উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৭/১০/২০২৫ ৭:৩২ পিএম

রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আজকে ঐকমত্যে আমরা যে রকম সনদ করলাম, তেমনই রাজনীতির ব্যাপারেও, নির্বাচনের ব্যাপারেও আপনারা রাজনৈতিক নেতারা বসে একটা সনদ করেন—কীভাবে নির্বাচন করবেন। যেমন-তেমন করে নির্বাচন করলে তো আবার পুরোনো জায়গায় ফিরে যাওয়া। এত কিছু করে লাভটা কী হলো তাহলে? এই কথা লিখে আমার লাভ কী হলো? কথা লিখলাম, কথা মানলাম না। কাজের মধ্যে গিয়ে মানলাম না। কাজেই আমার অনুরোধ, আপনারা আবার ঐকমত্য কমিশন বলেন, কমিটি বলেন, নিজেরা বসুন—নির্বাচনটা কীভাবে সুন্দরভাবে করবেন, উৎসবমুখর করবেন, ইতিহাসে স্মরণীয় করে ধরবেন।’

আজ শুক্রবার জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই সুর, যে সুর আজকে আমরা এখানে বাজালাম, সেই সুর নিয়ে আমরা নির্বাচনের দিকে যাব। ঐক্যের সুর। ঐক্যের সুর দিয়ে আমরা নির্বাচনের দিকে যাব। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে এবং এই ঐক্য যেন বজায় থাকে।’

ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘এই সনদের মাধ্যমে আমরা আরেকটা বড় কাজ করলাম। আমরা বর্বরতা থেকে সভ্যতায় আসলাম। আমরা এক বর্বর জগতে ছিলাম, যেখানে আইনকানুন ছিল না। মানুষ যা ইচ্ছা, তা করতে পারত। এখন আমরা সভ্যতায় আসলাম এবং এমন সভ্যতা আমরা গড়ে তুলব, মানুষ বিস্ময় চোখে আমাদের দেখবে। কাজেই সেটা এখন আমাদের পরবর্তী জীবন—এই সনদপরবর্তী জীবন আমরা কীভাবে গঠন করব, তার ওপর নির্ভর করবে।’

ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘আমাদের যে সম্পদ আছে, যেটা আমরা ব্যবহার করতে পারিনি এ পর্যন্ত, আমি বারে বারে যেটার কথা উল্লেখ করি—এটা হলো বঙ্গোপসাগর। বঙ্গোপসাগর আমাদেরই অঞ্চল, আমাদেরই বাংলাদেশের অংশ। কোনো দিন আমরা খেয়াল করে দেখি নাই, এই অংশে আমরা কী করি। এই অংশ অত্যন্ত সম্পদশালী অংশ। আমরা বলছি যে, এটা আমরা পূর্ণ ব্যবহার করতে চাই, সম্পদকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আমরা আর তর্কবিতর্কের মধ্যে থাকতে চাই না। সে জন্যই আজকে সনদ হলো। এই সনদ তর্কবিতর্কের অবসান করবে। আমরা নিয়মমতো চলে যাব। আমরা এখন নিয়মমাফিক চলার জন্য তৈরি হয়েছি।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি বারে বারে বলছি যে, আমরা যদি সমুদ্রবন্দর করে দিই, তাহলে সারা দুনিয়ার জাহাজ আমাদের বন্দরে ভিড়তে বাধ্য হবে। আমাদের পণ্য সিঙ্গাপুরে খালাস করে দিয়ে চলে যেতে হবে না। অন্য দেশের পণ্য সিঙ্গাপুরে খালাস করে দিয়ে যেতে হবে না। আমার দুয়ার পর্যন্ত নিয়ে আসতে পারবে এবং অন্যান্য দেশের যারা সুযোগ দিতে পারবে না, তাদের পণ্য এখানে দেওয়া যাবে। আমাদের এখান থেকে তারা নিয়ে যাবে। কাজেই একটা বিরাট সুযোগ।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনায় যদি আমরা মাতারবাড়ী, কক্সবাজার, মহেশখালী সবকিছু মিলিয়ে একযোগে বন্দর উন্নত করি, তাহলে পুরো এলাকা নতুন সিঙ্গাপুরে পরিণত হবে। এটা নির্ঘাত। এটার থেকে কেউ বাইরে যেতে পারবে না এবং সকল দেশের মানুষ এখানে আসবে। আমরা আমাদের অর্থনীতির অংশ হিসেবে আঞ্চলিক অর্থনীতি গড়ে তুলতে পারি। আমরা নেপালে, ভুটানে, সেভেন সিস্টার্সে—তাদের সঙ্গে আর্থিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারি শুধু এই বন্দরের কারণে, এই যোগাযোগের কারণে। তারাও সমৃদ্ধ হবে, আমরাও সমৃদ্ধ হব। কাজেই এই সুযোগগুলো আছে, যদি আমরা পথমতো, ঠিকমতো চলতে পারি।’

পাঠকের মতামত

রোহিঙ্গা সংকট ও স্কুল ফিডিং কর্মসূচি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ডব্লিউএফপি প্রধানের বৈঠক

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক কার্ল স্কাউ বলেছেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ১৩ লাখ ...

ঢাকায় আসছেন অস্ট্রেলিয়ার মন্ত্রী, যাবেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে

অস্ট্রেলিয়ার ক্ষুদ্র ব্যবসা, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও বহুসংস্কৃতি-বিষয়ক মন্ত্রী ড. অ্যান অ্যালি ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সঙ্গে ...

দেশে ফিরেছেন শহিদুল আলম

ইসরাইলে আটক হওয়া বাংলাদেশি আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম দেশে ফিরেছেন। শনিবার (১১ অক্টোবর) ভোর ...

পাঁচ ইসলামী ব্যাংক একীভূত নিয়ে প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন

পাঁচটি বেসরকারি ব্যাংক একীভূত করে একটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক গঠনের প্রস্তাবনা নীতিগতভাবে অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। ...