বারবার বিপর্যয় ঘটছে। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে ৩০ বার ফল্ট ঘটেছে, ফলে উপজেলার বড় অংশে প্রতিদিন ৮–১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলছে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তত্ত্বাবধানে গত দেড় বছরে বকেয়া বিলের পরিমাণ প্রায় ১৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা, যার মধ্যে সরকারি দপ্তর, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও প্রভাবশালীর নাম রয়েছে। নতুন সংযোগ নিতে গেলে সাধারণ গ্রাহকরা অতিরিক্ত অর্থ দিতে বাধ্য হচ্ছেন। অভিযোগ উঠেছে, ইন্সপেক্টর আবুল বাসার সংযোগ ফি’র চেয়ে ৫–১০ হাজার টাকা বেশি ঘুষ আদায় করছেন। সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন ব্লকে ১ হাজার ৫শ বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, অনেক ক্ষেত্রে বন্যপ্রাণী বিদ্যুৎ ফাঁদে মারা যাচ্ছে, যা পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। কুতুপালংয়ের মন্নান বলেন, “সরকারি অনুমতি না থাকলেও মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে সংযোগ দেওয়া হয়। আমাদের থেকে অনৈতিক সুবিধা না পাওয়ায় মিটার আসেনি।”
উপজেলা রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীর শাহেদুল ইসলাম রোমান চৌধুরী বলেন, “অবৈধ সংযোগ দ্রুত বন্ধ করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।”
উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান জানান, বনভূমিতে দেওয়া অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বারবার চিঠি দিয়েছেন, কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি। অপরদিকে, ডিজিএম কাইজার নূর এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমরা নিয়ম মেনে সংযোগ দেই। পুরোনো লাইনগুলো রয়ে গেছে। একটি যৌথ অভিযান চালিয়ে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।

পাঠকের মতামত