প্রকাশিত: ৩০/০৮/২০১৮ ৫:৪৪ পিএম , আপডেট: ৩০/০৮/২০১৮ ৫:৪৬ পিএম

বিদেশ ডেস্ক ::
উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইনের বাস্তুচ্যুত মানুষদের জন্য জীবন রক্ষাকারী ত্রাণ বিতরণে মিয়ানমার সরকারের বাধা দেওয়া যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত করতে পারে বলে মন্তব্য করেছে মানবাধিকার গ্রুপ ফর্টিফাই রাইটস। অধিকার হরণে দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করতে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ার মধ্যে বৃহস্পতিবার ত্রাণ তৎপরতায় মিয়ানমারের বাধা দেওয়ার বিশদ বিবরণসহ একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করতে সুইজারল্যান্ড ও আমেরিকায় নিবন্ধিত মানবাধিকার গ্রুপটি। মিয়ানমারের মানবাধিকারের প্রতি ঘনিষ্ট নজরদারি রাখে ফর্টিফাই রাইটস। পাঁচ বছর ধরে দুইশো মানুষের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে গ্রুপটি। সাক্ষাৎকার নেওয়া বেশিরভাগ মানুষই কাচিন রাজ্যের বাসিন্দা।

জাতিসংঘ অনুমোদিত তদন্তকারীরা রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর চালানো নিধনযজ্ঞ ও ধর্ষণকে গণহত্যার উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে মন্তব্য করার একদিন পর ত্রাণ তৎপরতায় বাধা দেওয়ার বিস্তারিত বিবরণ হাজির করলো ফর্টিফাই রাইটস। তবে মিয়ানমার জাতিসংঘের তদন্তকারীদের রিপোর্ট প্রত্যাখান করে বলেছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিথ্যা অভিযোগ করছে।

রাখাইনের সংঘাত কবলিত অংশে ত্রাণ সংস্থাগুলোর প্রবেশে বাধা এবং কাচিন ও উত্তরাঞ্চলী শান রাজ্যে ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গেরিলা ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে সংঘাতে বাস্তুচ্যুত হাজার হাজার মানুষের ত্রাণ কমিয়ে দেওয়ায় আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে রয়েছে মিয়ানমার। ফর্টিফাই রাইটসের মিয়ানমার মানবাধিকারের বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ডেভিড বাউলক বলেন, কাচিন রাজ্যে বাস্তুচ্যুত বেসামরিক নাগরিকদের ত্রাণ বিতরণে মিয়ানমার সরকারের স্বেচ্ছাচারীভাবে বঞ্চিত করা অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক আইনে যুদ্ধাপরাধ বলে বিবেচিত হতে পারে। তিনি বলেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের উচিত এই বিষয়ে তদন্তের জন্য মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া।

ফর্টিফাই রাইটস বলছে, তাদের গবেষণায় দেখা গেছে উত্তরাঞ্চলীয় সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণে করা আবেদনের মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশ মঞ্জুর করা হয়েছে।

তবে এই অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জো তাই বলেন, এক বৈঠকে ব্যস্ত থাকায় এনিয়ে মন্তব্য করতে পারছেন না তিনি। তবে অতীতে ত্রাণ বিতরণে বাধা দেওয়ার বিষয়ে মিয়ানমারে কর্মকর্তারা বলে আসছেন, গেরিলাদের বিদ্রোহে সমর্থন দেওয়ার কারণে বাধা দিয়ে থাকেন তারা।

২০১১১ সালে ভারত ও চীন সীমান্তবর্তী পার্বত্য এলাকায় সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ার পর এখন পর্যন্ত লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

পাঠকের মতামত