
এম আমান উল্লাহ আমান::
নাফ নদীতে জলসীমা অতিক্রম করে মিয়ানমারে ঢুকে মাছ শিকার করছে টেকনাফের জেলেরা। মিয়ানমার এবং বাংলাদেশ জলসীমা অতিক্রমকে কেন্দ্র করে নাফ নদীতে এ পর্যন্ত প্রচুর হতাহতের ঘটনা ঘটছে, প্রাণ হারিয়েছে শতাধিক,পঙ্গুত্ব বরণ করেছে কয়েকশত জেলে। টেকনাফ ২ বিজিবির পক্ষ থেকে বার বার সর্তক করার পরও টেকনাফের জালিয়া পাড়া, চৌধূরী পাড়া, নাজির পাড়া,শাহপরীরদ্বীপ, সেন্টমার্টিন ও হ্নীলা-হোয়াইক্যং এলাকার অধিকাংশ জেলে সরকারের নিষেধাজ্ঞা মানছেনা, ফলে যে কোন মূহুর্তে মিয়ারমার বিজিপি কর্তৃক অঘটনের আশংকা রয়েছে।
টেকনাফ পৌরসভার প্যানল মেয়র মাও. মুজিবুর রহমান বলেন- বিজিবির পক্ষ থেকে দেয়া সরকারী নিষেধাজ্ঞার কথা জেলেদের বলা হলেও তারা অমান্য করে মিয়ানমারের ভিতরে গিয়ে মাছ শিকার করছে প্রতি নিয়ত, এতে মারাত্বক দূর্ঘটনার আশংকা দেখে বিষয়টি পৌরসভার পক্ষ থেকে টেকনাফ মৎস্য কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে।
টেকনাফ ২ বিজিবির অতিরিক্ত পরিচালক আবু রাসেল সিদ্দিকী বলেন বাংলাদেশের জেলেরা মিয়ানমারের জলসীমায় ঢুকে মাছ শিকারের সময় বার বার দূর্ঘটনার স্বিকার হচ্ছে তা সত্য, আগাম দূর্ঘটনা এড়াতে জেলে এবং জনপ্রতিনিধিদের ব্যাটালিয়নে সভার আয়োজন করে কয়েকবার সতর্ক করা হয়েছে, এমনকি মাঝে মাঝে কয়েক দিনের জন্য বঙ্গোপ সাগর ও নাফ নদীতে মাছ শিকার বন্ধও করে দেয়া হয়। তিনি আরো বলেন রাতে মাছ শিকার বন্ধ রাখতে সংশ্লিষ্ট উর্ধতন মহলে লিখা হয়েছে সিদ্ধান্ত পেলে বঙ্গোপ সাগর ও নাফ নদীতে রাতে মাছ শিকার বন্ধ রাখার ঘোষনা দেয়া হবে। এতে ইয়াবা পাচার হ্রাস পাবে এবং জেলেরাও দূর্ঘটনা থেকে নিরাপদ থাকবে।
গেল বৎসরের ২৭ ডিসেম্বর টেকনাফের সেন্টমার্টিনের ছেঁড়াদ্বীপের পূর্ব পাশে জলসীমায় জাল ফেলেন ১৪ জেলে । তবে সেদিন দুপুরের দিকে মিয়ানমারের নৌবাহিনীর একটি জাহাজ বাংলাদেশী জেলেদের ট্রলারটিকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে তারা ট্রলার লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। এতে পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। ট্রলারের অন্য জেলেরা আহতদের নিয়ে বিকেলে সেন্টমার্টিন দ্বীপের ঘাটে পৌঁছালে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত জেলে মোহাম্মদ আলম বলেছিলেন, মিয়ানমারের নৌবাহিনীর একটি জাহাজ জলসীমায় ঢুকে জেলেদের ট্রলার লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। তারা ট্রলার থেকে তিন লক্ষাধিক টাকার মাছ ও জালসহ অন্য মালপত্র লুটে নিয়ে যায়। এভাবে প্রতি নিয়ত দূর্ঘটনা ঘটছে। জেলে আবদুল আমিন বলেন মিয়ানমার সৈন্যরা বাংলাদেশের জলসীমায় খুবই কম ঢুকে, বাংলাদেশী জেলেরা মাছের লোভে মায়নমারের জলসীমায় চলে যাওয়ার কারনে ঘটনা ঘটে।
এদিকে সীমান্তে টহলরত বিজিবি জোয়ানরা মিয়ানমারের জলসীমায় মাছ শিকার বন্ধ রাখার চেষ্টা করলেও মোঃ হাসান নামের এক ব্যক্তি পাশ দেয়ার কথা বলে সীমাতিক্রম করে মাছ শিকারে উৎসাহীত করার অভিযোগ উঠেছে। পাশর্^বর্তী দু’দেশের মাঝে শান্তি বজায় রাখতে জলসীমা অতিক্রম করে মাছ শিকার বন্ধের দাবী জানিয়েছেন সচেতন মহল।
পাঠকের মতামত