প্রকাশিত: ২৬/০১/২০১৭ ২:৪২ এএম

শহিদ রুবেল, উখিয়া ::
উখিয়া উপজেলার গ্রামীণ ঐতিহ্যের হাট-বাজার গুলো প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। উপজেলার আড়াই লক্ষাধিক মানুষের সাপ্তাহিক মিলনমেলা হিসাবে খ্যাত হাট-বাজার গুলো প্রতি বছর প্রকাশ্যে ইজারা দিয়ে সরকার লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব আদায় করলেও অবৈধ দখল, অব্যবস্থাপনা, বাজার উন্নয়নের অভাবই মুলত বিলুপ্তের ধারপ্রান্তে নিয়ে এসে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
সাপ্তাহিক মিলন মেলা হিসাবে খ্যাত উপজেলার হাট-বাজার রুমখাঁ বাজার, মরিচ্যা বাজার, পাতাবাড়ী বাজার, কুতুপালং বাজার, বালুখালী বাজার, থাইংখালী বাজার ও পালংখালী বাজার প্রাচীনকালের ঐতিহ্য ধারণ করে রয়েছে। নামে-বেনামে অবৈধভাবে দখল হয়ে যাচ্ছে এইসব হাট-বাজারের সরকারী খাস জমি। সরকারী টিনসেড থেকে শুরু করে সরকারী সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণ না করায় এসব হাট বাজারের অস্থিত্ব বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এছাড়া হাট-বাজার সংকুচিত হওয়ার ফলে কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের উপর হাট বসাতে হচ্ছে।
বিশেষ করে উপজেলার শত বছরের ঐতিহ্যবাহী রুমঁখা বাজার এখন মৃত। এছাড়া ও মরিচ্যা বাজারে কোটি টাকা খাস জমি স্থানীয় প্রভাবশালি চক্র দখল করে ভোগ করে আসছে।
রুমখা বাজারের প্রবীণ মুরুব্বীরা স্মৃতিচারণ করে বলেন, রুমখাঁ বাজার এক সময় সুদূর কক্সবাজার, চকরিয়া, রামু, টেকনাফের মানুষের প্রাণকেন্দ্র ছিল। ব্রিটিশ আমলের পুরনো এই বাজারটিতে এখনো ছাগলের জন্য সুদূর দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসে এই বাজারে। তারা এই বাজারের জন্য আক্ষেপ প্রকাশ করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মুদি ব্যবসায়ী মনু সওদাগর বলেন, উখিয়ার বাণিজ্যিক নগরী খ্যাত কোটবাজারের উত্থান হলে কালের গহব্বরে হারিয়ে যেতে শুরু করেছে এত্যিবাহী রুমঁখা বাজার। মানুষ এখন কোটবাজার মুখী হয়ে ব্যবসা আরম্ভ করেছে।
সচেতন মহলের দাবী, গ্রামীণ জনপদের কৃষাণ-কৃষাণীদের উৎপাদিত পন্য সামগ্রী বিক্রি এবং স্থানীয় অদিবাসীদের নিত্য প্রয়োজনীয় পন্য সামগ্রী ক্রয়ের নির্ভর যোগ্য স্থান উখিয়ার হাট বাজার গুলো বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার ফলে প্রাচীন কালের ঐতিহ্য হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। অতি শীঘ্রই বাজার গুলো সংস্কার ও দখলবাজদের উচ্ছেদের উদ্যেগ নেওয়ার দাবী জানান তারা।
এ বিষয়ে হলদিয়াপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ শাহ আলম জানান, মরিচ্যা বাজারের দখলকৃত খাস জমি উদ্ধারের প্রক্রিয়া চলছে। তিনি খাস জমি উদ্ধার করে শেড নিমার্ণ করে দিবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
খাস জমি দখলে থাকার সত্যাতা স্বীকার করে সহকারী ভুমি কমিশনার এসিল্যান্ড নুর উদ্দীন মোহাম্মদ শিবলী নোমান জানান, খাস জমিতে বসবাসরতদের বন্দোবস্তি দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। হাটবাজারের খাস জমি গুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। ইউএনও মহোদয়ের নির্দেশ পেলেই উচ্ছেদ করা হবে। তিনি খাস জমি উদ্ধারে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

পাঠকের মতামত