প্রকাশিত: ১৫/১১/২০২১ ৯:১৭ এএম , আপডেট: ১৫/১১/২০২১ ৯:১৮ এএম

বেশ কিছুদিন ধরেই লাগামহীনভাবে বাড়ছে রডের দাম। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বাড়িঘরসহ স্থাপনা নির্মাণের অন্যতম প্রধান এই উপকরণের দাম প্রতি টনে বেড়ে গেছে আট হাজার টাকা। এতে বিপাকে পড়েছেন ব্যক্তিগত বাড়ি নির্মাণকারী ও আবাসন ব্যবসায়ীরা। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, বিশ্ববাজারে কাঁচামালের দাম এবং জাহাজ ভাড়া ব্যাপকভাবে বেড়েছে। করোনার প্রভাব কাটিয়ে বিশ্বে নির্মাণকাজ বেড়ে যাওয়ায় চাহিদা অনুসারে কাঁচামাল পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে, নির্মাণকাজের ভরা মৌসুম হওয়াতেও এখন রডের চাহিদা বেশি। এসব কারণে দেশের বাজারেও রডের দাম বেড়েছে। কাঁচামালের দাম না কমলে সামনের মাসগুলোতে দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

গতকাল রোববার রাজধানীর কয়েকটি স্থানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভালো মানের (৬০ গ্রেডের ওপরে) রড বিক্রি হচ্ছে প্রতি টন ৮০ থেকে ৮১ হাজার টাকায়, যা ১৫ থেকে ১৬ দিন আগেও বিক্রি হয় ৭২ থেকে ৭৩ হাজার টাকায়। এক মাস আগে দাম ছিল ৬৯ থেকে ৭০ হাজার টাকা। এদিকে, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, গত এক মাসের ব্যবধানে বাজারে ভালো মানের রডের দাম বেড়েছে ৭ শতাংশের বেশি।

রড উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল স্ক্র্যাপের প্রায় ৮০ শতাংশই আমদানি করা হয় আমেরিকা ও ইউরোপের কয়েকটি দেশ থেকে। বাকি ২০ শতাংশ আসে দেশীয় জাহাজ ভাঙা স্ক্র্যাপ থেকে। সংশ্লিষ্টরা জানান, চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় উন্নত দেশগুলো এখন আর জাহাজ ভাঙতে চাচ্ছে না। ফলে দেশে জাহাজ ভাঙা স্ক্র্যাপের পরিমাণও কমে গেছে।

এ বিষয়ে পিএইচপি ইস্পাতের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম গতকাল সমকালকে বলেন, সারাবিশ্বে কাঁচামালের চাহিদা বাড়ছে। চাহিদা অনুযায়ী কাঁচামাল পাওয়া যাচ্ছে না। জাহাজ ভাড়া করলেও নির্দিষ্ট সময়ে তা আসতে পারে না। এ কারণে কারখানায় সক্ষমতা অনুসারে উৎপাদন করা যাচ্ছে না। তার নিজের কারখানাতেই উৎপাদন কমে ৩০ শতাংশে নেমেছে।

মেট্রোসেম ইস্পাতের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদ উল্লাহ সমকালকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা, চীন ও ইউরোপের কয়েকটি দেশ থেকে বাংলাদেশ স্ক্র্যাপ আমদানি করে। কিন্তু করোনার পর সেসব দেশে স্থাপনা নির্মাণের কাজ বেড়েছে। ফলে তাদের স্ক্র্যাপের চাহিদাও বেড়ে গেছে।

রডের দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বাংলাদেশ রি-রোলিং মিলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমির আলী হোসাইন। সমকালকে তিনি বলেন, এতদিন রডের কাঁচামালের দাম ও জাহাজ ভাড়া বাড়লেও উৎপাদনকারীরা সে হারে দাম বাড়াননি। কিন্তু এসব বাড়তি ব্যয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জ্বালানি তেলের নতুন দর। এ কারণে স্থানীয়ভাবে পরিবহন ও উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। ফলে সামনে রডের দাম আরও বাড়বে। আন্তর্জাতিক বাজারে বর্তমানে প্রতি টন স্ক্র্যাপের দাম ৫৩০ থেকে ৬০০ ডলার, যা বছরখানেক আগেও ছিল ৩০০ থেকে ৩৫০ ডলার। দেশীয় স্ক্র্যাপের দামও বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতি টন স্ক্র্যাপের দাম এখন ৫৪ থেকে ৫৫ হাজার টাকা, যা বছরখানেক আগে ছিল ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকার মধ্যে।

আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবের প্রথম সহসভাপতি কামাল মাহমুদ সমকালকে বলেন, রডের দাম বৃদ্ধির কারণে আবাসন নির্মাণে আগের চেয়ে খরচ বেড়েছে ১৫ থেকে ১৮ শতাংশ। ফলে যেসব ফ্ল্যাট আগে বুকিং নেওয়া হয়েছে, সেগুলোতে লোকসান গুনতে হচ্ছে। এ কারণে অনেক ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ করতে হয়েছে। সমকাল

পাঠকের মতামত

কঠোর নির্দেশনার পরও মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা ছাড়ছে না ভোটের মাঠ

সরকারদলীয় এমপি-মন্ত্রীদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নিতে কঠোর নির্দেশনা ...

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা সীমান্তরক্ষীদের নিতে জাহাজ আসবে এ সপ্তাহেই

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসা দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যদের ফের ...