ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ২৭/০২/২০২৪ ৯:২৩ এএম

সহিংসতায় বিধ্বস্ত পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোতে এবার মসজিদে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে বহু মুসল্লি নিহত হয়েছেন। তারা ফজরের নামাজ পড়তে মসজিদে উপস্থিত হয়েছিলেন এবং তখনই হওয়া এই হামলায় প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে।

এর আগে দেশটির একটি ক্যাথলিক গির্জায় হামলার ঘটনায় কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গির্জায় হামলা চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার একই দিনে একটি মসজিদে কয়েক ডজন লোককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে বুরকিনা ফাসোর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। ভোরে নামাজের সময় বন্দুকধারীরা আফ্রিকার এই দেশটির নাতিয়াবোয়ানি শহরের ওই মসজিদটি ঘিরে ফেলে।

স্থানীয় এক বাসিন্দা বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘নিহতরা সবাই মুসলিম, তাদের বেশিরভাগই পুরুষ।’

বুরকিনা ফাসোর এক তৃতীয়াংশেরও বেশি এলাকা বর্তমানে ইসলামপন্থি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। হামলাকারীরা ইসলামপন্থি যোদ্ধা বলে সন্দেহ করা হচ্ছে, তারা একই দিনে স্থানীয়ভাবে অবস্থানরত সৈন্য এবং মিলিশিয়াকেও লক্ষ্যবস্তু করে।

(ফরাসি ভাষায়) স্থানীয় মিডিয়া জানিয়েছে, মোটরবাইকে করে এবং মেশিনগান নিয়ে শত শত জঙ্গি মসজিদটিতে আক্রমণ চালায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় অযাচাইকৃত বিভিন্ন প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, মসজিদে হামলায় নিহতের সংখ্যা কর্মকর্তাদের দেওয়া সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে।

বিবিসি বলছে, বুনকিনা ফাসোর নাতিয়াবোয়ানি শহরটি দেশটির অশান্ত পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত এবং এই অঞ্চলে একাধিক সশস্ত্র গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।

পৃথক প্রতিবেদনে আল জাজিরা জানিয়েছে, বুরকিনা ফাসোর পূর্বাঞ্চলে একটি মসজিদে হামলায় কয়েক ডজন মুসলমান নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় ও নিরাপত্তা সূত্র বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে।

সোমবার একটি নিরাপত্তা সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, ‘রোববার ভোর ৫টার দিকে সশস্ত্র ব্যক্তিরা নাতিয়াবোনির একটি মসজিদে হামলা চালায়, যার ফলে কয়েক ডজন লোক নিহত হয়।’

একজন স্থানীয় বাসিন্দা টেলিফোনে বলেছেন, ‘নিহতরা সবাই মুসলমান, তাদের বেশিরভাগই পুরুষ, তারা ভোরে নামাজের জন্য মসজিদে এসেছিল।’

অন্য একটি স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, ‘সন্ত্রাসীরা খুব ভোরে শহরে প্রবেশ করে। তারা মসজিদটি ঘেরাও করে এবং মুসল্লিদের ওপর গুলি চালায়। এসব মুসল্লি সেখানে দিনের প্রথম নামাজের জন্য জড়ো হয়েছিল। তাদের মধ্যেই একজন গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় নেতাসহ বেশ কয়েকজনকে গুলি করা হয়।’

ডিফেন্স অব ফাদারল্যান্ড (ভিডিপি) নামে একটি বেসামরিক বাহিনী সামরিক বাহিনীকে সহায়তা করে থাকে। এই বাহিনীর সৈন্য এবং স্বেচ্ছাসেবকদের ওপরও হামলা করা হয়েছে বলে সূত্রটি জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, বুরকিনা ফাসোর এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি এলাকা বর্তমানে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে। দেশটির কর্তৃপক্ষ আল-কায়েদা এবং ইসলামিক স্টেটের সাথে যুক্ত ইসলামপন্থি গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এসব গোষ্ঠী সাহেল অঞ্চলের বিশাল অংশ দখল করেছে এবং লাখ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে।

এছাড়া গত তিন বছরে দেশটির মসজিদ ও গির্জাগুলোকে বারবারই লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে এবং বহু মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।

এই মাসের শুরুতে বুরকিনা ফাসোর সামরিক-সমর্থিত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম ট্রাওরে বলেছিলেন, প্রয়োজনে পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটিতে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য রাশিয়ান সেনা মোতায়েন করা হতে পারে।

পাঠকের মতামত

বৈশ্বিক অনুদান কমায় রোহিঙ্গা শিশুদের পড়ালেখার ক্ষতি হচ্ছে

বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে শিশু শিক্ষার পরিস্থিতি আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান ...

যে কারনে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত ট্রাম্প

এবার ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। পাবলিকান আইনপ্রণেতা ...

ট্রাম্পের অনুরোধে ইরানকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করিয়েছে কাতার

ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে তেহরানকে রাজি করাতে মধ্যস্থতা করেছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ...