উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬/০৭/২০২৩ ১০:৫৬ এএম

কক্সবাজার জেলায় গত ১০দিন ধরে প্রচন্ড গরম অনুভুত হচ্ছে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিদ্যুতের লোডশেডিং। বর্ষা মৌসুম মধ্যমভাগে চলে আসলেও বৃষ্টির দেখা মিলছেনা।এরফলে তাপমাত্র বাড়ার সাথে বেড়েছে গরমও।

জনজীবন যখন অনেকটা বিপর্যস্ত তার উপর কক্সবাজারে শহরসহ ৯টি উপজেলায় তিন থেকে চার দিন ধরে বেড়েছে লোডশেডিংও। জেলায় দিনে ৬ থেকে ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিংয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে বিভিন্ন এলাকায়।

এতে জনদুর্ভোগের পাশাপাশি জেলার পর্যটন খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

কক্সবাজার শহরে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এবং উপজেলাগুলোতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। লোডশেডিংয়ে বেশি ভোগান্তিতে রয়েছেন পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকেরা।

শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকার ব্যবসায়ী জসীম উদ্দিন বলেন,গত সোমবার রাত ১২টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৭টা পর্যন্ত ৭ ঘণ্টায় ৩ দফায় প্রায় ৫ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়েছে তাঁর এলাকায়। একদিকে গরমের প্রভাব। অন্যদিকে বিদ্যুতের লোডশেডিং। গত এক মাস আগে শুনেছি কয়লার অভাবে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে পড়ায় লোডশেডিং হয়েছে। এখন গণমাধ্যমে দেখছি, বিদেশ থেকে একের পর এক জাহাজভর্তি কয়লা আসছে। এরপরও এত লোডশেডিং কেন বুঝি না। প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যে যেমন প্রভাব পড়ছে, তেমনি ঘরের ফ্রিজে রাখা মাছ-মাংস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

Cox’s Bazar skyline at night | Photo taken from the rooftop … | Flickr

কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন স্থানে হোটেল, মোটেল, গেস্টহাউস, রিসোর্ট ও কটেজ রয়েছে পাঁচ শতাধিক। এসব হোটেলে প্রায় দুই লাখ মানুষ অবস্থান করতে পারেন।

কলাতলী মেরিনড্রাইভ হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, পর্যটক কম থাকায় ৫০ শতাংশ ছাড় দিয়েও হোটেলগুলোতে সাড়া মিলছে না। মাত্র ৩০ শতাংশ কক্ষ ভাড়া হচ্ছে। এ অবস্থায় জেনারেটর চালিয়ে পর্যটকদের সেবা নিশ্চিত করতে গিয়ে হোটেল-মোটেলের মালিকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

হোটেল-মোটেল এলাকায় লোডশেডিং কমিয়ে আনার দাবিতে সম্প্রতি বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবরে চিঠি দিয়েছে কলাতলী মেরিনড্রাইভ হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতি। চিঠিতে বলা হয়, গত এপ্রিল থেকে দৈনিক বিদ্যুতের ঘাটতি প্রায় ছয়-সাত ঘণ্টা। অনেক সময় তা বেড়ে ১০ ঘণ্টায়ও দাঁড়ায়।

সংকট মোকাবিলা করতে জেনারেটরে যে পরিমাণ ডিজেল খরচ হচ্ছে, পর্যটক কম থাকায় তার জোগান দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এর ওপর লো–ভোল্টেজের কারণে যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

কক্সবাজার হোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ বলেন, হোটেল-রেস্তোরাঁয় প্রতিদিন সাত-আট ঘণ্টা জেনারেটর চালু রাখতে হচ্ছে। এতে দৈনিক চার হাজার টাকার জ্বালানি প্রয়োজন হয়।

জানতে চাইলে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিতরণ) আবদুল কাদের বলেন, শহরে প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় ৪২ মেগাওয়াট। সরবরাহ হচ্ছে ৩০ মেগাওয়াটের মতো। এ কারণে লোডশেডিং হচ্ছে।

জেলার মহেশখালী উপজেলায় দিনে সর্বোচ্চ ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে। উপজেলাটিতে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক রয়েছে ৬৪ হাজার ৩১৬ জন। মহেশখালীর পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, দিনে ১৬ ঘণ্টার ওপরে লোডশেডিং করা হচ্ছে।

জানতে চাইলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহেশখালীর উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মোহাম্মদ আল আমিন বলেন, উপজেলাতে বিদ্যুতের দৈনিক চাহিদা ২৩ মেগাওয়াট, এর মধ্যে বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৬ মেগাওয়াট। তাতে দৈনিক সর্বোচ্চ ১৬ ঘণ্টা লোডশেডিং করতে হচ্ছে।

পেকুয়া পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) দীপন চৌধুরী বলেন, রাতে পেকুয়া উপজেলায় বিদ্যুতের চাহিদা থাকে প্রায় ১২ মেগাওয়াটের। তখন বরাদ্দ পাওয়া যায় মাত্র পাঁচ মেগাওয়াট। একইভাবে দিনে চাহিদা থাকে আট মেগাওয়াটের। বরাদ্দ পাওয়া যায় মাত্র চার মেগাওয়াট। এ কারণে লোডশেডিং বেশি হচ্ছে।

চকরিয়া উপজেলায়ও একই অবস্থা। চকরিয়া পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের ডিজিএম সাদিকুল ইসলাম বলেন, দিনে চকরিয়ার চাহিদা থাকে ১৫ মেগাওয়াট, পাওয়া যায় মাত্র ৫ মেগাওয়াট।

টেকনাফে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক আছেন ৬৯ হাজার ২১৪ জন। দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা ৩০ মেগাওয়াট। সরবরাহ অর্ধেকের কম হওয়ায় ঘন ঘন লোডশেডিং করতে হচ্ছে উপজেলাটিতে।
সুত্র: প্রথমআলো

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ধর্ম ও প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ

কক্সবাজারে বাল্যবিবাহ শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হলো “বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে করণীয়” শীর্ষক আন্তঃধর্মীয় নেতৃবৃন্দের ...

বাংলাদেশি পাসপোর্টে রোহিঙ্গা সুন্দরী তৈয়বার মালয়েশিয়ায় ‘বিয়ে বাণিজ্য’

১৯৯৭ সালে মিয়ানমারের মংডু থেকে পালিয়ে এসে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় ...