
আহমদ গিয়াস, কক্সবাজার::
করোনা সতর্কতায় কক্সবাজারের পর্যটন কেন্দ্রগুলো নিষিদ্ধ হওয়ায় হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিক, দোকানদার, পরিবহণসহ পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীরা পড়েছেন মারাত্মক লোকসানের মুখে। করোনার কারণে কক্সবাজার পর্যটন খাতে এখন দৈনিক ১০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হচ্ছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। তবে সরকারি সিদ্ধান্তে খুশি অধিকাংশ স্থানীয় বাসিন্দা।
কক্সবাজারের পর্যটন কেন্দ্রগুলো গত বুধবার বিকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। বৃহস্পতিবার বিকালে সেন্টমার্টিনগামী জাহাজও বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর গতকাল শুক্রবার সব ধরনের সভা-সমাবেশ, ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়ানুষ্ঠানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন জেলা প্রশাসক। শুক্রবার করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির জরুরি সভায় আগের নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা হয়। পাশাপাশি বিদেশ ফেরত ব্যক্তি ও তাদের সংস্পর্শে আসা সকলকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকারও নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে করোনা নির্দেশনা অমান্য করায় ৬ জন প্রবাসীকে জরিমানা করা হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন। তবে কক্সবাজার জেলায় এখনও করোনা সন্দিগ্ধ কাউকে হসপিটাল কোয়েরেন্টাইনে কিংবা আইসোলেশনে পাঠানো হয়নি বলে জানান তিনি।
বুধবার কক্সবাজার সৈকত থেকে ব্যবসায়ী ও পর্যটকদের তুলে দেওয়ার পর থেকে পর্যটক শূন্য হতে থাকে কক্সবাজার। গতকাল শুক্রবার সরকারি ছুটির দিনে কর্মচঞ্চলহীন ছিল কক্সবাজারের পর্যটন এলাকা। রাস্তাঘাটে গাড়িও কম। করোনা সতর্কতায় ইতোমধ্যে শহরের বেশিরভাগ অধিবাসী বাইরে চলাফেরা কমিয়ে দিয়েছেন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যেতে চাচ্ছেন না সচেতন লোকজন। রাস্তাঘাটে ট্রাফিক জ্যামও তেমন নেই। এতে শহরের অধিকাংশ বাসিন্দাই খুশি।
শহরের টেকপাড়া এলাকার বাসিন্দা মাঈনুদ্দিন শাহেদ ও সোমা বলেন, করোনা সতর্কতায় আমরা বেশ ক’দিন ধরে এমনিতে সারাক্ষণ ঘরে থাকছি। কিন্তু জরুরি প্রয়োজনে বের হতে গিয়ে শুক্রবার শহরের রাস্তাগুলো অনেক স্বাচ্ছন্দ্য লেগেছে। তবে সরকারি এ সিদ্ধান্তে নাখোশ হোটেল মালিকরা। কক্সবাজার জেলার ৭ শতাধিক হোটেল মালিকের সংগঠন ফেডারেশন অব কক্সবাজার ট্যুরিজম এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম সিকদার বলেন, করোনা প্রতিরোধে প্রশাসনের সিদ্ধান্তের কারণে কক্সবাজার এখন পর্যটক শূন্য। এ কারণে হোটেল মালিকদের দৈনিক অন্তত ২ কোটি টাকা, পরিবহণ মালিকদের ৩ থেকে ৪ কোটি টাকা, দোকানসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীদের আরো ৪-৫ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে।
একই অভিমত কক্সবাজার হোটেল মোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি নুরুল আবছার ও ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টোয়াক বাংলাদেশ) এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এসএম কিবরিয়া খানের। তাদের মতে, এ কারণে অন্তত ৪০ হাজার লোক বেকার হয়ে পড়েছে। পরোক্ষভাবে আরো ২ লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কারণ তারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পর্যটন শিল্পের উপর নির্ভরশীল।
পাঠকের মতামত