প্রকাশিত: ১৮/০২/২০১৭ ৬:৫৫ পিএম

সরওয়ার আলম শাহীন,উখিয়া নিউজ ডটকম;;
পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারের তৈরি মরণঘাতী ইয়াবার বিস্তার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। শহরের অভিজাত আবাসিক এলাকা থেকে শুরু করে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়,বানিজ্যিক এলাকা সহ পাড়া মহল্লায় হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে ইয়াবা। উখিয়া সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে প্রতিদিনই এদেশে ঢুকছে ইয়াবার চালান। প্রায় সময় ইয়াবা আটকের ঘটনা ঘটলেও ইয়াবার চালান আসা বন্ধ হয়নি বরং প্রায় প্রতিদিনই এর সাথে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন সদস্য। উখিয়া উপজেলার আনাচে-কানাচে ইয়াবা পাচারে নিয়োজিত হয়ে পড়েছে নারী পুরুষ,যুবক,যুবতী থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীরাও। সিন্ডিকেটের সদস্য হওয়ার মাধ্যমে এসব পাচারকারীরা কম সময়ে কোটিপতি হওয়ার নেশায় পড়েছে। ফলে উখিয়ায় অপ্রতিরোধ্য হয়ে পড়েছে ইয়াবা বানিজ্য। শুধুমাত্র উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২০ টি ইয়াবা সিন্ডিকেট তৎপর রয়েছে মানণঘাতী এ ইয়াবা ব্যবসায়। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ম্যানেজের মাধ্যমে এসব সিন্ডিকেট বেপরোয়া ভাবে প্রসাশনের নাকের নগার উপর দিয়ে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে সোর্সের দেওয়া তথ্যের ভিক্তিতে গুটিকয়েক ইয়াবা উদ্ধারের ঘটলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে সিন্ডিকেটের সদস্যরা। শুধুমাত্র ইয়াবা বাহককে আটকের মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসন তাদের দ্বায়িত্ব শেষ করায় এর সাথে জড়িত গড়ফাদার বা সিন্ডিকেটের ব্যাপারে কোন তথ্য উদ্ধার করা যাচ্ছেনা বলে স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ।
জানা গেছে,উখিয়া সীমান্তের বালুখালী, শিয়াল্লাপাড়া, বেতবুনিয়া, দরগাবিল, ডেইলপাড়া ডিগিলিয়া,বরইতলী, রহমতের বিল,ধামনখালী সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন ইয়াবার চালান এসে সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রিত নির্ধারিত স্থানে জমা হয়। পরবর্তিতে সিন্ডিকেট সদস্যরা এসব ইয়াবা সড়ক পথে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন বড় বড় পাইকারী ব্যবসায়ীদের হাতে পৌঁছে দেয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, দেশের আর্ন্তজাতিক চোরাচালান সিন্ডিকেট এখন অস্ত্র ব্যবসার পরিবর্তে ইয়াবা ব্যবসার দিকে ঝুঁকে পড়েছে। এ সিন্ডিকেটের মূল হোতাদের নিয়ন্ত্রনে গড়ে উঠেছে উখিয়ার প্রায় ২০ টি সিন্ডিকেট। চিন্তিত ইয়াবা গডফাদারদের নিয়ে গড়া এসব সিন্ডিকেট সদস্যরা স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজের মাধ্যমে ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে অনেকেই এখন নব্য কোটিপতি। সিন্ডিকেটের তরুন সদস্যদের অধিকাংশই আবার দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা, প্রভাবশালী ও ব্যবসায়ীদের আশির্বাদপুষ্ট হয়ে এ ব্যবসায় নেমেছে। এসব তরুনদের অনুসরণ করে প্রায় প্রতিদিনই সিন্ডিকেটের বহরে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন মুখ। এসব চিন্থিত সিন্ডিকেটের মাঝে যাদের নাম পাওয়া গেছে তাদের মধ্যে রয়েছেন বালুখালীর এনামুল