আব্দুল মালেক, সেন্টমার্টিন থেকে
প্রকাশিত: ৩১/০৫/২০২৫ ১০:৩৫ এএম

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ আর মৌসুমি বড় জোয়ারের সাথে ভারী বৃষ্টিতে সেন্টমার্টিন দ্বীপ প্রায় ডুবে গেছে। দ্বীপের সুইস গেইট খালটি খনন না থাকার কারণে পানি বন্দী হয়ে মাদমবলীয়া, কোনার পাড়া, মরংচড়া, লম্বাঘর, পুর্বপাড়া,গলাচিপা, হলবইন্না, দক্ষিণ পাড়া, উত্তরাংশসহ দ্বীপের অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। জোয়ারের পানি ৪ থেকে ৫ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হয়ে দ্বীপের চারপাশে দিয়ে পানি ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে। লবণাক্ত হয়ে গেছে টিউবওয়েল ও কূপের পানি।

এছাড়া সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের আঘাতে ঘাটে নোঙরে থাকা অন্তত ছোট-বড় ছয়টি মাছ ধরার ট্রলার বিধ্বস্ত হয়েছে।

বৈরি আবহাওয়ার কারণে ২৬শে মে থেকে আজ ৩১শে মে পর্যন্ত টেকনাফ সেন্টমার্টিন নৌ পথে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে দ্বীপে।

সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা তৈয়ব উল্লাহ বলেন, বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠ থেকে দিনদিন পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার কারণে পৃথিবীর নিম্নাঞ্চল দেশগুলোতে পানি ভাড়ছে। সেন্টমার্টিন দ্বীপে টেকসই বেড়িবাঁধ না থাকায় এবারের জলোচ্ছ্বাসে দ্বীপের চারপাশ থেকে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। জীবনে কখনো এতো বড় জলোচ্ছ্বাস আমি দেখিনি। দ্বীপের নিম্নাঞ্চলে থাকা প্রায় ৫০-৬০ টা বাড়িতে পানি ঢুকেছে। আরো অনেক বাড়ির সামনে জোয়ারের পানি চলে এসেছে। আমি দ্রুত একটা টেকসই বেড়িবাঁধ চাই। এছাড়া দ্বীপ রক্ষার বিকল্প নাই।

সেন্টমার্টিন ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম বলেন, বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়ায় দ্বীপের গলাচিপা, কোনাপাড়া, দক্ষিণপাড়া পানিতে তলিয়ে গেছে। ভাটা হলে পানি কিছুটা কমে যাবে মনে হচ্ছে। এতে অন্তত অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া মাছ ধরার ৬টি ট্রলার জোয়ারের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, রাতে বাতাস একটু কমেছে। তারপরও আমরা হোটেল-রিসোর্টসহ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছি। এছাড়া বিএন স্কুল ও হাসপাতালে আশ্রয়কেন্দ্র করা হয়েছে। এদিকে নৌচলাচল বন্ধ থাকায় দ্বীপের মানুষের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। দ্বীপের মানুষের খুব খারাপ সময় পার করছেন। তার ওপর সকাল থেকে বাতাসের তীব্রতাও বেড়েছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, বঙ্গোপসাগরে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় জোয়ারের পানি সেন্টমার্টিন দ্বীপের লোকালয়ে ডুকে পড়েছে। ঘাটে নোঙরে থাকা মাছ ধরার ট্রলার বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পেয়েছি। আতঙ্কের কিছু নেই, সেন্টমার্টিনের জনপ্রতিনিধিরা সবাই একযোগে কাজ করছেন। কোনো ধরনের সমস্যা হলে লোকজন সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে এনে রাখা হবে। আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে এখনো লোকজনকে সরিয়ে আনার মতো তেমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।

তিনি আরও বলেন, গেল ৫ দিন ধরে ওয়েদার খারাপ। সেন্টমার্টিনে মালবাহী ট্রলারগুলো যেতে পারেনি। যার কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও খাদ্য সংকটের দিকে যাচ্ছে। আশা করি, আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিকের দিকে যাচ্ছে। নৌবাহিনীর সাথে কথা হয়েছে হয়তো দ্রুত খাদ্য পণ্যবাহী ট্রলারগুলো সেন্টমার্টিনে পৌঁছানো যাবে।

পাঠকের মতামত

ঘুমধুম সীমান্তে ১ লাখ ২০ হাজার ইয়াবাসহ এক রোহিঙ্গা আটক করেছে ৩৪ বিজিবি

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১ লাখ ২০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ ...