হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া নিউজ ডটকম
প্রকাশিত: ১৬/০৯/২০২৩ ৯:৪১ এএম , আপডেট: ১৬/০৯/২০২৩ ৯:৫৯ এএম

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে দিন দিন মাদকের ব্যবহার বাড়ছে।মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর সেই অনুযায়ী মাদক নিয়ন্ত্রণে দেখাতে পারেনি তাদের বড় ধরনের অভিযান। উখিয়া থানা পুলিশের বর্তমান অফিসার ইনচার্জ শেখ মোহাম্মদ আলী কক্সবাজারে ডিবি পুলিশের দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে একটি চৌকস টিম ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি এ যাবত কালের সর্ববৃহৎ ইয়াবার চালান (১৪ লক্ষ পিস) উদ্ধার ও দুই জন ইয়াবা ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছিলেন। সেই সময়ে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ার ফারুকের বাড়ি থেকে ১ কোটি ৭০ লাখ ৬৩ হাজার টাকাও উদ্ধার করা হয়। কক্সবাজার জেলা পুলিশের মতে, পুলিশের অভিযানে ইয়াবার বৃহৎ চালান আটকের ঘটনা এটি।

কক্সবাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই সারা দেশে ইয়াবার আগ্রাসন নিয়ন্ত্রণ সম্ভব

দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে নতুন নতুন মাদক আইস, এলএসডি, ক্রিষ্টাল মেথ ও ইয়াবা শনাক্ত ও উদ্ধার করা হলেও বেশিরভাগ সময়ই মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। উখিয়া-টেকনাফের তালিকাভুক্ত শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ীরা সড়ক পথের পাশাপাশি আকাশ পথ ও নৌপথ নিয়ন্ত্রণ করেন। বড় চালান আসে সাগর পথে। মিয়ানমার থেকে নদী পথে আসে ইয়াবা। ইয়াবা কারবারীদের সাথে বড় বড় নেতার যোগসাজশ থাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনেকটা এগুচ্ছে কচ্ছপ গতিতে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৪টি সংস্থা মাদক পাচার ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের তালিকা আপডেটের কাজ করছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রতি মাসে মাদকের ব্যবহার ও নিয়ন্ত্রণকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, পুলিশ সদর দপ্তর ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সুস্পষ্টভাবে বলেন, কক্সবাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে সারা দেশের ইয়াবার আগ্রাসন নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ দাংগরপাড়া এলাকার লেলু মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ শাহ। মাছ ধরার কাজ করেন একই এলাকার মন্জুর মাঝির ট্রলারে। তাকেই মিয়ানমারে বন্ধক রেখে আনা হয় ৫ লাখ ইয়াবার একটি বড় চালান। ঘটনা এখানেই শেষ নয়। সপ্তাহ পার হওয়ার পর টাকা পরিশোধ না করায় ওই যুবকের কপালে নেমে এসেছে ভয়াবহ নির্যাতন। এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, এক দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করলে খুন করারও হুমকি দেয়া হচ্ছে মিয়ানমারে আটক থাকা যুবককে। পরে জমি বন্ধক রেখে দেড় লাখ টাকা দিয়ে মুক্তি পান ওই যুবক। শুধু এ ঘটনায় নয়, এ ধরনের ঘটনা এখন অহরহ ঘটছে টেকনাফে। আইনশৃঙখলা বাহিনীর কড়া নজরদারির কারণে ইয়াবা পাচারে পেশাদার জেলেদের বেছে নেয়া হচ্ছে। উখিয়া রাজাপালং ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা গফুর মিয়া চৌধুরী বলেন, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের কাছে জিম্মি কক্সবাজার উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্প। এসব অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, খুন, নারী নির্যাতন ও ইয়াবা পাচারের অভিযোগ রয়েছে। এসব রোহিঙ্গাদের সাথে স্থানীয় ইয়াবা কারবারির হাত রয়েছে। উখিয়ায় হঠাৎ বড় লোক হয়ে যাওয়া যাদের অট্রালিকা বাড়ি ও গাড়ির মালিক হয়েছেন তাদের আয়ের উৎস্য খতিয়ে দেখলে আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে। কক্সবাজার-৪ উখিয়া-টেকনাফ আসন থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশি বীর মুক্তিযোদ্ধা জাফর আলম চৌধুরী বলেন, ইয়াবা মাদক যুব সমাজকে একেবারেই ধ্বংস করে ফেলেছে। উখিয়া ও টেকনাফে ইয়াবা মাদকে আসক্ত ছেলে তার বাবাকে হত্যা করেছে। ১৯৯৬ সালের পর থেকে উখিয়া-টেকনাফে ইয়াবা মাদকের বিস্তার ঘটে। এখন ইয়াবা মাদকের পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। উখিয়া-টেকনাফ তথা পুরো কক্সবাজার জেলার মানুষ আতঙ্কে আছে।

পাঠকের মতামত

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর সরকারি লাইসেন্স নেই, তদন্ত টিমের পরিদর্শন

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা উখিয়ায় ১৫টি ক্লিনিক হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার চলছে অনুমতি বিহীন। সরকারিভাবে কোন ...

ভূয়া ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা, পালংখালী তাজমান হাসপাতালসহ চার প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

উখিয়ায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে চার মামলায় ২লাখ ৫৫হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে উপজেলা প্রশাসন। ...

উখিয়ায় র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণ, ইউনিফর্ম, অস্ত্র-গুলি ও হাতকড়াসহ আটক ১

কক্সবাজারের উখিয়ায় র‌্যাব পরিচয়ে রোহিঙ্গা যুবককে অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা এবং প্রতারণার অভিযোগে একটি সংঘবদ্ধ ...