হকের নেতৃত্ব বালুখালী সিন্ডিকেট, বিডিআর দোভাসী সাহাব উদ্দিনের নেতৃত্বে ঘুমধুম সিন্ডিকেট, ইমাম হোসেনের নেতৃত্বে জলপাইতলী সিন্ডিকেট, নুরুল আলম পুতিয়া, আবদুর রহমান ও আবদুর রহিমের নেতৃত্বে বালুখালী ঘোনারপাড়া সিন্ডিকেট, বাবুল,উত্তম ও ইসলামের নেতৃত্বে ঘিলাতলী সিন্ডিকেট, আতা উল্লার নেতৃত্বে সদর সিন্ডিকেট, বাবুলের নেতৃত্বে হিজলিয়া সিন্ডিকেট, আলী আহামদ, জাহাঙ্গীর আলম ও নুরুল আলমের নেতৃত্বে ভালুকিয়া সিন্ডিকেট, আকতারের নেতৃত্বে সিকদার বিল সিন্ডিকেট, আবদুল্লা,হারুন, রহমান ও লালুর নেতৃত্বে ডিগিলিয়া সিন্ডিকেট অন্যতম । এর বাইরেও সোনারপাড়া, থাইংখালী, জাদিমুরা, হলদিয়া পাতাবাড়ি,কুতুপালং সহ বিভিন্ন জায়গায় এলাকা ভিক্তিক সিন্ডিকেট করে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে চিন্থিত পাচারকারীচত্রু। এদিকে উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ বহিরাগত ছোট ছোট ঝুপড়ি ঘরে কুতুপালং ক্যাম্প পুলিশের উপস্থিতিতে চলছে মাদক বেচাকেনা। এখানে মূলত বিদেশি মদ,হেরোইন ,গাজা,ইয়াবা ও ফেনসিডিল বেচাকেনা হয়। সোনারপাড়া, কোটবাজার ও হ্নীলা থেকে বিকালের পর থেকে সারারাত কুতুপালং এলাকায় কয়েকশ মোটরসাইকেলে আসে উঠতি বয়সের যুবকরা। ১১ টি স্পটে দিনে-রাতে সমানভাবে গাঁজা, হেরোইন ও ইয়াবা ও মদ বিক্রি হয় । এর আশপাশে উপস্থিত থাকে ক্যাম্প পুলিশ। জানা গেছে, এ ক্যাম্পসহ বহিরাগত বস্তির রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৫০০ জনের বেশি লোক মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এ মাদক বেচাকেনার মধ্যে বেশিরভাগই নারী। মাদক অধিদফতরের কর্তা এবং কুতুপালং ক্যাম্প পুলিশ তাদের কাছ থেকে নিয়মিত টাকা পায় বলে নির্বি্েগ্নই চলে এ ব্যবসা। মাঝেমধ্যে কারও সঙ্গে টাকা লেনদেন নিয়ে ঝামেলা হলেই শুধু তাকে আটক করা হয়। এ ব্যাপারে উখিয়া টেকনাফের সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) ছাইলাউ মারমার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সাথে পুলিশের সম্পর্ক থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পুলিশ সমসময় তৎপর রয়েছে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারে। কিন্ত সুনিদ্ধিষ্ট তথ্য ছাড়া ইয়াবা আটক করা কঠিন। এতে নিরপরাধ জনগনের হনরানির আশংকা। তবুও পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারে দুর্ঘটনার পর ট্রেন আটকে বিক্ষোভ, তদন্ত কমিটি গঠন

কক্সবাজারের রামুতে ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশার পাঁচজন যাত্রী নিহত হওয়ার ঘটনায় কক্সবাজারমুখী পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেন আটকে ...

ইউএনওর ‘স্বাক্ষর জাল করে নিয়োগ’, পদ হারালেন জামায়াত নেতা

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা মডেল কলেজে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং উপজেলা জামায়াতের ...

জামিন নামঞ্জুর,ঘুমধুমের ইউপি চেয়ারম্যান কারাগারে

চট্টগ্রামের একটি রাজনৈতিক হত্যা মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করেন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ...

বিসিআরসি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড- ২০২৫ এ ভূষিত হলেন পুলিশ সুপার মো: নাইমুল হক পিপিএম

পর্যটন খাতের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য পুলিশ সুপার জনাব মোঃ নাইমুল হক পিপিএম ময়মনসিংহ ...