ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ০৫/০১/২০২৩ ৫:০৯ পিএম

সৈকতনগরী কক্সবাজার মহেশখালীর সোনাদিয়া দ্বীপ। জীববৈচিত্র্যে ভরপুর অনিন্দ্য সুন্দর দ্বীপটিকে ভার্জিন দ্বীপ নামেও ডাকা হয়। জেলার উত্তর-পশ্চিম ও মহেশখালী উপজেলার দক্ষিণ-পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরের তীর ঘেঁষেই সোনাদিয়ার অবস্থান।
জানা গেছে, এক সময় সোনাদিয়া দ্বীপটি সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য ছিল। খুন, মারামারি, ডাকাতি, মাদক বিক্রি লেগেই থাকতো। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকটি অভিযানে শীর্ষ সন্ত্রাসীরা বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর দ্বীপে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে। তবে এখনো সেই দ্বীপে রাত্রিযাপন নিরাপদ নয়।

কিন্তু সেই অনিরাপদ দ্বীপেই কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান লোভনীয় অফার দিয়ে আনা হচ্ছে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের। এসব পর্যটকদের বেশির ভাগ দল রাত্রিযাপনের নামে সেখানে মাদকের আসর বসায়। সমুদ্র সৈকতের তীরে আগুন জ্বালিয়ে মদ, ইয়াবা ও গাজা সেবনের পর উলঙ্গ উল্লাস করে। আর এসবে নিরাপত্তা দেয় কটেজ মালিকরা।

মিজানুর রহমান নামের এক সাংবাদিক জানান, ২১ ডিসেম্বর রাতে একদল পর্যটক বিদেশী মদের আসর বসায় সোনাদিয়া পশ্চিম পাড়া সমুদ্র তীরে। সেখানে নারী-পুরুষের অবাদ মেলামেশাও দেখা গেছে। ওই সময় সে মাদক সেবনের একটি ছবিও গোপনে ধারণ করে।

এদিকে গত তিন বছর ধরে তাবুতে পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা করছে স্থানীয় কিছু মানুষ। কিন্তু ইদানিং সোনাদিয়া দ্বীপ ভ্রমণে প্যাকেজ সিস্টেম চালু করে বিজ্ঞাপন প্রচারের পর বিষয়টি সামনে আসে। তখন জনমনে প্রশ্ন জাগে ঝুঁকিপূর্ণ দ্বীপে কিভাবে পর্যটকদের রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা করছে! আর এসব বিষয়ে প্রশাসনই বা নীরব কেন!

স্থানীয় হাসান মাহমুদ, সিফান, রাকিব সহ বেশ কয়েকজন জানান, বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে-মেয়েরা ভ্রমণের নামে এখানে এসে তাবুতে একসাথে রাত কাটায়। তারা আগে বসায় মাদকের আসর।

দ্বীপটির পূর্বের ইতিহাসও তেমন শুভ নয়। নৌপথে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম থাকায় আইনশৃংখলা বাহিনীর তৎপরতাও তেমন নেই। যার দরুণ সেখানে গড়ে উঠেছে কয়েকটি সন্ত্রাসীবাহিনী। যাদের প্রধান কাজ সাগরে জলদস্যুতা, সাগরপথে মানবপাচার, মিয়ানমার থেকে ইয়াবা এনে সেখানে মজুদ রাখা। পরে তা দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করে।

এদিকে দ্বীপে পর্যটক সেজে নারী-পুরুষের অবৈধ মেলামেশা, পর্যটকদের হয়রানি ও মাদক সেবনের অভিযোগ এনে দ্বীপে রাত্রিযাপন বন্ধের দাবিতে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ওসি বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন সোনাদিয়া দ্বীপের ইউপি সদস্য একরাম মিয়া।

এই বিষয়ে মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ প্রনব চৌধুরী জানান, নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে সোনাদিয়া দ্বীপে বহিরাগতদের রাত্রিযাপন ইতিমধ্যে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে।

অপরদিকে ১৯৯৯ সালে ঘোষিত ইসিএ এলাকা সোনাদিয়া দ্বীপে আইন অমান্য করে কিভাবে পর্যটন আনা হচ্ছে সেই বিষয়ে কটেজ মালিকদের কাছে জানতে চাইলে তারা বিষয়টি এড়িয়ে যান। একই অবস্থা উপজেলা প্রশাসনেও। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ ইয়াসিনকে ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারে সংঘাত/টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে ঢুকল আরও ৯ বিজিপি সদস্য

মিয়ানমারের রাখাইনে সংঘাতময় পরিস্থিতিতে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ...