প্রকাশিত: ৩০/০৩/২০১৮ ৯:৪৩ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৪:৪৯ এএম

এইচএম এরশাদ ::
টেকনাফ ও উখিয়ায় আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে এসব কী করছে আরএসও। বিভিন্ন ক্যাম্পে অস্ত্র-কিরিচ, ডিজিটাল ব্যানার ও পেস্টুন সরবরাহ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বহু আরএসও ক্যাডার রোহিঙ্গা শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানা গেছে। তারা রাতের বেলায় ক্যাম্প অভ্যন্তরে খোলা মাঠে সন্ত্রাসী গোচরের যুবকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। সন্ত্রাসী রোহিঙ্গাদের নিয়ে শক্তিশালী গোয়েন্দা কমিটি গঠন করেছে আরএসও। নিজস্ব গোয়েন্দা হিসেবে ক্যাম্পে নিয়োজিত করা হয়েছে সহস্রাধিক রোহিঙ্গা যুবককে। তাদের হাতে দেয়া হয়েছে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি করে মুঠেফোন। ক্যাম্প ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে এ খবর জানা গেছে।


সূত্র জানায়, আশ্রয় শিবিরে থাকলেও নিত্য প্রয়োজনীয় কোন কিছুর অভাব নেই দেখে সাধারণ রোহিঙ্গারা পুরনো ওই নেতাদের (আরএসও) কথা অনুসরণ করে চলেছে। স্বদেশে ফিরে যেতে অনাগ্রহী হয়ে উঠছে রোহিঙ্গারা। শিবিরে প্রত্যাবাসনে ইচ্ছুক আর কোনো রোহিঙ্গাকে হত্যা নয়, এবার গুম করে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। আশ্রয় শিবিরে ইতোপূর্বে ঘটে যাওয়া হত্যাকান্ড নিয়ে দেশবিদেশে দুর্নাম হচ্ছে বলে প্রথম সারির রোহিঙ্গা জঙ্গীদের পরামর্শে এ সিদ্ধান্তে একমত হয়েছে রোহিঙ্গারা। স্বদেশে প্রত্যাবর্তনে রোহিঙ্গারা যেন রাজি না হয়, এজন্য বিপুল অর্থ ব্যয় করছে প্রত্যাবাসন বিরোধী চক্র। একাজে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে কয়েকটি দেশীবিদেশী এনজিও। আন্দোলনমূখী করে তোলার পেছনে তারা চিহ্নিত ১২জন আরএসও নেতার মাধ্যমে এ বিপুল টাকা ব্যয় করছে বলে জানা গেছে। সরকার মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের সাময়িক আশ্রয় দিয়েছে। যা দেশেবিদেশে প্রশংসিত হয়েছে সরকার।

পাশাপাশি সরকারের ডাকে সাড়া দিয়েছে দেশের দানশীল ব্যক্তিগণও। তবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরএসও নেতাদের বিভিন্ন অপকর্ম দেখে স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।
সূত্র জানায়, আরাকান বিদ্রোহী গ্র“প আরএসওর নিজস্ব গোয়েন্দা কমিটিতে সদস্য সংখ্যা ১হাজার দুই’শ রোহিঙ্গা। টেকনাফ ও উখিয়ার ১২টি অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরে ১’শ জন করে মোট এক হাজার দুই’শ রোহিঙ্গা গোয়েন্দাগীরি করে প্রত্যেহ রিপোর্ট দিচ্ছে আরএসও ক্যাডারদের। ওই কমিটির নেতৃত্ব দানকারী ১২ আরএসও নেতা হচ্ছে- মিয়ানমারের নিজাম উদ্দিনের পুত্র মৌলবি ওসমান নেজামী, আবু তাহেরের পুত্র মৌলবি আবদুর রহিম, আলী হোছাইনের পুত্র মৌলবি মোয়াজ্জেম হোছাইন, সিরাজুল মোস্তফা ওরফে ফায়দা হাজীর পুত্র মৌলবি আয়াছ, জাফর আহমদের পুত্র মৌলবি শফিকুর রহমান, মোস্তাক আহমদের পুত্র সেলিম উলাহ, মোজাহের হোছাইনের পুত্র মৌলবি ইয়াহিয়া, মোহাম্মদুলাহর পুত্র হাফেজ হাশিম, আবদুল কাদেরের পুত্র মো: জুবাইর, আবদুল জলিলের পুত্র মো: রুহুল আমিন, হ্নীলার মৌলবি শামসু প্রকাশ বাইট্টা শামসু ও মৌলবি আবদুল হামিদ। এদের গ্রেফতার করা না গেলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কাজ বারবার বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে মত প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল।


