প্রকাশিত: ১১/০৬/২০১৯ ২:২৭ পিএম , আপডেট: ১১/০৬/২০১৯ ২:৩১ পিএম

দৈনিক কক্সবাজার::
জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা না মেনেই লোক নিয়োগসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতি করে যাচ্ছেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কার্যক্রম চালনো এনজিও দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের (ডিএসকে) টীম লিডার প্রদীপ কুমার রায়। তিনি ৫টি প্রজেক্ট পরিচালনা করলেও নিজেই নেমে পড়েছেন ঠিকাদারী ব্যবসায়। অস্বচ্ছ টেন্ডারের মাধ্যমে নিজেই ভাগিয়ে নিচ্ছেন সব কাজ।রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তার কোটি টাকাই হাতিয়ে নিচ্ছেন ডিএসকে (দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র) টীম লিড়ার প্রদীপ কুমার। ওই এনজিও এর অধীনে ৫টি প্রজেক্টের সহায়তার ১৩ কোটি টাকার অধিকাংশ টাকারই কোন হদিস নেই। তার ভয়ে আতংকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে অন্যান্য কর্মচারীরা।
১০ জুন থ্যাইংখালীস্থ এই এনজিও অফিসে গিয়ে দেখা যায় কর্মকর্তাদের অধিকাংশই অনুপস্থিত। কোন তথ্য চাইলেই তারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। ওই কর্মকর্তাদের কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, টীম লিডার প্রদীপ কুমার রায় এই ৫টি প্রজেক্টের অধিকাংশ টাকাই হাতিয়ে নিয়েছেন। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। ডিএসকে’র মাধ্যমে পরিচালিত এই ৫টি প্রজেক্টে কর্মরত সকল কর্মচারীই সব সময় আতংকের মধ্যে দিন কাটায়। চাকরি হারানোর ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস করে না। এই প্রজেক্টগুলোতে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীর পদে স্থানীয়দের নিয়োগ দেওয়া হয়। একটু বেতন বেশী হলে তা অন্য জেলা থেকে টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হয়। এ্ই এনজিওর নির্বাহী পরিচালক একজন পরিচ্ছন্ন লোক হলেও একজন টীম লিডারের কারণে পুরো এনজিওর সুনাম বিনষ্ট হচ্ছে। সম্প্রতি নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বাগেরহাট জেলা থেকে। তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করে দূর্নীতির জাল বিস্তার করছেন।
সম্প্রতি চাকরি ছেড়ে চলে যাওয়া জয় বড়ুয়া জানিয়েছেন, যারা প্রতিবাদ করেছেন এমন অসংখ্য কর্মচারীকে তিনি চাকরিচ্যুত করেছেন। কোন মহিলাও তার কারণে চাকরি করতে চায় না। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্থানীয়দের নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশনা দিলেও তা তিনি কর্ণপাত করেন না। শুধু নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে তিনি অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তার ইচ্ছামত বিভিন্ন জেলা থেকে লোক নিয়োগ করে থাকে। সম্প্রতি কেএনএইচ এর প্রজেক্টে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ময়লা রাখার ঝুড়ি সরবরাহের টেন্ডার জালিয়াতির মাধ্যমে বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রদীপ কুমার রায়। ৪শ টাকা মুল্যের একটি ঝুড়ি মুল্য দেখানো হয়েছে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত। যা কল্পনারও বাইরে। রোহিঙ্গাদের টাকা যেভাবে হাতিয়ে নিচ্ছেন তা দেখলে রীতিমত অবাক লাগে। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে যে টিউবওয়েল বসানো হয়েছে যার অধিকাংশই এখন অকার্যকর। এছাড়া টয়লেট পরিষ্কারের নামে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে কোটি টাকা। এই ৫টি প্রকল্পে যারা কাজ করেন তাদের সবাই সব সময় আতংকের মধ্যে দিন কাটান। যেভাবেই হউক পুরানোদের চাকরিচ্যুত করতেই তিনি তৎপরতা চালান। বিভিন্ন টেন্ডারে সর্বনি¤œ দরদাতা যারাই হোক না কেন কাজ দেওয়া হয় ওসমান ট্রেডার্সকে। যা তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে।
টীম লিডার প্রদীপ কুমার রায় জানান, যা অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পুর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। পত্রিকায় টেন্ডার বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সর্বনি¤œ দর দাতাই কাজ পায়। এতে আমার কোন হাত নেই। এ ছাড়া নিয়োগের ক্ষেত্রে স্থানীয়দেরই প্রাধান্য দেওয়া হয়।
সুত্র: দৈনিক কক্সবাজার

পাঠকের মতামত