প্রকাশিত: ১০/০৯/২০১৯ ১০:০৯ এএম

মুহিববুল্লাহ মুহিব::
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা নতুন রোহিঙ্গারা এখন পাসপোর্ট আর জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আর এ কাজে সহযোগিতার অভিযোগ কক্সবাজার জেলার জনপ্রতিনিধি ও কিছু দালালের বিরুদ্ধে।

মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে পাসপোর্ট, এনআইডি ও জন্মসনদ করে দেওয়া হচ্ছে এমন অভিযোগও রয়েছে। এমনকি পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে রোহিঙ্গারা ইউপির ঠিকানা ব্যবহার করছেন।

কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার রশিদ নগর, সদর উপজেলার ৩নং ইসলামাবাদ ও চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের ঠিকানায় একাধিক রোহিঙ্গা পাসপোর্ট করতে আবেদন করেন। এখান থেকে বেশ কয়েকজনকে কৌশলে আটক করতে সক্ষম হয় কর্তৃপক্ষ। আটককৃতদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী। এসব রোহিঙ্গার সঙ্গে পিতা পরিচয়ে আসা একাধিক বাংলাদেশিকে আটক করার পর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

গত ২৭ আগস্ট দুপুরে কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট করতে এসে ভুয়া বাবাসহ আটক হন এক রোহিঙ্গা তরুণী। তার আসল নাম রশিদা বেগম। তাকে নিয়ে আসেন কক্সবাজার সদর উপজেলার পূর্ব নাইক্যংদিয়া এলাকার মনছুর আলম নামে এক ব্যক্তি। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের এক বছর করে কারাদণ্ড দেন।

আরও পড়ুন: এনআইডি-পাসপোর্ট করতে মরিয়া রোহিঙ্গারা
গত ১৬ জুলাই ছেনুয়ারা বেগম নামে এক রোহিঙ্গা তরুণীকে আটক করা হয়। তার সঙ্গে আসা বাংলাদেশি বাবা আমির হোসেনকেও আটক করা হয়। তিনি চকরিয়ার খুটাখালীর পূর্ব হাজীপাড়ার বাক্কুম এলাকার ফজল আলীর ছেলে এবং তার মেয়ে সেজে আসা ছেনুয়ারা বেগম জামতলী রোহিঙ্গা শিবিরের কামাল উদ্দিনের মেয়ে।

সম্প্রতি আটক হওয়া রেজিয়া বেগম নামে এক রোহিঙ্গার কাছে পাওয়া যায় একটি এনআইডি। যাতে রামু উপজেলার রশিদ নগর ইউপির ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই ইউনিয়ন পরিষদে প্রত্যয়ন ও নাগরিক সনদও জমা দেওয়া হয়েছে। এসব সনদ সংযুক্ত করে তিনি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাসপোর্ট অফিসের দালাল চক্রের এক সদস্য জানান, ইউপি চেয়ারম্যানদের কিছু টাকা দিলেই নাগরিক সনদ ও প্রত্যয়নপত্র পাওয়া যায়। এমনকি এনআইডিতেও সংযুক্ত করা যায়।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রশিদ নগর ও ইসলাবাদের ইউপি চেয়ারম্যানরা। রশিদ নগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম ডি শাহ আলম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘আমাকে বিতর্কিত করতেই প্রতিপক্ষের লোকজন রোহিঙ্গাদের এগুলো করে দিচ্ছে। সনদ বা প্রত্যয়ন সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না।’

৩নং ইসলাবাদের ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুর ছিদ্দিকি বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘আমার জানা মতে কোনো রোহিঙ্গাকে আমি এনআইডি বা অন্য কোনোকিছু দেইনি। কে বা কারা এসব করেছে তা আমি জানি না।’

কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত দুই বছরে রোহিঙ্গা সন্দেহে অন্তত ৪০০ জনের পাসপোর্ট আবেদন জব্দ করা হয়েছে। তাদের প্রত্যেকের এনআইডি বা জন্ম নিবন্ধন ছিল। এছাড়া আটক করা হয়েছে এনআইডিধারী দুই শতাধিক রোহিঙ্গাকে। কথা-বার্তায় সন্দেহ হলেই তাদের আটকের পর ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজাও দেওয়া হচ্ছে।

কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক আবু নাঈম মাসুম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘রোহিঙ্গারা আসতে শুরু করার পর দুই শতাধিক এনআইডিধারী রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। তবে আশার কথা হলো, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত হওয়ার পর রোহিঙ্গারা ধরা পড়তে শুরু করেছে। তবে কোনো ইউনিয়নকে টার্গেট করে আমরা কাজ করছি না।’

পাঠকের মতামত

উখিয়াবাসীর স্বপ্ন পূরণ করতে চাই – জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর বিবৃতি

গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি সংবাদের প্রেক্ষাপটে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে বিবৃতি দিয়েছেন উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ...

ইসলামপুরে আটক রোহিঙ্গা যুবককে কুতুপালং ক্যাম্পে হস্তান্তর

জামালপুরের ইসলামপুরে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার মো. রোবেল (২২) নামের সেই রোহিঙ্গা যুবককে কক্সবাজারের কুতুপালংয়ের ট্রানজিট ...