সূত্র জানায়, রোহিঙ্গা ফেরতের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বানচাল করতে উঠেপড়ে লেগেছে পুরনো রোহিঙ্গা নেতা (আরএসও) এবং বিদেশী একাধিক চক্র (এনজিও)। তারা দেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মধ্যে মিয়ানমারে ফেরতের বিষয়ে ভীতি স ার ঘটাচ্ছে। প্রত্যাবাসন বিরোধী একাধিক সংস্থার পক্ষে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে আরএসও ক্যাডাররা সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধাচরণ করছে। ওইসব রোহিঙ্গা জঙ্গী রাষ্ট্রদ্রোহ এ কাজের নেতৃত্ব দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বাছাই করে ১২টি ক্যাম্পে নিজস্ব গোয়েন্দা হিসেবে নিয়োজিত করা রোহিঙ্গাদের কাজ হচ্ছে, রোহিঙ্গাদের মধ্যে কারা প্রত্যাবাসনে ইচ্ছুক, তাদের খুঁজে বের করার পর গোপনস্থানে শাস্তি দেয়া। সরকারী সংস্থার লোকজনের গতিবিধি লক্ষ্য করা ও ক্যাম্পে প্রত্যাবাসন বিরোধী এনজিও কর্মীদের নানা তৎপরতায় শেল্টার দেয়া। স্থানীয় প্রশাসনের সদস্যদের পাহারায় রেখে ১২টি আশ্রিত ক্যাম্পে সন্ত্রাসী ওই রোহিঙ্গারা সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রত্যাবাসন বিরোধী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
সূত্র জানিয়েছে, মংডুর আন্দাং কুলুং বড়ছরা এলাকার বাসিন্দা মৃত নেজাম উদ্দিনের পুত্র রোহিঙ্গা জঙ্গী মৌলবি ওসমান নেজামী মিয়ানমারের সশস্ত্র জঙ্গী গ্র“প আল ইয়াকিনের (আরসা) সক্রিয় সদস্য। তার সহোদর ৬ ভাই আরসা সদস্যদের অন্যতম। তারা রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সঙ্গে নির্যাতিত রোহিঙ্গা দাবী করে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে বালুখালী ক্যাম্পে। তারা প্রতিটি ক্যাম্পে আরএসও ক্যাডারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিরোধী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। জঙ্গী ওসমান কয়েক বছর আগে রামু খুনিয়াপালং পাইনবাগানে আস্তানা গাড়লেও তার ৬ সহোদর উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গা হিসেবে রয়েছে। এদের মধ্যে কিছুদিন আগে বালুখালী ক্যাম্পে সন্ত্রাসী দু’রোহিঙ্গা গ্র“পের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে জঙ্গী ওসমানের এক ভাই। অপর সহোদর ছৈয়দ হোছন বালুখালী ক্যাম্পের শেড মাঝি হিসেবে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফিরে না যাবার লক্ষ্যে প্রভাব খাটাচ্ছে।
সূত্র মতে, যে কোন সিদ্ধান্তের বিষয়ে মুঠোফোনে জানিয়ে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি ক্যাম্পে এক যোগে কাজ করার জন্য আরএসও ক্যাডারদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে সূত্র আভাস দিয়েছে। রোহিঙ্গাদের নিজস্ব গোয়েন্দা বাহিনীতে রয়েছে, মৌলবি নুরুল হক, ইয়াছিন, নজির আহমদ, কামাল, মো: শফি উলাহ, মাষ্টার সোলতান, রশিদুলাহ, আনছারুলাহ, মোহাম্মদ নুর, আবু ছিদ্দিক, মনিরুজ্জামানন, মৌলবি আবুল ফয়েজ, নুরুল ইসলাম, জাহেদ, মো: সোয়েইব, ছমি উলাহ, জুবাইর, আনোয়ার, নুরুল আমিন, নুর মোহাম্মদ, সোলতান আহমদ, দিল মোহাম্মদ, জাকারিয়া, মো: হেলাল, ইবনে আমিন, কবির আহমদ, হাফেজ আহমদ, শব্বির আহমদ ও শামসুল আলমসহ অনেকে। তারা টেকনাফের উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পের পুরনো ও নতুন রোহিঙ্গা। সূত্র:-জনকণ্ঠ

পাঠকের মতামত

সোনার দামে আবারও রেকর্ড, ভ‌রি‌ ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা

আবারও সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। প্রতি ভরিতে ...