প্রকাশিত: ০৪/০৯/২০১৯ ১২:০৩ পিএম

রাসেল চৌধুরী, কক্সবাজার থেকে ::
কক্সবাজারের উখিয়ায় বাস্তবে রূপ পাচ্ছে উন্মুক্ত কারাগার। দেশের প্রথম উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের জন্য ১৬০ একর জমি দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্ত দিয়েছে সরকার। মালয়েশিয়ার উন্নত কারাগারের আদলে উখিয়া উপজেলার বড়বিল গ্রামে নির্মিত হবে বহুল প্রত্যাশিত এ কারাগার। এ সংক্রান্ত ভূমি মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠি সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগে পৌঁছানো হয়েছে। উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের জন্য ১৬০ একর খাসজমি দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্ত পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের জেল সুপার বজলুর রশিদ আখন্দ। ভূমি মন্ত্রণালয়ের চিঠির বরাত দিয়ে তিনি জানান, কারা অধিদপ্তরের আবেদন ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের প্রস্তাব ও সুপারিশের প্রেক্ষিতে উখিয়া উপজেলাধীন পাগলীর বিল মৌজার ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত বিএস ৮০৩ নম্বর দাগের ১৬০.০০ (একশত ষাট দশমিক শূন্য শূন্য) একর জমি দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্ত প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তিনি আরও জানান, মালয়েশিয়ার সিআরপি’র আদলে লঘু অপরাধে দণ্ডিত অপরাধীদের পুনর্বাসন কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি আরও জানান, এই কারাগার হবে মূলত সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের সংশোধন ও পুনর্বাসনকেন্দ্র।

উন্মুক্ত কারাগারে বন্দিরা কারাগারের সীমানার মধ্যেই থাকবেন। তবে কাজের জন্য তারা বাইরে যাওয়া-আসার সুযোগও পাবেন। বিশ্বের অনেক দেশেই এমন কারাগার রয়েছে। এসব কারাগার মূলত সংশোধনাগারের আদলে গড়ে তোলা হয়। আমাদের এখানেও একইভাবে কারাগারটি নির্মাণ করা হবে।
কারা মহাপরিদর্শক একেএম মোস্তফা কামাল পাশা জানান, এটি একটি চ্যালেঞ্জিং প্রকল্প। দুর্গম এলাকায় এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে গ্রামীণ চিত্র পাল্টে যাবে। গ্রামে শহরের ছোঁয়া লাগবে। উন্মুক্ত কারাগারে বন্দিরা যেমন সংশোধন ও পুনর্বাসনের সুযোগ পাবেন, তেমনি গ্রামীণ অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নতি হবে। কারাগারের বাউন্ডারির মধ্যেই শিল্প-কারখানা থাকবে। কারাবন্দিরা সেসব কারখানায় কাজ করতে পারবেন। আবার কিছু কারাবন্দির জন্য কারাগারের বাইরেও কাজ করার সুযোগ থাকবে। তারা সকালে কাজের জন্য বাইরে যাবেন, কাজ শেষে সন্ধ্যায় ফিরে আসবেন। উন্মুক্ত কারাগার বিষয়ে কক্সবাজার জেলা কারাগারের জেলার রীতেশ চাকমা বলেন, নির্ধারিত সাজার অর্ধেকের বেশি সময় যেসব বন্দি পার করেছেন এবং যারা কারাগারে ভালো আচরণ করেছেন, কেবল তাদেরই উন্মুক্ত কারাগারে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে। এই প্রশিক্ষণে যাঁরা ভালো করবেন, তাদের উন্মুক্ত কারাগারের বাইরেও কাজ করার সুযোগ দেয়া হবে। এসব বন্দি সকালে কাজের জন্য কারাগার থেকে বেরিয়ে যাবেন, সন্ধ্যায় কাজ শেষে আবার উন্মুক্ত কারাগারে ফিরে আসবেন। কেউ ফিরে না এলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
২০১৬ সাল থেকে কয়েক দফা উন্মুক্ত কারাগারের জন্য নির্ধারিত জমি পরিদর্শন করেন জেল সুপার বজলুর রশিদ আখন্দের নেতৃত্বে উখিয়ার প্রশাসনিক কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও কারা সংশ্লিষ্টরা। সর্বশেষ ২০১৭ সালে ১৭ই ফেব্রুয়ারি উন্মুক্ত কারাগারের জন্য নির্ধারিত জমি পরিদর্শনে উখিয়ার বড়বিল গ্রামে যান সাবেক কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন। তিনি গ্রামবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তিনি বলেন, জেলখানায় থাকা বন্দিরা আমাদের কারও ভাই, বন্ধু বা স্বজন। তাদের ভবিষ্যৎ বিবেচনা করে সরকার উন্মুক্ত কারাগার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। এখানে বন্দিদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পুনর্বাসন করা হবে। সুত্র: মানবজমিন

পাঠকের মতামত

উখিয়াবাসীর স্বপ্ন পূরণ করতে চাই – জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর বিবৃতি

গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি সংবাদের প্রেক্ষাপটে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে বিবৃতি দিয়েছেন উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ...

ইসলামপুরে আটক রোহিঙ্গা যুবককে কুতুপালং ক্যাম্পে হস্তান্তর

জামালপুরের ইসলামপুরে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার মো. রোবেল (২২) নামের সেই রোহিঙ্গা যুবককে কক্সবাজারের কুতুপালংয়ের ট্রানজিট ...