উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
বাংলাদেশে আরেকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইজেড) প্রতিষ্ঠার জন্য জমি চায় জাপান। এবার তাদের আগ্রহ কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায়, যেখানে বেশ কয়েকটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য জমি নিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। মহেশখালীতে জমি পেলে সেটা হবে বাংলাদেশে জাপানের দ্বিতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল। বর্তমানে দেশটি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ১ হাজার একর জমিতে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ করছে। মহেশখালীতে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় জাপানের আগ্রহের বিষয়টি বেজার সঙ্গে এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে উঠে আসে। বৈঠকে জাপানের পক্ষ থেকে জমি চাওয়া হয়, যার পরিমাণ ১ হাজার একরের মতো।
মহেশখালী নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) যে মহাপরিকল্পনা করেছে, তাতে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার বিষয়টিও আছে। অবশ্য এ বিষয়ে এখনই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলতে নারাজ বেজা। জানতে চাইলে সংস্থাটির নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার, মহেশখালী অথবা মিরসরাইয়ে জাপানের বিনিয়োগকে আমরা স্বাগত জানাই। জাপান বিনিয়োগ করতে চাইলে বেজার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেওয়া হবে।’ জাপানের পাশাপাশি বাংলাদেশে চীনও তাদের বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছে চট্টগ্রামের আনোয়ারায়। ভারত প্রতিষ্ঠা করবে তিনটি অর্থনৈতিক অঞ্চল, যার একটি চট্টগ্রামের মিরসরাই, একটি বাগেরহাটের মোংলায় ও অন্যটি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় হওয়ার কথা। ভারতের তিনটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে জমির পরিমাণ ১ হাজার ৬২৪ একর। চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চলের আকার ৭৮৩ একর। নারায়ণগঞ্জে জাপানের অর্থনৈতিক অঞ্চলের আকার ১ হাজার ১০ একর।
সরকার এখন দুটি এলাকা ঘিরে বড় উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। একটি মহেশখালী, অন্যটি পটুয়াখালীর পায়রা বন্দরকেন্দ্রিক।মহেশখালী উপজেলায় একটি সমুদ্রবন্দর, ১৩ হাজার ৫৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৯টি বিদ্যুৎকেন্দ্র, ৫টি অর্থনৈতিক অঞ্চল, একটি তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল, জ্বালানি তেলের পাইপলাইন ও পেট্রোলিয়াম কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম গ্রহণ করেছে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থা।সব মিলিয়ে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিকল্পনার কেন্দ্রে চলে আসছে মহেশখালী।
সেখানে জাপানের উপস্থিতি লক্ষণীয়। জাইকার অর্থায়নে মহেশখালীতে একাধিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও কয়লা খালাসের জন্য বন্দর নির্মাণের কাজ চলছে। সমুদ্রের গভীরতা অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে বেশি হওয়ায় ভারী শিল্পের জন্য মহেশখালী একটি আকর্ষণীয় স্থান বলে মনে করে বেজা।
মহেশখালীকে ঘিরে নেওয়া উন্নয়নকাজ ও বিনিয়োগ পরিকল্পনার সমন্বয় ও তদারকির জন্য গত বছর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করে। এই কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরীকে। জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমানে বেজার কাছে মহেশখালীতে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য ১২ হাজার একর জমি আছে। আরও প্রায় ১২ হাজার একর বন্দোবস্তের প্রক্রিয়ায় আছে।
পাঠকের মতামত