প্রকাশিত: ১৩/০৫/২০১৬ ৯:৫৩ পিএম

mapএম আমান উল্লাহ আমান::

সীমান্ত উপজেলা টেকনাফ এখন খুন সন্ত্রাস, মারামারি,হানাহানি ও অস্ত্র লুটের শহরে পরিনত হয়েছে। কয়েক দিনের মাথায় গুলি করে মানুষ খুন ও অবৈধ অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা যেন একদম স্বাভাবিক। এতে সরকারী দায়িত্ব পালনকারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে সর্বত্র তুমুল সমালোচনা চলছে। বিশেষ করে টেকনাফ মডেল থানা পুলিশের নিরব ভূমিকা নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে পুলিশের প্রতি নাভিশ^াস দেখা দিয়েছে। ১৩ মে রাত আড়াইটার দিকে টেকনাফের হ্নীলা নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনকারী শালবাগানস্থ ২৯ ব্যাটালিয়ানের আনসার ব্যারাকে হামলা চালিয়ে আনসার পিসিকে হত্যা করে ১১টি রাইফেল ও ৪শ ৯০ রাউন্ড গুলি লুট করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। একই দিন শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে টেকনাফে সদর ইউনিয়নের নাজিরপাড়া সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলায় গুরত্বর আহত হয় তিন ফটো সাংবাদিকসহ ৫ সাংবাদিক । নাজির পাড়া খেলার মাঠে সংবাদ সংগ্রহ করতে যায় সময় টিভির স্টাফ রিপোর্টার সুজাউদ্দিন রুবেল, তার ক্যামেরাপারসন ফয়েজ, ইন্ডিপেন্ডেট টিভির জেলা প্রতিনিধি তৌফিকুল ইসলাম লিপু, তার ক্যামেরাপারসন শরীফ, ৭১ টিভির জেলা প্রতিনিধি কামরুল ইসলাম মিটু ও তার ক্যামেরাপারসন বাবু দাশ এসময় হঠাৎ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভূক্ত শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী নুরুল হক ভূট্টোর নেতৃত্বে কমান্ডো স্টাইলে দা কিরিচ নিয়ে একদল লোক হামলা চালায়। এ সময় সাংবাদিকদের ৩টি দামী ক্যামরা, ৪ টি ল্যাপটপ, মোবাইল সেট ছিনিয়ে নেয় এবং সংবাদিকদের বহনকরা নোয়া গাড়ীতে ব্যাপক ভাংচুর করে। এব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শফিউল আলম বলেন টেকনাফের বর্তমান পরিস্থিতির উন্নয়ন করতে প্রশাসন আন্তরিক ভাবে কাজ করছে এবং আরো আন্তরিক হলে পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে জানান।

টেকনাফের গহীন পাহাড়ে সশস্ত্র ডাকাতের আস্তানা: আনসার খুন: ১১ অস্ত্র লুট: পরিস্থিতি তমথমে- টেকনাফ পুরাতন পল্লান পাড়া উপজেলা পরিষদের পশ্চিমে গহীন পাহাড়ে সশস্ত্র ডাকাতের আস্তানায় শংকিত হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। ১৩ মে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আনসার পিসিকে খুন করে ১১টি অস্ত্র লুট এর ন্যক্কার জনক ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ততা থাকতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। বিশেষ সূত্রে জানা যায় টেকনাফ পুরাতন পল্লান পাড়া উপজেলা পরিষদের পশ্চিমে গহীন পাহাড়ে রোহিঙ্গা ডাকাত আবদুল হাকিম কটেজ, অস্ত্রাগার, বিনোদন স্পট, রান্না বান্নার বিশেষ আয়োজনসহ সস্ত্র অবস্থান করছে দীর্ঘ দিন ধরে। পুরাতন পল্লান পাড়ায় আবদুল হাকিম ডাকাতের বসত বাড়ী, ঘর সংসার থাকলেও সে অবস্থান করে পাহাড়ে। প্রায় সময় সরাসরি বার্মা গিয়ে ডাকাতি করে চলে আসে আবার টেকনাফের সেই পাহাড়ে। মাঝে মধ্যে টেকনাফের বিভিন্ন গ্রামে তার দেখা মিল্লেও খুব সতর্ক অবস্থানে থাকায় আটকা পড়ছেনা প্রশাসনের জালে। আবদুল হাকিম ডাকতকে আটক করতে অনেক বার অভিযান করে ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসন। এ ব্যাপারে টেকনাফ ২ বিজিবির ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর রাসেল বলেন বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে এবং ১১টি অস্ত্র উদ্ধারে জোরদার অভিযান পরিচালিত হবে। টেকনাফ মডেল থানার ওসি তদন্ত কবির হোসেন  বলেন ১১টি অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং আবদুল হাকিম ডাকাতের আস্তানায়ও নজরদারী করা হচ্ছে। এদিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আনসার ব্যারাকে হামলা চালিয়ে আনসার পিসিকে হত্যা করে ১১টি রাইফেল ৪৯০ রাউন্ড গুলি লুটের ঘটনায় সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দূরদান্ত সাহসী অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। উল্লেখ্যঃ রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আনসার ব্যারাকে হামলা চালিয়ে আনসার পিসিকে হত্যা করে ১১টি রাইফেল ৪৯০ রাউন্ড গুলি লুট করেছে সশস্ত্র দুবৃত্তরা। ১৩ মে রাত আড়াইটার দিকে টেকনাফের হ্নীলা নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দায়িত্বরত শালবাগানস্থ ২৯ ব্যাটালিয়ানের আনসার ব্যারাকে জঘন্যতম এ ঘটনা ঘটেছে। গুলিতে নিহত আনসার পিসি আলী হোসেন (৫৫) টাঙ্গাইলের শফীপুরের শুক্কুর আলীর ছেলে বলে জানা গেছে। পুলিশ সুপার, ইউএনও, বিজিবির উপ- অধিনায়ক, জেলা আনসার-ভিডিপি এ্যাডজুডেন্ট, ওসি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ এবং সরকারী অস্ত্র উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে। এদিকে ১১টি অস্ত্র লুট করে চলে যাওয়ার সময় সামনে পড়ায় দুবৃত্তদের হামলায় স্থানীয় আমির হামজার পুত্র আবদুল আমিন (২৮) গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। তাকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

পাঠকের মতামত

বান্দরবানে কেএনএফের আস্তানায় যৌথ বাহিনীর অভিযান, নিহত ৩

বান্দরবানের রুমা উপজেলার রনিন পাড়ার কাছে ডেবাছড়া এলাকায় কেএনএফের একটি আস্তানায় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর ...