প্রকাশিত: ০২/০১/২০১৭ ১০:১৩ এএম , আপডেট: ০২/০১/২০১৭ ১০:১৪ এএম

রামু প্রতিনিধি::
‘আমাকে জোর করে বিয়ে দিচ্ছে, আমি বিয়ে করবো না, আমি পড়ালেখা করবো’ এভাবে কথাগুলো বলছিলেন, ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী চুম্পা হায়াত মুন্নী (১৩)। জোর করে বিয়ে দেয়ার খবরে মুন্নীর বাড়িতে যাওয়া স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, কাজী,সহ সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দকে এসব কথা বলে শিশু মুন্নী।
মুন্নী রামুর কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের উখিয়ারঘোনা ফকিরপাড়া গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী ফরিদুল আলমের কন্যা ও স্থানীয় সাইমুম সরওয়ার কমল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী।
সোমবার (২ জানুয়ারি) মুন্নীর বিয়ের দিন ধার্য হলেও স্থানীয় সুশীল সমাজের প্রচেষ্টায় এ বিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাজাহান আলি।
৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী চুম্পা হায়াত মুন্নী জানিয়েছে, সম্প্রতি তার বড় বোন সাবেকুন নাহারের সাথে পার্শ্ববর্তী স্কুলপাহাড় এলাকার বাসিন্দা মো. করিমের ছেলে আরিফ উল্লাহর বিয়ে ফর্দ (বাগদান) হয়। কিন্তু এরপরই সাবেকুন নাহার তার প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, এরই প্রেক্ষিতে একটি মহলের হস্তক্ষেপে সাবেকুননাহারের ছোট বোন ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী চুম্পা হায়াত মুন্নীর সাথে ওই আরিফ উল্লাহর বিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত পাকাপোক্ত করেন। এমনিক ২ জানুয়ারি (সোমবার) বিয়ের দিনও ধার্য করা হয়।
এদিকে বিষয়টি জানতে পেরে রবিবার (১ জানুয়ারি) মুন্নীর বাড়িতে যান রামু উপজেলা মুক্তিযোদ্ধ কমান্ডার ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল হক, রাজনীতিক শফিউল আলম কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন নিকাহ রেজিস্ট্রার এম আবদুল্লাহ আল মামুন, কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি নুরুল ইসলাম নাহিদ, সাবেক ইউপি সদস্য আজিজুল হক আজিজ, কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন ছাত্রলীগ ছানা উল্লাহসহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ।
এসময় মুন্নী তাকে জোর করে বিয়ে দেয়ার চেষ্টার বিষয়টি খুলে বলে এবং সে বিয়ে না করে পড়ালেখা করার আগ্রগের কথা জানায়। পরে উল্লেখিত ব্যক্তিবর্গ বিষয়টি রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করেন।
সাইমুম সরওয়ার কমল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতিকুর রহমান জানিয়েছেন, ‘মুন্নী মেধাবি ছাত্রী। শুনেছি আজ (সোমবার) মেয়েটির বিয়ের সকল আয়োজন সম্পন্ন করেছে পরিবারের সদস্যরা। অথচ মেয়েটি এখনো বিয়ের উপযুক্ত হয়নি। বিদ্যালয়ে ভর্তি রেজিস্ট্রারে মুন্নীর জন্ম তারিখ ৬ জানুয়ারি ২০০৩ ইং। মুন্নী সম্প্রতি প্রকাশিত ফলাফলে সপ্তম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে।’
রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাজাহান আলি জানিয়েছেন, শুনেছি ছাত্রীর বয়স কম। তাই বিয়ে বন্ধ রাখার সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দিয়েছি। তাছাড়া কোন এলাকায় বাল্য বিয়ে হলে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

পাঠকের মতামত