
রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমার প্রতিশ্রুতবদ্ধ হলেও তার বাস্তবায়ন নিয়ে সন্দেহ রয়েছে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের।
বৃহস্পতিবার ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে একটি চুক্তি করেছে; যদিও আমরা এই চুক্তির বাস্তবায়ন নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান। তবে এটার বাস্তবায়ন আমাদের জন্য খুবই প্রয়োজন।”
নির্যাতনের শিকার হয়ে মিয়ানমার থেকে প্রায় ছয় লাখ রোহিঙ্গা গত তিন মাসে বাংলাদেশে পালিয়ে প্রেক্ষাপটে তাদের ফেরাতে গত ২৩ নভেম্বর একটি সম্মতিপত্র সই করে দুই দেশ।
ওই দিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তিন সপ্তাহের মধ্যে একটি ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠন করে দুই মাসের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করা এবং এজন্য যত দ্রুত সম্ভব একটি সুনির্দিষ্ট চুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে সম্মতিপত্রে।
দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশাবাদী হলেও মন্ত্রিসভার জ্যেষ্ঠ সদস্য মুহিতের অন্য সুর শোনা গেল।
‘এচিভিং সাসটেইনেবল গ্র্যাজুয়েশন ফর দ্য এলডিসি’স শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, “রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে আমরা একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই, যদিও এটা বেশ কঠিন।”
কয়েক যুগ ধরে ৪ লাখের বেশি রোহিঙ্গার ভার বহন করে আসা বাংলাদেশের উপর আরও আরও ৬ লাখ শরণার্থীকে বোঝা হিসেবেই দেখছেন মুহিত।
তিনি এর আগে মিয়ানমারের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, দেশটি রোহিঙ্গাদের ঠেলে দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি ধ্বংস করে দিতে চাইছে।
বৃহস্পতিবারের অনুষ্ঠানে মুহিত বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটের মধ্যেও বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়া আপন গতিতে চলবে।
“রোহিঙ্গা সঙ্কট স্বত্ত্বেও আমাদের উন্নয়ন কার্যক্রম আগের মতো চলবে। স্বত্ত্বেও কেন বলছি… রোহিঙ্গা সঙ্কট হঠাৎ করে আবির্ভূত হয়েছে মেঘমালার মতো।”
শরণার্থীদের পুনর্বাসনে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলোর সহযোগিতা পাওয়ার কথা জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, এমনকি আগামী দুই বছরের জন্য যে পরিমাণ সাহায্যের প্রয়োজন হবে, সেটার তালিকাও দাতাসংস্থাগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের কারণে আগামী বাজেটে স্বাস্থ্য, পয়ঃনিষ্কাশন, খাদ্য ও অন্যান্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি।
পাঠকের মতামত